শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বিদ্যুৎ দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ গ্রাহক

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সাথে ওজোপাডিকো’র বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থা এখনো নাজুক পর্যায়ে। ঘাটতি না থাকলেও নানান ত্রুটির কারনে ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইনসহ পুরনো ও দুর্বল বিদ্যুৎ সরঞ্জামের সাথে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গ্রাহকদের দূর্ভোগ বাড়ছে। তবে ওজোপাডিকো’র ২১ জেলার সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও বিদ্যুৎ বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়নে দুটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
বরিশাল মহানগরীর লক্ষাধিক গ্রাহককে দুটি বিতরন ও বিক্রয় বিভাগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ওজোপাডিকো। এ দুটি বিভাগে প্রায় সাড়ে ৬শ ১১/.০৪ কেভি ট্রান্সফর্মারের সাথে সংযুক্ত বিপুল পরিমাণ এলটি লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হলেও তার বেশীরভাগই প্রায় ৩০ বছরের পুরনো। আরো অন্তত ২০ ভাগ ট্রান্সফর্মার ওভারলোড হয়ে আছে। লো-টেনশন এবং হাই-টেনশন লাইনগুলো পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নগরীর রূপাতলী, কাশিপুর ও পলাশপুর ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনগুলো থেকে সবগুলো ১১ কেভি লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও সেসব সাব-স্টেশনের অবস্থাও রাজুক। এর মধ্যে রূপাতলী সাব-স্টেশনের পূণর্বাসন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ শেষ পর্যায়ে। অপর দুটির কাজ আগামী শীত মৌসুমের আগে শুরু হচ্ছে না। এর মধ্যে কাশীপুর-রূপাতলী ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩৩ কেভি লাইনের পূণর্বাসন কাজ শুরু হলেও গ্রীষ্ম মৌসুমের আগে অর্ধেকও শেষ হচ্ছে না। এ পর্যন্ত মাত্র ৩ কিলোমিটার লাইনের তার ও পোল পরিবর্তন হয়েছে। ১১/.০৪ কেভি ট্রান্সফর্মারগুলো নিরপত্তার জন্য যে ড্রপআউট লাগানো রয়েছে তার সবই ত্রুটিপূর্ণ। কোন ট্রান্সফর্মারের বহির্গামী এলটি লাইনে এমসিপি নেই। এর সাথে বিভিন্ন কেবল অপারেটর ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের তার জড়িয়ে থাকায় বিদ্যুৎ খুটিগুলো এখন মরনফাঁদ। প্রায়শই এসব অবৈধ তার দিয়ে আগুন ধরে যায় বিদ্যুৎ লাইনে। উপরন্তু নগরীতে মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে থাকা কেবল টিভি ও ইন্টারনেট লাইনের এমপ্লিফায়ারের জন্য অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার এখন ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও তা নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও খুব একটা তৎপড় নয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি ৩৩ কেভি লাইনের বাসবার, ব্রেকার, ইনসুলেট ও পিনসহ বিভিন্ন ধরনের বিদ্যুৎ সরঞ্জামের বেশীরভাগই দীর্ঘদিনের পুরানো।
গলদ রয়েছে বরিশাল-বাগেরহাট-খুলনা ১৩২ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট ও বরিশাল-ফরিদপুর-ভেড়ামাড়া ১৩২ কেভি ডবল সার্কিট লাইনগুলোতেও। প্রায় তিন যুগের পুরনো এসব সঞ্চালন লাইনের ওপরই বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরন ব্যবস্থা নির্ভরশীল। গত রোববার রাতে মাত্র ২০ কিলোমিটার বেগের ঝড়ো হাওয়ায় বরিশাল-ফরিদপুর-ভেড়ামাড়া সঞ্চালন লাইন ট্রিপ করে দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পরে। এরই রেশ ধরে বরিশালে ১১০ মেগাওয়াট ও ভোলায় ২২৫ মেগাওয়াটের দুটি পাওয়ার স্টেশনও বন্ধ হয়ে যায়। কাশীপুর ৩৩ কেভি সাব-স্টেশনের সাথে সংযুক্ত হাতেম আলী কলেজ ফিডারটিতেও রাতভর গোলযোগ অব্যাহত ছিল। শুক্রবার রাতেও মাত্র ১৫কিলোমিটার বেগের ঝড়ো হাওয়ায় কাশীপুর ও পলাশপুর ৩৩ কেভী সঞ্চালন দুটি ট্রিপ করে। বরিশাল মহানগরীর প্রায় ২২টি ১১/.০৪ কেভি ফিডারের জন্য সম পরিমান ফিডার ইনচার্জ থাকার কথা থাকলেও তার প্রায় ৪০ ভাগ পদ শূণ্য। এসব বিষয়ে ওজোপাডিকো’র বরিশাল-এর বিতরন ও বিক্রয় বিভাগ ও সার্কেলের উর্ধতন প্রকৌশলীদের সাথে আলাপকালে তারা দ্রুততম সময়ে পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা চলছে বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন