শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

মসনবী শরীফ

মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.

কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

১৪৯৮. আমাদের নফস প্রবৃত্তি

অংশ ভয়াবহ দোযখের
সকল অংশই করে লাভ
স্বভাব বৈশিষ্ট সমগ্রের।

১৪৯৯. আল্লাহর কদমেরই শুধু
শক্তি আছে নফস কে হত্যার
একমাত্র ক্ষমতা তাহারই
ধনুর্বাণ টানিয়া ধরার।

১৫০০. ধনুকে যোজন করা হয়

কেবল সরল সোজা তীর
কিš‘ সব তীরই আঁকা বাঁকা
ধনুকের নফ্স-প্রবৃত্তির।

১৫০১. সোজা হয়ে তীরের মতন
ধনু-মুক্ত হয়ে চলো উড়ে
অবশ্যই সোজা তীর সদা
ধনু হতে চলে যায় দূরে।

১৫০২. ‘জিহাদে আসগর’* হইতে
নিলাম এবার অবসর
‘জিহাদে আকবরের’ মাঝে
হলাম মগন অতঃপর।

১৫০৩. ইতি টেনে আমরা এখানে
‘জিহাদে আসগ’র বর্ণনায়
‘জিহাদে আকবরে’ মশগুল
হলাম নবীর উসিলায়।

১৫০৪. আমাকে তাওফীক দাও প্রভু
বিদীর্ণ করিতে পারাবার
উড়িয়ে ফেলিতে যেন পারি
সুই দিয়ে কোকাফ পাহাড়।

১৫০৫. সিংহ-সম শত্রু যে বিনাশে
মহাবীর নহে সেই জন
বীর সেই নফস অরাতিকে
যে করেছে নির্মূল নিধন।

১৫০৬. খলীফা হযরত ওমরের দরবারে
রোম সম্রাট কায়সরের দূত

১৫০৭. দূত পাঠালেন মদীনায় রোম সম্রাট কায়সর
তথ্য জানিতে ওমর ফারুক সুমহান খলীফার।

১৫০৮. বহু দূর পথ মরু কান্তার প্রান্তর পাড়ি দিয়া
শুধাইল দূত লোকদের কাছে মদীনায় পৌঁছিয়া।

১৫০৯. কোথা খলীফার প্রাসাদ ভবন বল? রেখে সেই খানে
অশ্ব এবং সামান আমার, খলীফা সন্নিধানে।

১৫১০. যেতে চাই আমি। শুনে তার কথা জনগণ মদীনার
কহিল তখন- রাজ-বালাখানা নেই কোনো খলীফার।

১৫১১. নাই বা থাকুক জাঁক জমকের বালাখানা দুনিয়ার
বিশাল নূরানী হৃদয় খানাই মহাবালাখানা তাঁর।

১৫১২. শাসক হিসাবে যদিও তাহার সুনাম জগৎ ভর
বাসগৃহ তবু ফকিরের মত জীর্ণ পাতার ঘর।

১৫১৩. কেমনে দেখিবে সে প্রাসাদ, তব মনের নয়নে ভাই
গজিয়েছে লোম, পড়েছে পর্দা- দিব্য দৃষ্টি নাই।

১৫১৪. হটাও সে লোম, পর্দা ও রোগ দূর কর নয়নের
কর অতঃপর দেখার বাসনা আত্মিক সৌধের।

১৫১৫. রয়েছে যাহার কামনা-বাসনা-মুক্ত স্বাধীন মন
বিভু দরবার, ওই বালাখানা- সেই করে দর্শন।

১৫১৬. আগুন ও ধোঁয়া থেকে ছিল পাক সত্তা মোস্তফার
তাকাতেন তিনি যেদিকে পেতেন মুলাকাত আল্লাহর।

১৫১৭. মন্ত্রণা দাতা বন্ধু তোমার ইবলিস শয়তান
কেমনে দেখিবে সর্বব্যাপী যে- আল্লা’ বিরাজমান ?

১৫১৮. অন্তর যার অর্গলহীন- মুক্ত সকল দ্বার
পায় সেই জন হরেক অনুতে দর্শন আল্লা’র।

১৫১৯. তারকারাজির মাঝখানে যথা প্রোজ্জ্বল শশধর
স্বকীয় সূরতে, তেমনি জগতে বিভু নূর ভাস্বর।

১৫২০. দুটি অঙ্গুলি-ডগা দিয়ে যদি নয়ন ঢাকিয়া রাখ
বিশ্ব ভূবন এই চরাচর কিছুই দেখিবে নাক।

১৫২১. পাওনা যে তুমি দেখিতে সে দোষ নফস-আঙ্গুলের
আসেনা নযরে তা’ বলে কি নেই অস্তি এ বিশ্বের ?

১৫২২. চোখের উপর থেকে তুমি ওই অঙ্গুলি সরিয়ে নাও
তক্ষনি তুমি পাইবে দেখিতে যা কিছু দেখিতে চাও।

১৫২৩. বলিল নূহ্ কে উম্মত তাঁর সওয়াব যে বল- তাই
কোন খানে আছে? আমরা তো তাহা দেখিতে নাহিকো পাই।

১৫২৪. বলিলেন নূহ্ তোমরা যদি সে সওয়াব দেখিতে চাও
পাইবে দেখিতে, আগে নয়নের কাপড় সরিয়ে দাও।

১৫২৫. চেহারা ও চোখে কাপড় জড়িয়ে রেখেছ তোমরা তাই
চোখ থাকিতেও হয়েছ অন্ধ- দেখার ক্ষমতা নাই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন