বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ক্রাইস্টচার্চের স্মরণসভায় ক্ষমার দৃষ্টান্ত স্থাপন বাংলাদেশির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ৮:০৪ পিএম

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় নিহতদের স্মরণে শোকসভা পালন করে দেশটির সরকার। আল নূর মসজিদের কাছে অবস্থিত হেগলি পার্কে আয়োজিত শোক সভায় বাংলাদেশের সিলেটের নাগরিক, স্ত্রী হারানো ফরিদ আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। হামলায় প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়েও ক্ষমার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি। হামলাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি চাইনা আমার হৃদয় একটি উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরিতে রুপ নিক। আমি এমন এক হৃদয় চাই যা প্রেম এবং যত্নের সাথে পূর্ণ থাকবে, রহমত থাকবে এবং সহজে ক্ষমা করবে, কারণ এই হৃদয় আর কাউকে হারাতে দেখতে চায় না।’

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘মানবতার মাঝেই নিহিত সন্ত্রাসের সমাধান।’ প্রায় ২০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে ঠিক দুই সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাযজ্ঞের স্বরণসভায় জ্যাসিন্ডা বলেন, ‘বিশ্ব এখন উগ্র সন্ত্রাসবাদের চক্রে আটকে গেছে। তবে এর সমাধান মানবতার মাঝেই নিহিত। আমরা ঘৃণা, ভয় ও অন্যান্য ভাইরাস থেকে মুক্ত নই। কখনও ছিলাম না। কিন্তু আমরা এমন একটা জাতি হতে পারি যারা এই রোগ নিরাময় করতে পারে।’

কড়া নিরাপত্তায় আয়োজিত এই সভায় পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, এটি নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ঘটনাগুলির মধ্যে একটি।’ এই শোকসভা কার্যক্রম সম্প্রচার করা হয় দেশব্যাপী। কড়া নিরাপত্তায় সেখানে অংশ নেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সেখানে পারফর্ম করেন ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী ক্যাট স্টিভেন্স।

বাংলাদেশি আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি এক সংস্কৃতির, আপনি অন্য সংস্কৃতি থেকে আসতে পারেন, আমার এক বিশ্বাস থাকতে পারে, আপনার আরেক বিশ্বাস থাকতে পারে, কিন্তু একসঙ্গে আমরা একটি সুন্দর বাগান।’ তার এই বক্তব্যের পরে অকল্যান্ডের ৫২ বছর বয়সী কেল্লি স্মিথ আহমেদের বক্তব্যকে দারুণ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘তিনি যা বললেন তা আমার খুব ভাল লেগেছে, আমরা সবাই বিভিন্ন ফুল কিন্তু একসাথে আমরা খুবই সুন্দর এবং এটা খুবই সত্য।

২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল নূর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তাণ্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ।

নিহতদের মধ্যে ৪০ জনেরও বেশি নিহতকে ক্রাইস্টচার্চের নিউ পার্ক সমাধিতে দাফন করা হয়েছে। হামলার পর থেকেই এর নিন্দা জানিয়ে নিহতদের প্রতি ধারাবাহিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছেন নিউ জিল্যান্ডবাসী। হামলার প্রায় ১০ দিনের মাথায় শনিবার আয়োজন করা হয় বিশাল স্মরণ অনুষ্ঠান ও জমায়েতের।

দেশটির ক্যান্টাবেরির মুসলিম পরিষদের প্রধান সাগাফ খান, হামলা পরবর্তী সময়ে নিউ জিল্যান্ডের পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘এই বিদ্বেষ থেকে কত ভালোবাসার তৈরি? অন্ধকার থেকে কতটা আলোর সৃষ্টি হলো?’ ক্রাইস্টচার্চের মেয়র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানায়।

নিউজিল্যান্ডের শহর অকল্যান্ডে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে শনিবার সকালে পদযাত্রা করেছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। ‘অভিবাসীদের জীবনের দাম আছে এবং এখানে শরণার্থীদের স্বাগত জানানো হয়’ লেখা প্লাকার্ড হাতে তারা সমাবেশ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
রাশেদুল ইসলাম ২৯ মার্চ, ২০১৯, ১০:৩৫ পিএম says : 0
আমি অত্যন্ত ব্যথিত হই, যখন স্পষ্ট সন্ত্রাসীকে আশ্চার্যজনকভাবে বিশ্বমিডিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে আপনারাও সন্দেহভাজন হামলাকারী (???) বলেন।
Total Reply(0)
রাশেদুল ইসলাম ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৮ এএম says : 0
আমি অত্যন্ত ব্যথিত হই, যখন স্পষ্ট সন্ত্রাসীকে আশ্চার্যজনকভাবে বিশ্বমিডিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে আপনারাও সন্দেহভাজন হামলাকারী (???) বলেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন