বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জহুরুল-ইমরুলের ম্যাচে নায়ক মাশরাফি

রুবেলকে ছাড়িয়ে ইউনিসের আরো কাছে

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি যৌথভাবে তাদের দুজনের। আরেকটি জায়গাতেও এতদিন পাশাপাশিই ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও রুবেল হোসেন। তবে এবার মাশরাফি এগিয়ে গেলেন এক ধাপ। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার পেলেন ৬ উইকেট! গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি।

শুরু থেকে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে আগের ম্যাচের (৯৬) আক্ষেপ ঘুঁচালেন জহুরুল ইসলাম। ইমরুল কায়েস জবাব দিলেন স্ট্রোকের দ্যুতিতে গড়া শতকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই সেঞ্চুরিয়ানের ভাগ্য বল হাতে ছিনিয়ে নিলেন মাশরাফি। অসাধারণ বোলিংয়ে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক জেতালেন আবাহনীকে। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ২৯ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। সাত ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এটি ষষ্ঠ জয়।

বিকেএসপিতে জহুরুলের ১৩০ রানের ইনিংসে আবাহনী তোলে ৫০ ওভারে ২৮৬ রান। ইমরুলের ১২৬ রানের ইনিংসে গাজী গ্রুপ ছিল রান তাড়ার পথেই। কিন্তু পেরে ওঠেনি তারা মাশরাফির সঙ্গে। শুরু, মাঝে ও শেষে, তিন স্পেলে দুটি করে উইকেট নিয়ে মাশরাফি শেষ করে দিয়েছেন গাজী গ্রুপের আশা।

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এই নিয়ে ৪ বার ৬ উইকেট নিলেন তিনি। রুবেল ৬ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন ৩ বার। এই ম্যাচের আগে গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও আবাহনীর হয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ফতুল্লায় টানা চার বলে উইকেটসহ ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ৪৪ রানে। এর আগে ২০১৬ সালে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে ফতুল্লাতেই ৪২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে। প্রথম ৬ উইকেট ছিল আরও প্রায় বছর দশেক আগে। সেটি আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে। ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে নাইরোবিতে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ২৬ রানে।

রুবেল প্রথমবার ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচেই। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে গাজী ট্যাংক ক্রিকেটার্সের (এখনকার গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স) হয়ে বগুড়ায় খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতির বিপক্ষে ১৮ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট।

দ্বিতীয়বার এই স্বাদ পান পরের মাসেই। এবার আন্তর্জাতিক ওয়ানডের মঞ্চে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন ২৬ রানের ৬ উইকেট ঝলকে। এই পেসার সবশেষ ৬ উইকেট নিয়েছেন ২০১৭ সালে, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে বিকেএসপিতে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ২১ রান দিয়ে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে একাধিকবার ৬ উইকেট আছে আর কেবল তাইজুল ইসলামের। এই বাঁহাতি স্পিনার নিয়েছেন দুইবার।

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার ৬ বা তার বেশি উইকেটের বিশ্বরেকর্ডে মাশরাফির ওপরে কেবল এখন একজনই। পাকিস্তানের ফাস্ট বোলিং কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনিস এই কীর্তি গড়েছেন ৬ বার। মাশরাফির মতো ৪ বার ৬ উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কান স্পিনার অজান্তা মেন্ডিস।
একই দিন ফতুল্লায় বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্সে তাইজুল ইসলাম কাজ এগিয়ে রেখেছিলেন অনেকটা। তবে ছোট রান তাড়ায় দলের ব্যাটিংয়েও প্রয়োজন হলো তাকে। বাঁহাতি স্পিনার ব্যাটেই শেষ পর্যন্ত খেলাঘর সমাজ কল্যান সংঘকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ৩ উইকেট নেন তাইজুল। খেলাঘর ৫০ ওভারে তুলতে পারে কেবল ১৮৩ রান। শেখ জামাল জিতেছে ৮ ওভার বাকি রেখে। শেষ দিকে দলকে জয় এনে দেওয়া জুটিতে অপরাজিত ১৫ রান করেন তাইজুল।

এদিকে লিগে টানা চতুর্থ জয়ের দেখা পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। নিজেদের সপ্তম ও আসরের ৩৯তম ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে তারা। এ নিয়ে চলতি আসরে মাত্র একটি ম্যাচ ছাড়া বাকি ছয়টিতেই জয় পেয়েছে রূপগঞ্জ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রাইম দোলেশ্বরে অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান তোলে রূপগঞ্জ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ ওভারে ১৯৩ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় প্রাইম দোলেশ্বর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-গাজী গ্রুপ, সাভার
আবাহনী : ৫০ ওভারে ২৮৬/৬ (জহুরুল ১৩০, সৌম্য ২৯, ওয়াসিম ১৯, শান্ত ১১, মোসাদ্দেক ৭১; আবু হায়দার ১/৬১, কামরুল রাব্বি ২/৭০, রসুল ১/৩৪, নাসুম ২/৪৭)।
গাজী গ্রুপ : ৪৮.৪ ওভারে ২৫৭ (মাইশুকুর ১৫, ইমরুল ১২৬, শামসুর ৩০, তৌহিদ ৩৯, সাজ্জাদুল ১৪, আবু হায়দার ১৬*; মাশরাফি ৬/৪৬, সাইফউদ্দিন ২/৬৩, সানজামুল ১/১৭)।
ফল : আবাহনী ২৯ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মাশরাফি বিন মুর্তজা।

খেলাঘর-শেখ জামাল, ফতুল্লা
খেলাঘর : ৫০ ওভারে ১৮৩/৯ (অমিত ৪০, অঙ্কন ১০, রাফসান ২৬, মইনুল ৫৫, মাসুম ১৮; খালেদ ৩/৪৩, নাসির ১/২১, তাইজুল ৩/৩৯, এনামুল ১/২৪)।
শেখ জামাল : ৪২ ওভারে ১৮৫/৫ (ইমতিয়াজ ৪৭, ফারদিন ২৫, তানবীর ২৫, নাসির ২০, নুরুল ২২, জিয়াউর ২০*, তাইজুল ১৫*; রবি ১/২৮, তানভির ২/৩১, রবিউল ২/৪২)।
ফল : শেখ জামাল ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : তাইজুল ইসলাম।

রূপগঞ্জ-প্রাইম দোলেশ্বর, মিরপুর
রূপগঞ্জ : ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (মারুফ ১৪, শাহরিয়ার ৬৮, মুমিনুল ২৫, আকবর ৬৭, নাঈম ৪৩*, জাকের ১৯; ফরহাদ ৪/৫২, আরাফাত ১/১৭, সৈকত আলী ১/৩৮, এনামুল জুনি. ১/৩২।
দোলেশ্বর : ৪৬ ওভারে ১৯৩/১০ (ইমরান ৩৭, মাহমুদুল ২০, সাদ ৬১, তাইবুর ৩২; শুভাশিষ ২/২৮, নাবিল ১/৫২, মুক্তার ১/৪৪, শহিদ ৪/২৩, আকবর ২/২৮)।
ফল : রূপগঞ্জ ৭২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মোহাম্মদ শহিদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন