রাজনীতি ছাড়তে চান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ছাড়াও সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং এমপিদের অসাংগঠনিক কর্মকাÐের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে এমনই ইঙ্গিত দিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
পোস্টে আসাদুজ্জামান আসাদ লেখেন ‘রাজনীতি ছেড়ে দেবো কিনা ভাবছি’। দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না।’ আসাদের করা পোস্ট নিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিন শতাধিক নেতাকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষী। তারা দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর হস্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দমনের কথা বলেছেন। বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানকারী আসাদের এই পোস্টের পর রাজশাহীতে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। অনেকেই আসাদকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি দলের রাজনীতিতে সবসময় তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ছায়া দিয়ে এসেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীসহ জেলার কতিপয় নেতা ও এমপির দলবিরোধী কর্মকাÐে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন উপজেলায় এমপিদের লোকেরা দলের ভেতরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় দলের পদ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
উদাহরণ তুলে ধরে আসাদ আরও বলেন, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলী ও উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, পৌর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মজনু, ঝালুকা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মোট ১২ নেতাকর্মীকে উপজেলা ভোটের আগে কোমরে দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদের কোনো অপরাধ ছিল না। তারা উপজেলা নির্বাচনে একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিল-এই তাদের অপরাধ। তিনি আরও বলেন, জেলা কমিটিকে কিছু না জানিয়ে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও গোদাগাড়ীর সভাপতি বদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়নি, হয়েছে এলাকার এমপির নির্দেশে। তানোরে এমপির লোকেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে কিন্তু জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের রক্ষার জন্য আমি কিছুই করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, জেলার শীর্ষ পদে থেকেও নেতাকর্মীদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে পারছি না অথচ আমরা ক্ষমতায় আছি। নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ছুটে এসে প্রতিকার চাইছেন কিন্তু তাদের কোনো উপকারই আমি করতে পারছি না। ফলে রাজনীতি ছাড়ার কথাই আমাকে বাধ্য হয়ে ভাবতে হয়েছে। এদিকে জেলার সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন