টেকনাফে পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধ’ এক রোহিঙ্গা নারীসহ ৩ জন ইয়াবা কারবারী নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরে মাদক বিরোধী অভিযান চালানোর সময় এ ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হয়েছেন ৩ জন পুলিশ সদস্য। ঘটনাস্থল হতে ইয়াবা, দেশীয় অস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীল দাবি, তারা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
নিহতরা হলেন, উপজেলার হ্নীলা আলী আকবর পাড়ার মিয়া হোছনের পুত্র মাহমুদুর রহমান (২৮) ও হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়া মইন্যাজুমের নুরুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ আবছার (২৫) ও মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্ডু থানার রাইম্যাবিলের বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আক্তার (২০)।
জানা যায়, ৩১শে মার্চ ভোররাতে উপজেলার হ্নীলা মৌলভী বাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ইয়াবা কারবারী দু’গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। এ সময় মাদক কারবারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে অর্ধশতাধিক রাউন্ড গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের এসআই দীপক, এএসআই আমির ও কনস্টেবল শরীফুল আহত হন।
পরে মাদক কারবারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৬টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র, ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজসহ রক্তাক্ত ও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার নেয়ার পথে তারা মারা যান। নিহতরা উপজেলার হ্নীলা আলী আকবর পাড়ার মিয়া হোছনের পুত্র মাহমুদুর রহমান (২৮) ও হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়া মইন্যাজুমের নুরুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ আবছার (২৫) বলে সনাক্ত করেন। নিহতরা মাদকসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামী ছিল। মৃতদেহ ২টি পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এ ঘঠনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নাফ নদীতে টহল দেয়ার সময় ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে নৌকাযোগে একদল রোহিঙ্গা ইয়াবার চালান নিয়ে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবি জওয়ানেরা চ্যালেঞ্জ করে। এতে তারা বিজিবির ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে এবং ফাঁকাগুলিবর্ষণ করে। এ সময় এক বিজিবি সদস্য আহত হন। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করে। চোরাকারবারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল হতে গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহত মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ ও ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ১০ হাজার পিস ইয়াবা এবং ২টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনার খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর নিহত মহিলা মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্ডু থানার রাইম্যাবিলের বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আক্তার (২০)। বর্তমানে লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তির ব্লক নং-সি/৬ এর ৪০নং রোমে বসবাস করে আসছে বলে নিশ্চিত করেন।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার, বিজিবির মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকের চালান বহনকারী রোহিঙ্গা নারী নিহতের সত্যতা স্বীকার করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন