শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের ডেট টু জিডিপি বিশ্বের মধ্যে কম

আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

নানা বাধা-বিঘ্ন সত্তে ও বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগুচ্ছে তা প্রশংসাযোগ্য। বাংলাদেশের ডেট টু জিডিপি পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম কম। এটা একটি সরকারের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নির্দেশ করে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যে সাত শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাত দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমরা ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দাড়িয়েছে ১৯০৯ মার্কিন ডলার। আমরা এটা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ অবকাঠামো খাতে যেভাবে এগুচ্ছে তা অচিরেই শিল্প বিনিয়োগকে আরো বেশী আকর্ষণ করবে।
গতকাল রোববার আন্তার্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আবাসিক প্রতিনিধি রাগনার গুডমুন্ডসন এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আইএমএফকে জানান, সরকার চাইছে ২০২৫ সালের মধ্যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে শতভাগ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দিতে। সরকার আশা করছে উল্লিখিত পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি হলে জাতীয় পর্যায়ে দরিদ্র্যের হার ১৬ ভাগে নেমে আসবে। এক্ষেত্রে, কর্মসংস্থান তৈরিতে সরকার কারিগরিভাবে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে সরকার ব্যয় বাড়াবে যাতে করে বেসরকারি খাত বেশি মাত্রায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভ‚মিকা রাখতে পারে। সরকার ফাস্ট ট্রাক প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়নে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। সবশেষে যে কাজটি সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে তাহলো অভ্যন্তরীণ সম্পদ অর্জনে দক্ষতা দেখানো। এটা ঠিক আমাদের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত এখনও কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। তবে আমরা এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রী বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকেই নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করবে সরকার। আগামী জুলাইয়ে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ভ্যাট আইনে একাধিক স্তর থাকবে, এক্ষেত্রে সিঙ্গেল রেটের পরিবর্তে সহনীয় মাল্টিপল রেট থাকবে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না। এ আইনের আওতায় ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বা ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল ও শক্তিশালী হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশে সামাজিক সূচক উন্নত হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি কমেছে, বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে রাজস্ব ঘাটতি এখনও মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে। বাজেট প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া আরও উন্নত করার মাধ্যমে বাজেটের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও সমৃদ্ধ করার সৃযোগ রয়েছে।
পরে গতকাল শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বব সাউমসহ বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সক্ষাৎ করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, ধারাবাহিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থার জায়গা এখন বাংলাদেশ। বাংলাদেশ উজ্জ্বল সম্ভাবনাময়ী অর্থনীতির দেশ। আমাদের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে, এখন আমরা ঋণ প্রদানকারীর সাথে দরকষাকশি করে তাদের শর্তপূরন করার সক্ষমতা রাখি। তাই বিশ্বব্যাংকসহ সবাই ঋণ দিতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকাতে বিশ্বব্যাংকের যে টিম আছে তারা বাংলাদেশের চাহিদা বোঝেন। সামনে বাংলাদেশের সকল ধরণের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক সহায়তা আরো বাড়বে। বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের ভালো সময় যাচ্ছে। তবে মাঝে কিছুদিন এই সংস্থার সঙ্গে খারাপ সময় পার করেছিলাম। এই অবস্থা এখন আর নেই। বর্তমানে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের ভালো টিম রয়েছে। আশা করি প্রকল্পের ঋণ সহায়তাসহ সকল ধরণের সহায়তা বাড়াবে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বব সাউম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নারীদের কর্মস্থান ও নারী ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন এবং আগামীতে বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে তারা আগামী ১২-১৪ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বসন্তকালীন সভা নিয়ে আলোচনা করেন। সভায় বাংলাদেশের বিনোয়োগের খাত, জনশক্তির সম্ভাবনা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব ও রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়গুলো তুলে ধরার বিষয়ে আলোচনা হয়।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Evan Hussain ১ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৩৮ এএম says : 0
ডাটা শাঁক রান্না করে হাজার কিছু প্রকাশ করা যায়; কাগজে হাজার হাজার বাঘ বানানো যায়। কিন্তু সত্যটা কি? ব্যাংকগুলো দেউলিয়া যার জন্য ঋণের উপর সুদের হার ১২-১৫% আর আমানতের উপর সুদের হার ৫-৭%। হাজার হাজার কোটি টাকা লুঠপাটের পর সরকারী ব্যাংকগুলোকে সরকারের তরফ থেকে বিশেষ মূলধন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। ২০১০-এর পর থেকে শেয়ার বাজারের যে মন্দাভাব সেটা এখনো কাটেনি বললে ভুল হবে বরং সেটা তলানিতে। গার্মেন্টস্‌গুলোর অবস্থাও ভালো না; একটার পর একটা গার্মেন্টস্‌ বন্ধ হচ্ছে; বিদেশী বিনিয়োগ শূণ্যের কোঠায়, বিদেশে লোক যাওয়াও বন্ধ। এত খারাপের মধ্যে জিডিপি এত ভালো হয় কি করে? ঋণ করে আমদানী নির্ভর অর্থনীতি দ্বারা? চসেস্কু যখন ক্ষমতায় ছিল তখন কাগজে কলমে রুমানিয়া ছিল অর্থনৈতিক শক্তি; চসেস্কু ক্ষমতা হারানোর পরে দেখা গেল রুমানিয়ানরা তিন বেলা ঠিক মত খেতেই পায় না।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন