শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাঠ্যসূচি, শিক্ষা আইন, মোসাদ ইস্যু ভিন্নখাতে নিতেই শ্যামল কান্তি ঘটনার ব্যাপক প্রচার ; ওলামা লীগ

অন্য কোন শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ নেই

প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার ; পবিত্র দ্বীন ইসলাম অবমাননাকারী ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে এখনো গ্রেফতার না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ। তারা অবিলম্বে ইসলাম বিদ্বেষী শ্যামল কান্তিকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের কার্যনির্বাহী সভাপতি হাফেয মাওলানা আব্দুস সাত্তার, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সহ-সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল কান্তি’র ইসলাম অবমাননার বিষয়টি প্রমাণিত ও চরম সত্য ঘটনা। দেশী-বিদেশী মিডিয়ার অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। গত বুধবারের বিবিসি বাংলা, বৃহস্পতিবারের দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে ঐ স্কুলের ছাত্রদের স্বীকারোক্তিতে শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া এমপি সেলিম ওসমান সংবাদ সম্মেলনেও শ্যামল কান্তি’র ইসলাম ধর্ম অবমাননার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ছাত্র এবং অভিভাবকদের ভিডিও ফুটেজেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম নিযে কটূক্তির স্বীকারোক্তি রয়েছে।
তারা উল্লেখ করেন, গত ১২ জানুয়ারি দোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, ৯ জুলাই ২০১৪ ময়মনসিংহের ভালুকায় শিক্ষককে মারধর করা হয়, ভোলায় বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করা হয়, কোনো কারণ ছাড়াই গৌরীপুর কলেজ শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে উলঙ্গ করে ক্যাম্পাসে ঘুরানো হয়। তখন তো শ্যামল কান্তির পক্ষের মহলটি শিক্ষক অবমাননার নামে আন্দোলনে নামেননি, নিন্দাও করেনি। যখন শিক্ষক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার বিষয়টি এলো তখন শিক্ষক অবমাননার প্রচারণা কি উদ্দেশ্যমূলক নয়?
নেতৃবৃন্দ বলেন, চরম সত্য একটি বিষয়কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ইসলাম বিদ্বেষীমহল ও ইসলাম বিদ্বেষী মডিয়া উঠেপড়ে লেগেছে। শিক্ষামন্ত্রীও ধর্ম অবমাননার বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। বরং পবিত্র দ্বীন ইসলাম নিয়ে কটূক্তিকারী মৌলবাদী শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহাল করেছেন। ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করেছেন। ইসলাম ধর্ম অবমাননায় যেন কিছু আসে যায় না। তাছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটিতে পূজা উদযাপন কমিটির দুই সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকায় তাদের দেয়া তদন্ত রিপোর্টে ইসলাম অবমাননার বিষয়টি উঠে আসবে তার আশা করাও অবান্তর। এসব ৯৮% মুসলমানের দেশের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আশা করা যায় না। তাকে অবশ্যই পবিত্র দ্বীন ইসলাম অবমাননার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভিকারুননিসার পরিমলদের শাস্তি হলে মৌলবাদী শ্যামল কান্তি’র শাস্তি হবে না কেন?
তারা বলেন, মোসাদের বাংলাদেশী এজেন্ট শিপন বসুরা এদেশে মৌলবাদী হিন্দুদের দ্বারা অব্যাহতভাবে আল্লাহ পাক এবং হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কটূক্তি করে যাচ্ছে। যেমন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মৌলবাদী হন্দু শিক্ষক শংকর বিশ্বাস, শরীয়তপুরের জাজিরার জয়নগর জুলমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের তপন চন্দ্র বাড়ৈ, চিতলমারীর হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহলী ও সহকারী শিক্ষক অশোক কুমার ঘোষাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দেবাশীষ দয়াময় নামের এক স্কুল শিক্ষক, জামালপুর জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুপ্রিয় দে খাঁ, লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার, বৃন্দাবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রসেঞ্জিৎ চন্দ্র শীল, মৌলভীবাজারের বড়লেখার শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাস, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা উচ্চ বিদ্যালযের শিক্ষিকা সঞ্চিতা রাণী সাহা, যশোরের অভয়নগরে মহাকাল কলেজিয়েট স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক মনোরঞ্জন পশারী, চান্দিনা উপজেলার এএমএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের জুনিয়র শিক্ষক নীহার চন্দ্র সূত্রধররা কটূক্তি করলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না দেয়ায় শ্যামল কান্তিরা আবারো ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছে।
সুতরাং ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে লাভ হবে না। বরং পবিত্র দ্বীন ইসলাম অবমাননাকারী ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাকে দ্বীন ইসলাম অবমাননায় মৃত্যুদ- দিতে হবে। পবিত্র দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে সকল চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, শ্যামল কান্তিকে স্বপদে বহাল রাখার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আল্লাহ ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীকে উৎসাহিত করেছেন এবং শিক্ষামন্ত্রী যে ইসলাম বিরোধী নাস্তিক দলের তা তিনি প্রমাণ করলেন। এ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে শিক্ষা ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। তিনি দেশকে হিন্দু ও নাস্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য হিন্দুদের পাঠ্যসূচি দিয়ে গভীর চক্রান্ত শুরু করেছেন। তাই তাকে অপসারণ করতে হবে। তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের শ্যামল কান্তি আল্লাহ এবং ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করার কারণে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান যে বিচার করেছেন তা যৎসামান্য বিচার। তিনি ঈমানদার ব্যক্তির পরিচয় দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী কান্তির পক্ষ নিয়ে সেলিম ওসমান ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে তিনি হিন্দু ও নাস্তিকদের খুশি করতে চাচ্ছেন। ইতিপূর্বেও দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হিন্দু শিক্ষক আল্লাহ ও ইসলাম সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে। অবিলম্বে ইসলাম, আল্লাহ ও রাসূল (সা.) এর বিরুদ্ধে অবমাননাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করতে হবে এবং কান্তিকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।
খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, ইসলাম ধর্মের অবমাননাকারী শিক্ষক নামের কলঙ্ক নারায়ণগঞ্জ বন্দর স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে গ্রেফতার করে ফাঁসি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ৯২% মুসলমানের দেশে অমুসলিমদের মাধ্যমে বার বার পবিত্র ইসলাম ধর্মের অবমাননা জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে মাওলানা হামিদী বলেন, নাস্তিকরা পরিকল্পিতভাবে এদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে চলছে।
তিনি বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী চিহ্নিত নাস্তিক্যবাদী মহল শ্যামল কান্তিকে রক্ষায় উঠে পরে লেগেছে। নাস্তিক্যবাদী মহলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শ্যামলসহ সকল নাস্তিকদের বিচার করতে বাধ্য করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন