বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১০৪ কিমিতে দুর্ঘটনার ৩৫ স্পট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঝরছে তাজাপ্রাণ : পঙ্গুত্বে দুর্বিষহ জীবন

দেশের একমাত্র ইকোনমিক লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রতিমাসেই যাত্রী পথচারীসহ প্রাণ হারাচ্ছেন ১৫/২০জন। আহত হচ্ছেন অর্ধশতাধিক।
সড়কে প্রাণ ঝরছে যাদের তাদের পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হচ্ছে। আহতরা পঙ্গুত্ববরণ করে পার করছেন দুর্বিষহ জীবন। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক। আর এ আতঙ্ক নিয়েই প্রয়োজনের তাগিদে যানবাহনে ওঠতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের ১০৪ কিলোমিটার পথের অন্তত ৩৫টি স্থানে প্রতিমাসে ছোট বড় ১৫/২০টি দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে যানবাহন চালকদের অসতর্কতা-অসচেতনতা, সড়ক ও ট্রাফিক আইন অমান্য করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, মোবাইল ফোনে কথা বলা, তন্দ্রাচ্ছন্নভাব নিয়ে চালকের আসনে বসা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলা, অহেতুক ওভারটেকিং, উল্টোপথে গাড়ি চালানোসহ অন্যান্য অসংগত কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
মহাসড়কে ফোর লেনের সুবিধা থাকার পরও সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার বা লম্বা ছুটির সময় যানজট স্বাভাবিক চিত্র। একই সাথে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই মূলত দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। আর এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে চালকের অসতর্কতার পাশাপাশি মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে বেশকিছু বাঁক ও ইউটার্ন ও উল্টোপথে গাড়ি চালানো দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রীরা। প্রতিদিন মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, ফেনী, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, রামগতি, বান্দারবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও ঢাকা থেকে মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ, লাকসাম এবং কুমিল্লা থেকে ঢাকা, ফেনী, বান্দারবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ৪০টির বেশি গন্তব্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে।
এসব যানবাহনের বেশিরভাগই বেপরোয়া ও অধিক গতিতে চলাচল, অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন, চালকের অসাবধানতা, তন্দ্রাভাব নিয়ে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানো, মোবাইল ফোনে কথা বলা, উল্টোপথে গাড়ি চালানো এবং ওভারটেকিংয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।
মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে ফেনীর মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কুটম্বপুর, হাসানপুর, শহীদনগর, গাজীপুর, রায়পুর, পুটিয়া, দৌলতকান্দি, বারপাড়া, জিংলাতলী, নাওতলা, আমিরাবাদ, রায়পুর। চান্দিনা উপজেলার হাড়িখোলা, নুরীতলা, ছয়ঘড়িয়া, দোতলা, কাঠেরপুল, গোবিন্দপুর, কোরেরপাড়, গোবিন্দপুর। বুড়িচং উপজেলার নিমসার, কাবিলা, কোরপাই, কালাকচুয়া, সদর উপজেলার কালাকচুয়া, জাগুরঝুলি। সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী, মাটিয়ারা, কমলাপুর, সোয়াগাজীর লালবাগ। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হাড়িসর্দার বাজার, আমজাদের বাজার, দত্তসার, আমানগন্ডা, নানকড়া ও মোহাম্মদ আলীর বাজার। এসব স্থানেই বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
গত দুই মাসে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে প্রায় ৩০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫টি তাজা প্রাণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। আর পঙ্গুত্ব বরণ করেছে শতাধিক লোক। যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বেপরোয়া গতির নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যর্থ হয়ে খাদে পড়ে যাওয়া এবং উল্টোপথে গাড়ি চালানোর ঘটনা ঘিরে মূলত মহাসড়কে দুঘর্টনাগুলো ঘটেছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে চালানো এবং উল্টোপথে চলাচলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি না চালাতে চালকদের সচেতন ও দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে আমরা জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন