‘‘স্বামীর সঙ্গে রাতে ঝগড়া হয়েছে এমন অভিযোগ করে মায়ের কাছে নালিশ করার কারণে হত্যা করা হয় জোয়ানা আকতার উষাকে। স্বামী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য মাহমুদ আলম গলায় গামছা লাগিয়ে ফাঁস দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি- উপরন্তু কণ্ঠনালীতে কামড় দিয়ে স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।’’ নিহত উষার বড় ভাই জি এম সোহেল ইসলাম এমন অভিযোগ করেন।
এদিকে, নগরীর খানজাহান আলী থানার শিরোমনি বাদামতলা এলাকায় স্ত্রী জোয়ানা আক্তার উষা (২০) কে হত্যার কথা স্বীকার করলো পুলিশ সদস্য মো. মাহমুদ আলম (২৯)। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। মহানগর হাকিম মো. আমিরুল ইসলাম তার জবানবন্দী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছেন।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই জিএম সোহেল ইসলাম বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য মাহমুদসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে খানজাহান আলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারের অপর আসামিরা হলেন মাহমুদ আলমের বাবা মো. জবেদ আলী ও তার মা মোসা. লুৎফুননেছা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খানাজাহান আলী থানার এসআই নৃপেন বিশ্বাস জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে শ্বাসরোধে আসামি মাহমুদ আলম তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে গত রোববার খুমেক হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্তের পর জোয়ানার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে পাইকগাছার চাঁদখালি ইউনিয়নে বিষ্ণুপুর গ্রামে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে। গতকাল জোয়ানার নিজ গ্রাম পাইকগাছা উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামে তার জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, শিরোমনি বাদামতলা এলাকার মনিরুল ইসলামের বাসায় ভাড়া থাকতো তারা। গত শুক্রবার রাতে স্ত্রী জোয়ানা আক্তার উষাকে মারপিট করে মাহমুদ। শনিবার দুপুরে উষার ভাই সোহেল ওই বাড়িতে গিয়ে বোন জোয়ানাকে খাটের উপর অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জোয়ানাকে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ ও গলায় কামড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন