বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পম্পেও-মোমেন বৈঠক : বাংলাদেশের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্বারোপ

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:৫৩ এএম

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওয়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে মাইক পম্পেও এর বৈঠক নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আজ ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। বৈঠকে দুদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এই শরণার্থী ও আশ্রয়দানকারী দেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে আমরা কীভাবে কাজ করতে পারি, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য এই সমস্যার কারণ চিহ্নিত করা ও মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে জোর দেন।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে উত্থান হওয়া বাংলাদেশের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মার্কিন পরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী পালনের আগেই তাঁর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (৮ এপিল) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওয়ের মধ্যে এক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের আগেই তাঁর খুনিকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলে আমরা কৃতার্থ হবো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন এবং এই দৃষ্টিকোণ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলন্ত এই ইস্যুর ব্যাপারে যুক্তরারষ্ট্রের বিবেচনা করা উচিত।

আবদুল মোমেন ও মাইক পম্পেও এর মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে সোমবারের এই বৈঠক হয়। বৈঠক ‘খুবই সম্ভাবনাময়ী ও ফলপ্রসূ’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি এবং বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ের ব্যাপারে দুদেশের পরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ সুতা আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। ওই সুতা থেকে বাংলাদেশ যে পোশাক তৈরি করবে, তাতে শুল্ক সুবিধা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একশটি অর্থনৈতি অঞ্চল করা হচ্ছে, বিভিন্ন দেশ সেখানে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। আমরা চাই, যুক্তরাষ্ট্রও সেখানে বিনিয়োগ করুক এবং এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে তারাও উপকৃত হোক।

আবদুল মোমেন জানান, গত তিন বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য তিনগুণ বেড়েছে এবং এই বাণিজ্যের পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১.১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এই বাণিজ্য বাড়ার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি মাইক পম্পেও এর মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের মুখপাত্র শামীম আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ইউএসএআইডি’র প্রশাসক মার্ক গ্রিন ও সিনেটর ক্রিস্টোফার মারফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন