অফিস অব দ্য ইউনাইটেড নেশান্স হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) বলেছে যে, তাদের আশঙ্কা গত সপ্তাহে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হামলায় বহুসংখ্যক বেসামরিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা ছয়। ওএইচসিএইচআর-এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বৃহস্পতিবার বলেন, “আমরা এখন জানতে পারছি যে নিহতের সংখ্যা সম্ভবত অনেক বেশি। আমাদের কাছে অসমর্থিত সূত্রের খবর রয়েছে যে, নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩০ জন”। শুক্রবার মিয়ানমান সেনাবাহিনীর পরিচালিত মিয়াওয়াদি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে যে, বুধবারের হামলায় ছয়জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে এবং নয়জন আহত হয়েছে। বুথিডং টাউনশিপে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে পত্রিকাটিতে উল্লেখ করা হয়। উল্লেখ্য, আরাকান আর্মি মূলত রাখাইন জনগোষ্ঠি থেকেই তাদের বাহিনীতে জনবল নিয়োগ করে থাকে। তবে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিন থু খা সেনাবাহিনীর দাবি অস্বীকার করে বলেছেন যে, তাদের সদস্যরা নিহত বা আহত হয়নি এবং সেনাবাহিনী নির্বিচারে বেসামরিক মানুষদের উপর হামলা চালিয়েছে। তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, “তারা সব জায়গাতেই বোমা ফেলেছে। তারা মনে করেছিল আরাকান আর্মির সদস্যরা জঙ্গলের ভেতরে রয়েছে”। তিনজন গ্রামবাসী এবং আঞ্চলিক এমপিও রয়টার্সকে বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, সাই দিন জলপ্রপাতের কাছাকাছি এলাকায় স্থানীয়রা বাঁশ সংগ্রহ করছিল। সে সময় সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার নিয়ে সেখানে হামলা করে। সো তুন ও নামের এক শ্রমিক জানান, নিহতদের সবাই ছিল বাঁশ শ্রমিক। ২০১৭ সালে এই রাজ্যটি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বর্বর হামলার শিকার হয়েছিল। এবং ওই হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে ৭৩০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে যে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ মুসলিম সংখ্যালঘু এই জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। ২০১৭ সালের আগস্টে পুলিশ পোস্টের উপর রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপের হামলার পর ওই নিধন অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। কর্মকর্তারা বলছেন, এ আক্রমণে প্রায় ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে তারা খবর পেয়েছেন, তবে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এসএএম, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন