শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

হরিপুরে ধানের চেয়ে পানির দাম বেশি

প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় পুরোদমে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের মৌসুম শুরু হলেও শ্রমিক সংকট ও ধানের মূল্য কম থাকায় উৎপাদন খরচ উঠে আসছে না। ধান চাষী কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এলাকার কৃষকেরা জানান যে, বোরো ধান আবাদের সময় আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়। ধান কাটার মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টিতে পাকা ধান পড়ে যায়। ধান কাটার শ্রমিক সংকট। এ ব্যাপারে কয়েকজন ধান কাটা শ্রমিকের সহিত যোগাযোগ করলে তারা জানান বর্তমান বাজার দরে ধানের দাম কম থাকায় হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মজুরি কম পাই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান কেটে ধান মালিকেরা দিনী হিসেবে (জিন) হিসেবে ২০-২৫ কেজি ধান দেয়। তা বিক্রি করে লাভবান হতে পারছি না। এ ব্যাপারে কয়েকজন ধান ব্যবসায়ী মিল মালিকের সাথে যোগাযোগ করলে জানান ধান কিনে চাল করে বিক্রি করতে গেলে চাল বিক্রি হয় না। ধান কিনি এক দামে আবার চাল করে বিক্রি করতে গেলে বারেবারে লোকসান গুনতে হয়। ব্যাংক ঋণের সুদ সময়মতো দিতে না পেরে ঋণখেলাপির তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ হয়েছে। ধানের চেয়ে মিনারেল ওয়াটার সোয়া লিটার পানির দাম ২৫ টাকা। ৩ কেজি ধান বিক্রি করে ১ লিটার বোতলজাত পানি ক্রয় করতে হয়। অপর চাষী জানালেন, সোয়া মণ ধান বিক্রি করে ১ কেজি গরুর গোশত কিনেছি। ১০০ জন ধান চাষীর সহিত যোগাযোগ করলে জানান, গত কুরবানী ঈদে গরুর গোশত খেয়েছি। ৭ জন চাষী জানালেন, গোশত কেনার সম্বল হয় নি। গ্রাম অঞ্চলের হাট বাজারের দোকানদারগণ নতুন ধান উঠতে দেখে বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য হালখাতা মহরত অনুষ্ঠান করতে শুরু করেছে। ব্যাংক তার ঋণ আদায়ের জন্য বাড়িতে লাল নোটিশ দিয়ে গেছে। এনজিও কর্মীরাও বসে নেই। তারাও বাড়িতে হানা দিতে শুরু করেছে। বীরগড় গ্রামের মোঃ হাফিজ উদ্দিন, মহেন্দ্রগাঁও গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমানসহ আরও অনেকে জানালেন, ১০ বিঘা বোরো ধান আবাদ করেছি। বর্তমান বাজার দরে ৬০০/৭৫০ টাকা দরে ৮০ কেজি ধান বিক্রি করে। উৎপাদন খরচ উঠে আসছে না। ধান, গম, সরিষাতে বারবার লোকসান দিয়ে প্রতিদিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। সার, বিষ, মুদির দোকানদার, ওষুধের দোকানের বকেয়া টাকা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ পরিশোধ করার কোন উপায় দেখছি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার এর সহিত যোগাযোগ করলে জানান যে, বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৭৩০ হেক্টর। এ বছর বোরো ধান আবাদ হয়েছে ৭৭৪৫ হেক্টর। অপরদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এর সহিত যোগাযোগ করলে জানান, গত ৫ মে হতে বোরো ধান ক্রয় এর কথা থাকলেও কৃষক কার্ডের তালিকা না পাওয়ার কারণে শুরু করতে পারিনি। প্রতি কেজি ধান ২৩ টাকা । বোরো ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা এ বছর ১১৪৬ মে.টন খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন