মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকার প্যারোলের নামে রসিকতা করছে

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্যারোলের কথা বলে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে রসিকতা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিয়ে ভয়ংকর প্রতিহিংসাপরায়ণতা অব্যাহত রেখেছে। সরকারের আচরণে স্পষ্ট হয়েছে, জনগণের নেত্রীকে জনগণ ও রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য তাঁর জীবন পণবন্দী করেছে। এখন তাঁর জীবন হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়ে প্যারোলের কথা বলছেন। দেশনেত্রীর জীবন ও চিকিৎসা নিয়ে এটিও সরকারের রসিকতা। গতকাল (বুধবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীসহ তাদের নেতারা দেশনেত্রীর প্যারোল নিয়ে অস্থির। দেশনেত্রী তো স্বাভাবিক আইনী প্রক্রিয়াতেই জামিনে মুক্তি পাবেন, তাহলে ক্ষমতাসীনদের এই প্যারোলের কথা বলাটা তো দূরভিসন্ধিমূলক। সরকারের গভীর ষড়যন্ত্র এবং কুমতলব এখন পরিস্কার। তিনি বলেন, জনগণ তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চায়। প্যারোলের প্রশ্ন কেন আসছে? তিনি তো নির্দোষ। ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকার সম্পূর্ণ সাজানো মিথ্যা মামলায় তাঁকে জোর করে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে হত্যার জন্য জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। পুরো টাকায় ব্যাংকে জমা রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যে টাকার কথা বলা হচ্ছে সেই টাকার বিষয়ে কোথাও তাঁর কোন সই স্বাক্ষার নেই, সেই টাকা এখনও ব্যাংকে জমা আছে। টাকা মেরে খেলে ব্যাংকে সেই টাকা কিভাবে সুদে-আসলে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে? তাহলে বেগম জিয়া সেই টাকা কোথায় সরালেন? এটার উত্তর কি প্রধানমন্ত্রী দেবেন? তিনি অবিলম্বে গুরুতর অসুস্থ বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি করে বলেন, প্যারোলের কথা বলে কোন ধোঁয়াশা সৃষ্টি করবেন না, কারন কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে জনগণই রাজপথে নেমে এসে তাঁর মুক্তি আদায় করে নিবে। আর সেদিন এই অবৈধ সরকারের পালানোর পথ থাকবে না।
খালেদা জিয়াকে হেয় করতে টিভি চ্যানেল মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে আবারও হেয়-প্রতিপন্ন করার চক্রান্ত শুরু করেছে। সরকারি দলের লোকদের অর্থে পরিচালিত একটি টিভি চ্যানেল ও মিথ্যাচারে নিয়োজিত কিছু সাংবাদিক এবং কয়েকটি প্রোপাগান্ডা ওয়েব পোর্টাল হলুদ সাংবাদিকতা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ বিএনপিবিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক রচনা প্রতিযোগিতা করছে। গত কয়েকদিন আগে এই আওয়ামী মিডিয়াগুলোতে রিপোর্ট করেছে বেগম খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে নাকি বেতন দেয়া হচ্ছে না। আমরা খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, ফাতেমা বেগমের বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে ম্যানেজ করে এই সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। ফাতেমার পরিবারকে তার প্রাপ্য ছাড়াও অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে। আর ফাতেমা আদালতের নির্দেশনায় দেশনেত্রীর সঙ্গে আছে। বেগম জিয়া নিজের হাঁটা-চলাতে অসুবিধা হয়। তাঁর একজন সাহায্যকারী দরকার হয়। সেই বিবেচনায় ফাতেমা তাঁর সঙ্গে আছেন। এটাও এখন হিংসুক সরকারের সহ্য হচ্ছে না। তারা নিজেদের প্রপাগান্ডা মিডিয়ায় এই নিয়ে গল্প তৈরি করছে এবং সরকারি হুমকির মুখে নানাজনকে নানা কথা বলতে বাধ্য করছে।
গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, কই ঐ মিডিয়াগুলোতে তো সুবর্ণচরের কবিরহাটে ধর্ষিতা নারীর আত্মীয়স্বজনদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেনি, সিলেটে কলেজ ছাত্রী খাদিজাকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা কুপিয়েছিল, কই সেই ছাত্রীর পরিবারের আর্তনাদ তো প্রচার করা হয়নি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্মস্বীকৃত নারী নির্যাতকের দ্বারা অত্যারিত ছাত্রীদের আত্মীয়স্বজনদের সাক্ষাৎকার তো প্রচার করা হয়নি। দেশে নারী-শিশু নির্যাতন মহামারী আকার ধারণ করেছে। বাসে, ট্রেনে, স্কুল-কলেজ, পরীক্ষা কেন্দ্র ও বাসাবাড়ীতে নারী নির্যাতনের হিড়িক পড়েছে, এদের পরিবারের আত্মীস্বজনদের সাক্ষাৎকার তো প্রচার করা হয়নি? আসলে দেশনেত্রীর গৃহকর্মী ফাতেমাকে নিয়ে আওয়ামী দু’তিনটি দলদাস মিডিয়া যে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে সেটির উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্যারোল নিয়ে তাদের মিশন সফল হয়নি। এজন্যই ঐ মিডিয়াগুলো সরকারের নির্দেশে এধরণের নোংরা খেলায় মেতেছে। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন