শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

প্রেসিডেন্টের মেয়ে পরিচারিকা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

একটি কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে চাকরির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। সবখানেই প্রতিযোগিতা- কর্ম খালি নেই। কাজের তেমন অভিজ্ঞতা নেই। তাই ভালো কোনো চাকরি মিলছে না তার। মেয়েটির মনে হলো রেস্তোরাঁর পরিচারিকার কাজটি তিনি করতে পারবেন। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মাসাচুসেটসের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁয় গিয়ে ইন্টারভিউ দিতে থাকেন মেয়েটি।
প্রথম দিকে বিফল হচ্ছিলেন। সব রেস্তোরাঁর মালিক একই কথা বলেন, আমাদের এখানে কোনো লোকের প্রয়োজন নেই। অন্য কোথাও খুঁজে দেখ। কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েটি হতাশ হতে থাকেন। একদিন মাসাচুসেটসের মার্থাস ভাইনইয়ার্ড নামের একটি দ্বীপে অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি হয় মেয়েটির। প্রথম দিনেই রেস্তোরাঁর মালিক ন্যান্সি তাকে সতর্কবার্তা দেন, কোনো দিনই দেরি করে আসা যাবে না। দেরি করে এলে চাকরি হারাতে হবে।
মালিকের কথায় সায় দিয়ে নিয়মিত কাজ করতে থাকেন সেই কৃষ্ণাঙ্গ তরুণী। যথাসময়ে তার উপস্থিতি দেখে রেস্তোরাঁর কর্মকর্তারাও সন্তুষ্ট হন। কাজেও বেশ মনোযোগী। কাস্টমারদের অর্ডার নেয়া, দ্রুত খাবার পরিবেশন, টেবিল পরিষ্কার করে দেয়াসহ অন্যান্য সব কাজই চটপটে করেন তিনি। এরপরও মাঝেমধ্যে কিছু ভুল হয়ে গেলে গালমন্দ শুনতে হয় তাকে। চুপচাপ তাও সহ্য করেন তরুণী।
এমন একদিনের ঘটনা। কফির পেয়ালা সরাতে গিয়ে অলক্ষ্যে কিছুটা কফি এক কাস্টমারের কাপড়ে পড়ে যায়। এতে প্রচন্ড রেগে গিয়ে রেস্তোরাঁর কর্মকর্তাকে বিচার দেন ওই কাস্টমার। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে সেই কাস্টমারের কাছে মাফ চেয়ে এবারের মতো পার পেয়ে যান মেয়েটি। এভাবে ব্যস্তময় পরিচারিকার দায়িত্বের ওপর ভর করে দিন চলে যেতে থাকে মেয়েটির।
একদিন সহকর্মীর জন্মদিন উৎসবে যোগ দিতে হয় মেয়েটিকে। সেখানে কেক কাটার পর দেখা গেল মেয়েটি কেক খাচ্ছেন না। জোর করেও তাকে কেক খাওয়ানো যাচ্ছে না। সহকর্মীরা ভাবলেন, বেশি সস্তা দরের কেক বলেই কি খেতে পারছেন না তিনি? আবার তারা ভাবলেন, গরিব ঘরের মেয়ে এর চেয়ে ভালো কেক চোখেও তো দেখে না। তাহলে এই কেকে কামড় দিতে সমস্যা কী?
মেয়েটি জবাব দিলেন, পেট ভরা তাই খেতে ইচ্ছা করছে না। এভাবেই সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলছিল মেয়েটির চাকরিজীবন। একদিন রেস্তোরাঁর এক কর্মী দেখলেন, কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েটি কাজ শেষে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে একটু আড়ালে গেলেই ছয়জন দীর্ঘদেহী মানুষ তাকে ঘিরে রাখেন। আর নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যান। মেয়েটিকে বিলাসবহুল গাড়িতেও চড়তে দেখেন তিনি।
পর দিনই ঘটনাটি নিয়ে বেশ গুঞ্জন শুরু হয়। রেস্তোরাঁর অন্যান্য সহকর্মীর কাছে এতদিনের চেনা মেয়েটি রহস্যময় হয়ে ওঠে। সবাই আড়চোখে দেখতে থাকেন তাকে। কথাটি চলে যায় রেস্তোরাঁর মালিকের কানে। এভাবে বিষয়টি চলে যায় স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে। কে এই মেয়ে সেই রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে পড়েন সাংবাদিকরা। তারা জানতে পারেন কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েটির আসল পরিচয়। মেয়েটি আসলে আর কেউ নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ছোট মেয়ে সাশা ওবামা!
বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। বিশ্ববাসী জেনে যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ছোট মেয়ে সাশা ওবামা নিজের পরিচয় লুকিয়ে এতদিন একটি রেস্তোরাঁয় পরিচারিকার কাজ করছিলেন। গ্রীষ্মকালীন ছুটির ফাঁকে মাসাচুসেটসের ওই রেস্টুরেন্টে কাজ নিয়েছিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের মেয়ে কেন এমনটি করলেন সে বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর জবাব দেন বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, সন্তানরা একটি বয়সে আসার পর তাদের বিলাসিতা ছাড়তে বাধ্য করেছি আমি। আমি তাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পথে ছেড়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, জীবনটা শুধুই হোয়াইট হাউসকেন্দ্রিক নয়। এখানে জানতে হবে কীভাবে চলছে যুক্তরাষ্ট্রের খেটে খাওয়া মানুষের জীবন। এটি না হলে নিজেকে সঠিক মানুষরূপে গড়ে তুলতে পারবে না তারা। আর সে জন্যই ছুটির ফাঁকে এমনটি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সূত্র : ফক্স ফাইভ, বস্টন হেরাল্ড।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
HM Howlader Azan Ahmad ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৩ এএম says : 0
এটা উন্নত দেশের দৃষ্টান্ত নয়। উন্নত মানসিকতার দৃষ্টান্ত যা একটি জাতির উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য ।
Total Reply(0)
Wafie Miah ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৩ এএম says : 0
আমাদের দেশের নেতারা রাষ্ট্রপ্রধানের এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার কিছু আছে কি? ধর্ম, শুধু নিজেদেরকে মুসলিম বলে গর্ব করার কিছু নেই। কাজের মাধ্যমে ধর্মের পরিচয় তুলে ধরা উচিত। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ মানুষের কল্যাণে কাজ করা। চুরি করে, লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়া নয়। আসুন আমরা সত্যিকারের মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি।
Total Reply(0)
Manik Das ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৩ এএম says : 0
বাংলাদেশের সাধারন ইউনিয়ন পরিশদের চেয়ারম্যান এর ছেলে মেয়ে এরকম করলে সেখানে তুলকালাম হয়ে যাবে। একবার চেয়ারম্যান হতে পারলে চৌদ্দ গোস্টি বসে খাবে দেশের সম্পদ।
Total Reply(0)
Asaduzzaman Bulet ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৪ এএম says : 0
আর হামাগোর দেশের হলে, নুন্যতম তার স্থান হত, ইংল্যান্ড,আমেরিকা,কানাডা কিংবা মঙ্গলগ্রহে।
Total Reply(0)
Nazmul Hq ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৪ এএম says : 0
সভ্য মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল কাজে ব্যস্ত থাকা,
Total Reply(0)
Shamsu Uddin ১৪ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৩৪ এএম says : 0
বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য টাকা চাইহিলে দিবেনা বিদেশ জাওয়ার জন্য হলেদিবে?
Total Reply(0)
Mohit ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:৪১ এএম says : 0
আচার শেখায় মা বিচার শেখায় বাবা,দুজন ভাল মা/ বাবার শিক্ষা আজ সাশার মাধ্যমে দুনিয়া কে শিক্ষা দিল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন