বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

‘পাগলাটে’ ম্যাচ জিতেও সিটির বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

শ্বাসরুদ্ধকর বললেও কম বলা হবে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, গোল-পাল্টা গোল, ভিএআর নাটক- সব মিলে একটি ফুটবল ম্যাচকে আকর্ষনীয় করতে যা যা লাগে তার সবকিছুই নিয়ে হাজির হলো ম্যানচেস্টারের ইতিহাদ স্টেডিয়াম। ঘড়ির কাঁটা ২০ মিনিট পার না হতেই স্কোরবোর্ডে জমা হলো পাঁচ গোল! শুরুর এই রোমাঞ্চ বজাই থাকল ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত। সাত গোলের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটি ৪-৩ গোলে জিতলেও চোখের জলে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পেপ গার্দিওলার দলকে। হেরেও অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে টটেনহাম হটস্পার।

ইনজুরি টাইমে রাহিম স্টার্লিং জালে বল পাঠালে ঘুমন্ত ইতিহাদ মুর্হুতেই গর্জে ওঠে। কিন্তু ভিএআরের সহায়তায় গোল বাতিল হলে মুহূর্তে আবারো সেখানে নেমে আসে শোকের নীরবতা। ম্যাচ শেষে টটেনহাম মিডফিল্ডার দেলে আলির বলা প্রথম বাক্যেই ফুটে ওঠে ম্যাচের আসল চিত্র, ‘এটা ছিল পাগলাটে একটা ম্যাচ। আমি ভাবছিলাম বিরতির আর দুই মিনিট বাকি আছে, অথচ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি এটা ছিল ২৭ মিনিট।’

এই হারে ঐতিহাসিক শিরোপা চতুষ্টয় জয়ের সম্ভবনা শেষ হয়ে গেল পেপ গার্দিওলার দলের। লিগ কাপ এরই মধ্যে জিতেছে সিটি। প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ শিরোপাস্বপ্নও এখনো ভালোভাবে টিকে রয়েছে তাদের।

ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে সিটিকে এগিয়ে নেন স্টার্লিং। ছয় মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে উল্টো টটেনহামকে লিড এনে দেন প্রথম লেগের নায়ক সন হিউন-মিন। দুই লেগ মিলে তখন ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে স্পার্সরা। পরের মিনিটেই বের্নার্দো সিলভার গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে সিটি। আর ২০তম মিনিটে স্টার্লিংয়ের দ্বিতীয় গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় গার্দিওলার শিষ্যরা। ৫৯তম মিনিটে সার্জিও আগুয়েরোর গোলে ব্যবধান বাড়ায় সিটি। দুই লেগ মিলে তখন ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু ৭৩তম মিনিটে লরেন্তের গোল হিসাব পাল্টে দেয়। সেই গোল নিয়েও শুরু হয় ভিএআর নাটক। বাকি সময়ে আক্রমনের ধার বাড়িয়েও লাভ হয়নি ম্যান সিটির। এসময় রক্ষণের দিকে বাড়তি নজর দেয় টটেনহাম। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মাতে সফরকারীরা।
লরেন্তের গোলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে ঠিকই তবে এই পর্বে টিটেনহামের নায়ক সন হিউন-মিন। দুই লেগ মিলে এই দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড করেছেন তিন গোল। ম্যাচ শেষে তার প্রতি তাই বাড়তি কৃতজ্ঞতা ঝরেছে কোচের কন্ঠে, ‘সন অসাধারণ পারর্ফম্যান্স প্রদর্শন করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখানে দুই গোল করে সে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিযেছে। খুব খুব খুশি। সে ছিল অবিশ্বাস্য।’ সিটিকে হারানোর উচ্ছ¡াস প্রকাশে আর্জেন্টাইন কোচ বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির মত দলকে হারাতে পারা অবিশ্বাস্য। দুই লেগই অনেক প্রতিদ্ব›দ্বীতাপূর্ণ ছিল। এখানে (ইতিহাদে) সিটির বিপক্ষে তিন গোল করা সহজ নয়।’

সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে পরাজিত দলের কোচ গার্দিওলা বলেন, ‘এটা স্বপ্নীল একটা রাত ছিল এবং স্টেডিয়ামে এমন আবহ আমি ম্যানচেস্টারে আসার পর আগে দেখিনি। আমি তাদের সবার জন্য দুঃখ বোধ করছি। তবে আমি জানি তারা বিশ্বাস করে আমরা সবকিছু উজাড় করে দিয়ে চেষ্টা করেছি। ফুটবল এমনই, অনিশ্চয়তার।

প্রথম লেগে সিটি টটেনহাম স্টেডিয়ামে হেরেছিল ১-০ গোলে। দুই লেগ মিলে লড়াইয়ে আসে ৪-৪ সমতা। প্রতিপক্ষের মাঠে গোল করার সুবিধা নিয়ে শেষ হাসি হাসে মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল। সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ জুভেন্টাসকে হারিয়ে আসা নেদারল্যান্ডসের দল আয়াক্স।
তরুণ ও আত্মবিশ্বাসে টাইটম্বুর আয়াক্স চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত স্পার্সরা। দলের মিডফিল্ডার দেলে আলি বলেন, ‘এটা আরো একটা কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে। (আয়াক্স) দলটা তরুণ তবে চ্যালেঞ্জ জানাতে ভালোবাসে।’ আর কোচ পচেত্তিনোর মতে, ‘ফুটবল হলো অনিশ্চয়তার খেলা। আয়াক্স যেভাবে খেলে, আমি মনে করি এটা উভয় দলের জন্য সমান সুযোগে আক্রমনাত্মক ও আকর্ষনীয় একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’
এক নজরে ফল
ম্যান সিটি-৪
টটেনহাম-৩
দুই লেগ মিলে ৪-৪ ড্র, অ্যাওয়ে গোলে টনেহাম জয়ী



 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন