শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এবার তুমব্রু খালে স্লুইস গেট নির্মাণ করছে মিয়ানমার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৯, ৭:৫০ পিএম

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে তুমব্রু খালে পিলার নির্মাণের পর এবার স্লুইস গেট নির্মাণ করছে মিয়ানমার। দু’দেশের সীমান্ত বিওপি থাকা স্বত্ত্বেও চোরাচালান ও সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশের দোহাই দিয়ে মূলত শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের সরাতে এমন পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রোহিঙ্গাদের।

খালে পিলার ও স্লুইস গেট নির্মাণের ফলে শূন্যরেখার পাশাপাশি ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাবে বলে দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির। তবে স্থাপনা নির্মাণের পরও দু’দেশের পানির গতিপথ স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কাছে লিখিত চেয়েছে বিজিবি।

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু খাল। এই খাল দিয়ে দু’দেশের পানি প্রবাহিত হয়। কিন্তু হঠাৎ করে চোরাচালান ও সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশের দোহাই দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারির শুরু দিকে তুমব্রু খালের উপর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পিলার নির্মাণের কাজ করে মিয়ানমার। এরপর থেকেই ওই স্থানে ধারাবাহিকভাবে পিলারের কাজ চালিয়ে যায় মিয়ানমার। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে দু’দেশের পানি প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে দাবি তুলে ঘুমধুমের স্থানীয়রা। বারবার মিয়ানমারকে এ ব্যাপারে প্রতিবাদলিপি দেওয়া হলেও কোনো সাড়া দেয়নি। এরপর পিলারের উপর তৈরি করে কাঁটাতারের বেড়া।

তবে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের দাবি, মূলত তাদেরকে শূন্যরেখা থেকে সরাতে খালের ওপর এই স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা।

শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘তুমব্রু খালে মিয়ানমারের এই স্থাপনার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি ঢল এসে সব তলিয়ে যাবে। আমরা শূন্যরেখায় যেসব রোহিঙ্গা আছি; মূলত তাদের ক্ষতি করার জন্য মিয়ানমারের এই পাঁয়তারা।’

আরেক রোহিঙ্গা আরিফ বলেন, ‘বান্দরবান হয়ে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অসংখ্য খাল রয়েছে। কিন্তু ওইখানে তো মিয়ানমার চোরাচালান ও সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ বন্ধের জন্য খালের উপর পিলার ও কাঁটাতার দেয়নি। শুধুমাত্র তুমব্রু খালের উপর মিয়ানমার এই স্থাপনা দিচ্ছে কেন? এতে বোঝা যায় আমাদের সরাতে মূলত এই উদ্যোগ। কিন্তু আমরা এখান থেকে কোথাও সরব না; সরতে হলে এখান থেকে অধিকার নিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাব।’

৩নং ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘খালে পিলার ও স্লুইস গেট নির্মাণের ফলে শূন্যরেখার পাশাপাশি চলতি বর্ষা মৌসুমে পুরো ঘুমধুম ইউনিয়নের স্থানীয়দের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাবে। আগে হয়তো ১০ ঘণ্টা মানুষ পানিতে কষ্ট পেত। এখন সেটা ১০ দিনের অধিক হয়ে দাঁড়াবে।’

এদিকে সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল পিলারের নিচে বসানো হয় বেড়া আকৃতির লোহার পাত। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ফলে ৫ এপ্রিল থেকে কাজ বন্ধ করে দেয় মিয়ানমার। কিন্তু ৯ এপ্রিল থেকে আবারও কাজ শুরু করে তারা।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারে বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, শুষ্ক মৌসুমে তুমব্রু খাল দিয়ে যাতে কোনো ধরনের চোরাচালান পাচার কিংবা সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার জন্য এই বেড়া দিচ্ছে মিয়ানমার। তারা ওই স্থাপনা নির্মাণের ছবি দেখিয়ে আমাদের বর্ণনাও দিয়েছে। এটা মূলত স্লুইস গেটের মতো করেছে, যখন পানি বেড়ে যাবে তখন গেটটি খুলে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কিন্তু কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।

তবে এই স্লুইস গেটটি কারা ব্যবহার করবে এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, এটি সম্পূর্ণ নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে কারা এটির দায়িত্ব থাকবে কিংবা কারা পরিচালনা করবে তাদের সংস্থা ও ব্যক্তিদের নাম্বারসহ পুরো বিষয়টি লিখিত আকারে পরবর্তীতে বিজিপি জানাবে বলে আমাদের জানিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Kowaj Ali khan ২৩ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:১৮ পিএম says : 0
এত দিনে বারমাকে মারতে মারতে শেষ করিয়া দিতাম সমস্যা ভোট চুন্নি ভারতীয় দালাল কাঁপুরুষ। এই চুন্নি মুক্ত, দালাল মুক্ত বাংলাদেশ চাই। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন