শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সেফুদা’র কোরআন অবমাননা: সর্বত্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

শাহেদ নুর | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:৩৬ পিএম

সম্প্রতি ফেইসবুক লাইভে এসে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করেছেন সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা। শুধু মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হন নি; এসময় তিনি পবিত্র কোরআনের পাতা ছেঁড়াসহ এমন কিছু কাজ করেন, যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা প্রসঙ্গে লাইভে এসে তিনি এসব কাজ করেন। এরপর ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নেটিজেনদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার ঝড়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা সেফুদাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে অথবা ওই দেশে বিচারের দাবি জানান। পাশাপাশি ফেইসবুকে তাকে বয়কট করার আহ্বান জানান। অনেকে আল্লাহর কাছে তার হেদায়েতের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্মগন্থ পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননাকারী সেফাত উল্লাহ সেফুকে দেশ এবং বিদেশের মাটিতে যারা আইনের আওতায় সোপর্দ করতে পারবে, তাদের জন্য ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে।’

নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া দেখে সেফুদা আরেকটি লাইভ করেন। সেখানে তিনি বলেন, তিনি যে বইয়ের পাতা ছিঁড়েছেন, সেটা পবিত্র কোরআন শরীফ ছিলো না। ওটা একটি উর্দু বই ছিলো। এসময় তিনি নিজেকে একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে দাবি করে কাউকে মনে কষ্ট না নিতে আহ্বান করেন।

তাতেও থামেনি সমালোচনার ঝড়। কারণ তিনি এ ধরনের মন্তব্য এই প্রথম করেন নি। এর আগেও ধর্ম, বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারকে নিয়ে অনেকবার বেফাঁস মন্তব্য করেছেন।

সেফুদা’র কোরআন অবমাননার ইস্যুতে দেশে বিভিন্ন জায়গায় তার এসব বক্তব্যের প্রতিবাদ ও তার শাস্তির দাবি করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

এই ইস্যুতে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা দেশেই নয়, ভিয়েনায় বসবাসরত বাংলাদেশীরাও হয়েছেন সোচ্চার। গত শুক্রবার তারা একটি কমিটি তৈরি করেন। জুমার নামাজের পর বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা ভিয়েনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফরের সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি বৈঠকও করেছেন।

পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর জানান, ইস্টারের ছুটির পর বিষয়টি কূটনৈতিক চ্যানেলে অস্ট্রিয়ার সরকারকে জানাবেন। তিনি জানান, সেফাত উল্লাহ সাহেবের যেসব কথা ইউটিউবে পোস্ট হয়েছে, তাতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অবমাননা করার বিষয় রয়েছে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে। আমরা একইসাথে উদ্বিগ্ন যে বিষয়টি নিয়ে যেন ভিয়েনাতে বসবাসরত অন্যান্য দেশের মুসলিমদের মধ্যে অহেতুক কোনো উত্তেজনার সৃষ্টি না হয়। সেজন্য বিষয়টি অষ্ট্রিয়ার সরকারকে অবগত করা প্রয়োজন রয়েছে।

কে এই সেফুদা

সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা। চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চেড়িয়ারা গ্রামের মৃত হাজী আলী আকবরের পুত্র। সেফুদার বাবা তিনটি বিয়ে করেন। সব ঘর মিলে সেফুদার ভাই-বোন ১৫ জনের অধিক। তার আপন ভাই-বোনের সংখ্যা ৮জন। তবে কারো সাথে তার সর্ম্পক নেই। এমনকি সম্পর্ক নেই স্ত্রী-সন্তানের সাথেও। তার স্ত্রী থাকে বাংলাদেশে আর একমাত্র ছেলে থাকেন ইংল্যান্ডে।

পরিবার, এলাকাবাসী ও তার পরিচিতজনরা জানান, ছোটবেলা থেকেই সেফুদা ছিলেন উন্মাদ। ২৫ বছর আগে তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন।

বিভিন্ন ভিডিওতে তার কথানুযায়ি, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে বসবাস করছেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Taiyeebur rahman ২২ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:৩২ পিএম says : 0
....... ekta ...........
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন