সিরাজদিখানে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ডাক্তার সংকটের কারণে বৃহৎ এই জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত হচ্ছে।
হাসপাতালটি জেলার ২ টি উপজেলার কাছা-কাছি হওয়ায় পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর ও লৌহজং উপজেলা থেকে রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার। কাগজে কলমে ২১ জন চিকিৎসক থাকলেও চিকিৎসক আছেন মাত্র ১১ জন। তাই চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এ উপজেলার রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক ৫শ থেকে সাড়ে ৬শ রোগী সেবা নিতে আসেন। গরমের কারণে জ্বর,ঠাণ্ডা ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সুত্র আরো জানায়, ৫০ শয্যার জন্য ডাক্তার প্রয়োজন ২১ জন । বর্তমানে ১১ জন ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নাক কান গলা,ও কার্ডিওলজিষ্ট প্রেষনে আছেন।চর্ম, যৌন, চক্ষু,ও হাড় জোড় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ খালি আছে ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটা চিকিৎসকের কক্ষে রোগীদের লাইন। সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষকরা যায় শিশু ও মহিলা কনসালটেন্টের কক্ষে। কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় ৩ থেকে ৪ জন রোগীকে এক সাথে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। কক্ষের বাহিরে দীর্ঘসময় লাইনে দাড়িয়ে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে হাসপাতালের ভেতরে বেঞ্চে বসে আছেন।
সেলিনা হোসেন নামে এক রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে হৃদরোগ, সার্জারি, মেডিসিন, চর্মও যৌনসহ, নাক কান গলা,চোখ জন্য কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.বদিউজজ্জামান বলেন,‘এ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল সমস্যাটা সবচেয়ে বেশী । চিকিৎসা সেবা চলমান রাখতে ২১জন চিকিৎসক দরকার । সেখানে সব মিলিয়ে চিকিৎসক আছে মাত্র ১১ জন।
তিনি আরো বলেন, প্রচণ্ড গরমে বর্তমানে হাসপাতালে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি আসছে। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অধিকাংশ বেশির কারণে রোগীর অনেক চাপ রয়েছে। তাই সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের। এজন্য যে সমস্ত ডাক্তারদের পদগুলো শূন্য আছে সেখানে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে। যারা এখানে নিয়োগ নিয়ে অনত্র কাজ করছেন,তাদের হয় এখানে ফিরিয়ে আনা হউক, নয়ত তাদের পদগুলো শূন্য করে নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করা দরকার।’
জেলা ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সুমন বণিক বলেন,‘সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি । আমি নিজেও আমাদের পরিচালক মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি । আশা করছি খুব শীঘ্রই নতুন ডা: নিয়োগ হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন