ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দাতা ও মামলার প্রধান আসামী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ্দৌলাকে গতকাল রবিবার বিকেল ৩ টায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। জবানবন্দি চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।
অধ্যক্ষের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আদালত চত্বরে পিবিআইয়ের চট্টগ্রামের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার মো. ইকবাল উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিং করেন। তিনি জানান, অধ্যক্ষ সিরাজের সাথে মামলার আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম ও নুর উদ্দিন ফেনী কারাগারে দুইবার দেখা করেন। তখন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তাঁদেরকে নির্দেশ দেন-নুসরাতকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাজী করাতে চাপ দিতে। এ প্রস্তাবে নুসরাত রাজী না হলে তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন এবং পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচারনা চালাতে বলেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ঘটনার সবই স্বীকার করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে রাজি হননি।
এ সময় পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, নোয়াখালী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাসু দত্ত চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই আদালতে মো. লোকমান লিটন নামে একজন স্বাক্ষীর ১৬৪ ধারায় স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হয়। মো. লোকমান লিটন সোনাগাজীর ওলমাবাজারের একজন ব্যবসায়ি। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার জন্য আসামী শাহাদাত হোসেন শামীম ওই দোকান থেকে কেরোসিন তেল কিনেছিলেন। পিবিআই ওই দোকান থেকে তেল পরিমাপের সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দাতা হিসেবে ৯ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১০এপ্রিল তাঁকে আদালতে তুলে তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, এ মামলায় এ যাবত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৫ জনের রিমান্ডের আদেশ হয়েছে এবং অধ্যক্ষ সিরাজসহ ৯ জন আসামী ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন