যশোরের চৌগাছায় মধু কবির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদে নিষিদ্ধ ঘেরজাল ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। উপজেলার তাহেরপুর ঘাট থেকে ধুলিয়ানী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার নদের বুকে কদমতলা গ্রামের ¯øুইচগেট নামক স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। নদের দু’ক’লে বসবাসকারি মৎস্যজীবীরা নদে মাছ ধরতে না পারায় অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিনে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক দিন আগে থেকেই এসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে তা বেড়েই চলেছে। এসব পাটাতনের কারণে স্বাভাবিক নৌ চলাচল ও মাছের বিচরণ ব্যাহত হচ্ছে। ব্যহত হচ্ছে নদের নাব্যতারও।
জানা যায়, তাহেরপুরের রাম হালদার, হাজরাখানার নির্ত্ত হালদার, স্বরুপপুরের বাঁচ্চু মিয়া, কাবিলপুরের নেঁদা মন্ডল, চৌগাছার আনসারসহ অনেকেই নদে পাটাতন সৃষ্টি করেছেন। বেশির ভাগ পয়েন্টে নিষিদ্ধ ঘেরজাল, ভ্যাশাল জাল, পাটাবাঁধ, কোমর ও বাঁশের বেড়া ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানায় তৈরী এসব পয়েন্টে মাছের জন্য খাবার দিলে সেখানে মাছ জড়ো হয়। কয়েকদিন পর পর সেই মাছ শিকার করে তারা।
মৎস্যজীবীরা বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরে কয়েক দফা অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা এ কাজে জড়িত থাকায় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কপোতাক্ষ নদের মুক্ত জলাশয়ে ৩শ ৫০ কেজি রুই জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। যার মূল্য প্রায় ১ লাখ টাকা। এ নদের পাড় ঘেঁষে তাহেরপুর, নারায়নপুর, পেটভরা, হাজরাখানা, টেংগুরপুর, কংশারীপুর, পাঁচনামনা, চৌগাছা, কুটিপাড়া, দিঘলসীংহা, কদমতলা, মাশিলা, মশ্যামপুর, শাহাজাদপুর, কাবিলপুর, ধুলিয়ানীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এ সব গ্রামের অনেক হতদরিদ্ররা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে এ নদীর বুকে মাছ ধরে। কিন্তু নদের বুকে বিভিন্ন স্থানে পাটাদিয়ে মাছ শিকার করায় বিপাকে পড়েছে মৎস্যজীবীরা।
বর্তমান সরকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ভরাট হয়ে যাওয়া নদ-নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে খননের উদ্যোগ নিলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি মধু কবির এই নদের ওপর। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহাজান সিরাজ বলেন, নদীতে পাটাতন দিয়ে মাছ শিকার করা অবৈধ ও অপরাধ। কেউ সেটা করলে তার বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কেউ কোন অভিযোগ আমার দপ্তরে দেয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন