শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফনি নোয়াখালী অঞ্চলে আঘাত হানে। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০/৬০ কিলোমিটার। এর আগে রাত ১২টায় মেঘনায় জোয়ার হলেও রাত তিনটায় মেঘনা ছিল কানায় কানায় ভর্তি। আর এসময় অর্থাৎ ভরা জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় ফনি এতদ্বঞ্চলে আঘাত হানে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ফনির ঘন ঘন দিক পরিবর্তনের ফলে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেয়েছে উপকূলীয় ও দ্বীপাঞ্চলের দশ লক্ষাধিক অধিবাসী।
আজ শনিবার নোয়াখালীর উপকূলীয় ও হাতিয়া উপজেলার স্থানীয় কয়েকজন অধিবাসীর সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে। তারা জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমরা সমুদ্রে জোয়ার ভাটার প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখি। ঘূর্ণিঝড় যদি দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে থেকে শুরু হয় এবং তখন যদি সমুদ্রে জোয়ার থাকে তাহলে নিমিষেই বিশাল এলাকা ধ্বংশস্তুপে পরিণত করে দিতে পারে।
উদাহরণ দিয়ে তারা ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে বয়ে যাওয়া ঝড় জলোচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতার কথা জানান। সে দিন রাত ৯টা থেকে ঝড় শুরু হয়। রাত ১২টার দিকে পূর্ব দিকে থেকে ঝড় শুরু হয়। এসময় সমুদ্রে ভরা জোয়ার ছিল। এরপর শুরু হয় ১৫/২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস। জলোচ্ছ্বাসে সন্দীপ উপজেলা থেকে অসংখ্য মৃতদেহ হাতিয়া, মনপুরা, রামগতি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। রাত ২টার দিকে ঘূর্ণিঝড় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসলে হাতিয়ার দ্বীপ থেকে প্রায় দুই শতাধিক লাশ গভীর সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতের এসব লাশের আর সন্ধান মেলেনি। জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা এমনই ছিল যে, ২৫ফুট উচ্চতার শক্তিশালী নলচিরা বেড়ীবাঁধ নিমিষেই বিধ্বস্ত হয়ে হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক জানমালহানি ঘটে।
জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ফনি দূর্বল হয়ে যাওয়া ও ঘন ঘন দিক পরিবর্তনের ফলে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে কয়েক লাখ উপকূলবাসী। নচেৎ ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল রাতের পূণরাবৃত্তির আশংকা ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন