মানিকগঞ্জের শিবালয়ে আরিচা-জাফরগঞ্জ রাস্তা কাম বাঁধের নিচের অংশে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এ বাঁধটি। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় বাঁধটি ধসে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আশপাশের বাড়ি-ঘর, আরিচা নদী বন্দর, স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা ও কবরস্থান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে আরিচা-জাফরগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ বাঁধের পাশে যমুনা নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এ পরিস্থিতিতে নদী ভাঙন রোধে স্থানীয় তেওতা ইউনিয়ন পরিষদ ও নিহালপুরবাসীর উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশীয় পদ্ধতিতে বাঁশ পুতে প্লাস্টিকের বেড়া দিয়ে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। কিন্তুু এতেও শেষ রক্ষা হয়তো হবে না। নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে স্রোতের যে ভাঙন, তা রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এমতাবস্থায় চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে নিহালপুরবাসী।
ভাঙন রোধে সরকারি উদ্যোগ জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্যপক ক্ষতি হবার আগেই নদী ভাঙন রোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহনের কামনা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, যমুনা নদীর পাড় ওপচে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর পানিতে তলিয়ে যেতো এলাকার ফসলি জমি। কৃষকের ফসল রক্ষার্থে ১৯৬২-৬৩ সালের দিকে তৎকালিন তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান হারেজ মিয়ার উদ্যোগে নির্মাণ করা হয় এ বাঁধ। আরিচা ঘাট থেকে জাফরগঞ্জ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘের এ বাঁধটি চলাচলের রাস্তা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ বাঁধটি আরিচা-জাফরগঞ্জের মধ্যে সহজ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ফলে অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন এখান দিয়ে। আরিচা ১ নং ফেরি ঘাট থেকে নিহালপুর ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ১২ শ’ ফুট রাস্তার নিহালপুর অংশে বর্ষা মৌসুম আসলেই পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন দেখা দিতো। ভাঙন রোধে বাঁশ দিয়ে প্যালাসাইটিং করে অস্থায়ীভাবে প্রতিবছরই মেরামত করা হতো। পরবর্তিতে ২০১২-১৩ অর্থ বছরে উপজেলা পরিষদ থেকে ওই স্থানে ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নদীর পাড়ে নিচ থেকে সিমেন্টের খুটি দিয়ে প্যালাসাইটিং করে ওপরের অংশে বøক বসিয়ে মেরামত করা হয়। এতে বেশ কয়েক বছর নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পায়। এ বছর নদীতে পানি বৃদ্ধির আগেই প্যালাসাইটিংয়ের নীচের অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙন রোধ করা না হলে একদিকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে সরকারি অর্থের ক্ষতি হবে। অপরদিকে বন্ধ হয়ে যাবে আরিচা-জাফরগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বর্ষকালে পানিতে তলিয়ে যাবে তেওতা ইউনিয়নের নিহালপুর, ঙ্কিুটিয়া ও নারায়ণ তেওতাসহ আশপাশের গ্রামের বাড়িঘর ও আবাদি ফসলি জমি। এছাড়া আরিচা ঘাটের পুরাতন ট্রাক টার্মিনাল, নিহালপুর ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর নিহালপুর মসজিদ ও কবরস্থান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মাওলা মেহেদী হাসান বলেন, শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের নিহালপুরে নদী ভাঙনের বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা বিষয়টি আমাদের হেড অফিসকে জানিয়েছি। তারা বাজেট দিলে আমরা কাজ শুরু করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন