বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

এলএনজি দেয়ার অপেক্ষায় এওটি

বাংলাদেশকে কম মূল্যে গ্যাস সরবরাহের অঙ্গীকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করার লক্ষ্যে সরকারের সাথে চুক্তি করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও প্রায় দেড় বছর অপেক্ষায় রয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এওটি এনার্জি। সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম শেষ করে মন্ত্রিসভার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বিষয়টি। এওটি বলছে, বাস্তবায়ন সম্ভব হলে, বাংলাদেশের জন্য এলএনজি সরবরাহে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অফার দিতে পারবে তারা। মূল্য পরিশোধে ৪৫ দিন সময় দেওয়া হবে এবং অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে গ্যাস সরবরাহের অফার রয়েছে তাদের।
তবে এবার বিষয়টিতে তাগাদা এসেছে এওটি এনার্জির পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এওটির এলএনজি বিষয়ক গেøাবাল হেড জেমস ও ‘ব্রায়ান একটি চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে। গত ৩০ এপ্রিল পাঠানো ওই চিঠিতে বিষয়টিতে চূড়ান্ত চুক্তির জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এওটি’র এলএনজি প্রধান বলেছেন চুক্তি সম্ভব হলে বাংলাদেশের আস্থা নিয়েই কোম্পানিটি প্রয়োজন মাফিক নিয়মিত এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে। দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে ও ভবিষ্যত রিজার্ভ নিশ্চিত রাখতেই সরকার এলএনজি আমদানির ওপর জোর দেয়। বিশ্বের বেশ কয়েকটি এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তখন এগিয়ে আসে, তার মধ্যে সুইজারল্যান্ডের এওটি এনার্জি দেশের জন্য অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক প্রস্তাব নিয়ে তাদের আগ্রহের কথা জানায়। সে বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়ে ২০১৭ সালের জুনে এওটি এনার্জির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা পেট্রোবাংলা। ওই বছরের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এলএনজি বিক্রয় ও ক্রয় চুক্তির জন্য পেট্রোবাংলা ও এওটি’র মধ্যে দরকষাকষি হয়। অনেকাংশে সমঝোতা হয়ে গেলে ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সুইজারল্যান্ড ও পোল্যান্ডে এওটি এনার্জির সক্ষমতা পরিদর্শন করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পেট্রোবাংলার উর্দ্ধতনরা এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিধি দলটি দেশে ফিরে তাদের ইতিবাচক পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে তাদের সুপারিশ দেয়। তারই ভিত্তিতে এই ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে উপনীত হওয়ার লক্ষ্যে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং সম্পন্ন করা হয়। বিষয়টি এখন মন্ত্রিসভার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে বলেই জানিয়েছে সূত্র।
দেশের জন্য এলএনজি আমদানির গুরুত্ব জেনে সরকার কেবল কাতার ও সুইজারল্যান্ডই নয়, আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সা¤প্রতিক ব্রæনাই সফরকালেও দেশটির সঙ্গে এ সংক্রান্ত এমওইউ স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। এছাড়া ওমান ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই করেছে ঢাকা।
জেমস ও’ব্রায়ান তার সবশেষ চিঠিতে চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি পারষ্পরিক আস্থার বাণিজ্যিক অংশিদারীত্ব এই চুক্তির মধ্য দিয়েই সম্ভব হবে, এমনটা উল্লেখ করে ও’ ব্রায়ান বলেন, এওটি এনার্জির সঙ্গে পেট্রোবাংলার এই চুক্তি অনেক বেশি সাশ্রয়ী হবে। এটি কেবল যে বিনিয়োগ তা নয়, তাদের প্রস্তাব বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মানব সম্পদকে এলএনজি বিষয়ক জ্ঞান দিতেও সহায়ক হবে। এওটি এনার্জি যেসব সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ করতে চায় তার অন্যতম হচ্ছে- ৪৫ দিনের মূল্য পরিশোধ সুযোগ। এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে মুল্য পরিশোধের কথা বললেও এওটি তা ১৫ দিন বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি দেশের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক একটি প্রস্তাব। মূল্য পরিশোধে সময় পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি দিনই বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হবে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন