শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কক্সবাজারে কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা গোস্ত-মাছের দোকানে নৈরাজ্য

বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৯, ৯:৩৬ পিএম

বাজার মনিটরিং করছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসন ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান


কক্সবাজারে কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা গোস্ত-মাছের দোকানে নৈরাজ্য।
মাছ-গোস্তের দোকানে গলাকাটা মূল্যে অতিষ্ঠ ভোক্তা ক্রেতারা। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসেও ভোক্তাদের ঠকানোর মানসিকতা পরিবর্তন হয়নি কিছু ব্যবসায়ীদের। কক্সবাজার শহরে গোস্ত-মাছ যেন এখন ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

এই নৈরাজ্য রোধ করতে অব্যাহত রয়েছে কক্সবাজার জেল প্রশাসন ও কক্সবাজার পৌরসভা নিয়মিত অভিযান ও মনিটরিং। রমজান মাস শুরুর আগে থেকে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট গোস্ত মাছের দোকানে অভিযান চালিয়ে অনিয়মের জন্য জরিমানা করে আসছে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়িরা অভিযান ও জরিমানা পর্যন্তই ঠিক থাকে।

জানাগে, জেলা প্রশাসন রমজানের আগেই অভিযান চালিয়ে ২০/৩০ টি গোস্তের দোকানে জরিমানা করে এবং সবাইকে সতর্ক করে। কিন্তু দেখাগেছে রমজানে ঠিকই চড়ামূল্যে গোস্ত বিক্রি করছে, ওজনে কম দিয়ে ভোক্তাদের সাথে প্রতারনা করছে।

একইভাবে খবর নিয়ে জানাগেছে, রামু, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীতে কসাইদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ভোক্তারা। উপজেলা গুলোতে রমজানের আগে অভিযান পরিচানা করা হলেও রমজানে তারা আবারো ফিরে আসে তাদের পুরোনো মানসিকতায়
অনিয়ন্ত্রিত দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কক্সবাজার শহরের গোস্ত বিক্রেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। এসময় সরকারী নিয়ম অনুযায়ী গরু, মহিষ ও খাসির গোস্তের মূল্য নির্ধারণ করে দেন মেয়র। রমজানের দু'দিন আগে শনিবার বিকেলে পৌর ভবনের মেয়র কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ সভা আয়োজন করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন তিনি।

ওই সভায় মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, “সম্প্রতি গরু-মহিষের দাম বৃদ্ধিসহ নানা অজুহাতে কসাইরা অতিরিক্ত মূল্যে গোস্ত বিক্রি করছে এমন অভিযোগ অহরহ। সাথে ওজনেও কম দেয়া হয় বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এটি খুবই দু;খজনক। তিনি বলেন, এমন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বহুবার জেল-জরিমানাও দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এতে করে ব্যবসায়ীদের হাতে সাধারণ মানুষ প্রতারণা ও হয়রানীর শিকারও হয়। তাই পৌরসভার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে এক টাকাও যদি বেশি নেয়া হয় তাহলে সাথে সাথে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে কেউ যদি গোস্তের ওজনে কম বা অতিরিক্ত দাম নেয় সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তাদের হুশিয়ার করেন মেয়র।

সভায় হাঁড়সহ গরু-মহিষের গোস্ত প্রতিকেজি-৫৫০টাকা, ছাগী ৬৫০ টাকা ও খাসীর গোস্ত ৭০০টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, পৌরসভার নির্ধারিত মূল্যে গোস্ত বিক্রি হচ্ছে কিনা তা পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নজরদারীতে রাখবেন বলেও জানান তিনি।

এসময় কক্সবাজার পৌরসভার সচিব রাসেল চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম, বড়বাজার গোস্ত ব্যবসায়ী সমিতির সমিতির সভাপতি নুরুল আলম সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক মো.শফিকুল ইসলাম ও ইজারাদার রুহুল কাদেরসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা?

এই নৈরাজ্য ঠেকাতে কক্সবাজার শহরে যৌথভাবে মাঠে নমেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও কক্সবাজার পৌর মেয়ের মুজিবুর রহমান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও কক্সবাজার পৌর মেয়ের মুজিবুর রহমান জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে সরেজমিনে বাজার মনিটরিং এ বের হন।

এসময় তাঁরা শহরের বড় বাজার ও বাহারছরা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখন এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে মত বিনিময়
করেন। সাথে সাথে তাঁরা রমজানে নির্ধারিত মূল্যের বেশী মাছ-গোস্ত
বিক্রি করতে নিষেধ করেন। এছাড়া ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অতিরিক্ত মূল্য না নিতে এবং খাদ্যে বেজাল না করতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।
অবশ্য জেলা ও পৌর প্রশাসনের এই সতর্কতায় রাস্তায় খোলা ইফতারী বিক্রি কিছুটা কমেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন