মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মায়ের টিউশনির টাকায় হামিমের জিপিএ-৫

অদম্য মেধাবী

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

এ বছরের এসএসসি ফলাফলে পরিবারের দারিদ্রতার কাছে হার মানেননি মো. হামিম। হামিম এ বছর বোরহানউদ্দিন সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহ মোহাম্মদ নোমান জানান, পরিচর্চা পেলে হামিমের মেধার কাছে সফলতা ধরা দেবেই। হামিমের বাবা বেঁচে নেই আয়র উৎস মায়ের টিউশনি। হামিমের বাড়ি উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের তিন নাম্বার ওয়ার্ডে ঢালী বাড়ি পরিচিত। বাবা জাহাঙ্গির ড্রাইভার ২০১৩ সালের ১০ মার্চ যাত্রী হিসেবে বাসে চড়ে ভোলা সদর যাবার পথে দুর্ঘটনায় মারা যান। হামিম তখন চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র। ওই সময় বড় বোন আসমার সদ্য বিয়ে হয়েছে। আরেক বড়বোন সাথী আক্তার টুম্পা অষ্টম শেণিতে পড়তো। পরিবারের উপার্জনকারী একমাত্র ব্যাক্তির মৃত্যুতে অন্ধকার নেমে আসে হামিমের মা ফাতেমার সংসারে। ফাতেমা বেগম জানান, সম্পদ বলতে তার ম্বামী ভিটেমাটি আর ৮ শতক জমি রেখে যায়। জমি থেকে বছরে দুই হাজার টাকা পাওয়া যায়। ওই টাকা দিয়ে ১ মাসের সংসার খরচও চালানো যায় না। তার ব্রত ছিলো যেভাবে হোক সন্তানদের শিক্ষিত করবেন। হামিমের বড় বোন টুম্পা পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। হামিমসহ তার বড় বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাতে তাকে ধার-দেনা করতে হয়। হামিমের মা ফাতেমা ক্লাশ নাইন পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ওই বিদ্যায় ভর করে তিনি সকালে এলাকার ছেলে-মেয়েদের আরবি পড়ান, বিকালে ক্লাশ ফোর ফাইভের শিক্ষার্থীদের বাংলা আর অংক শিখান। এর বিনিময়ে তার আড়াই হাজার টাকা আয় হয়। এ টাকায় টেনে টুনে সংসার চলে, পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনা। ফাতেমা বেগম আরো বলেন, দিনদিন যেভাবে খরচ বাড়ছে তাতে কিভাবে ওদের পড়াবো এই ভেবে চোঁখে-মুখে অন্ধকার দেখি।
হামিম জানান, তার মৃত বাবার স্বপ্ন ছিলো আমাকে ডাক্তার বানানো। বাবার স্বপ্ন পূরণে আমার চেষ্টার ত্রুটি থাকবেনা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন