শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তাসকিনকে নিয়ে কানাকানি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

‘’ দল নির্বাচনে আগে হস্তক্ষেপ করলেও এখন করি না 

‘’ বাদ পড়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকা উচিত
‘’ তাসকিন এলে ভেরিয়েশন বাড়বে

 

কাল থেকে একটা খবর ভেসে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে- আবু জায়েদ রাহীর পরিবর্তে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ একাদশে জায়গা পেতে যাচ্ছেন তাসকিন আহমেদ। গুঞ্জনটা এতই তিব্র আকার ধারণ করেছে যে, এ নিয়ে কথা বলতে গুলশানে নিজের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
তাসকিনের ব্যাপারটা খোলোসা না করলেও আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের ঘোষিত স্কোয়াডে পরিবর্তন আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন পাপন। সেটি কী কারণে তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিসিবি প্রধান, ‘মূল স্কোয়াডে কারো আসার সম্ভাবনা আমি দেখি না, আপনাদেরকে তো আগেই বললাম। আপনারা যা বলছেন- রিজার্ভ বেঞ্চে কে আছে। মেইন স্কোয়াড থেকে মাশরাফিকে আমরা বসাবো? ইঞ্জুরড না হলে বসাবো না। মুস্তাফিজকেও আমরা বসাবো না। সাইফউদ্দিন ভালো করছে, সে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। সাইফউদ্দিন যদি না খেলতে পারে, রুবেল খেলবে। কাজেই তার পরে কী হবে ওটা তো অনেক পরের ব্যাপার।’ তিনি যোগ করেন, ‘২২ তারিখের আগে দল ইংল্যান্ডে দল থাকবে ৫ দিন, দেখি না সময় তো আছে। এখনই বলার মত কোনো কারণ নেই। তবে লজিক তো আপনাদের বলেছি। তাদের লজিক হচ্ছে তাসকিন এলে ভ্যারিয়েশন বাড়বে।’
রাহীর পরিবর্তে স্কোয়াডে তাসকিনের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি হাসান পাপনের কাছে জানতে চাওয়া হলে পরিস্কার করে কিছুই জানাননি। যদি পরিবর্তন হয়ও সেটা কী কারণে? কার পছন্দে? এই বিষয়ে পাপন জানান, ‘কোচের একটা পছন্দ আছে, অবশ্যই। ভ্যারিয়েশনের দিক থেকে কোচ মনে করেন তাসকিন হলে ভালো হয়। তবে হ্যাঁ, মাশরাফি হোক বা কোচ হোক সবাই কিন্তু এটাও স্বীকার করে- দলে আসা না আসা নির্ভর করে তার ফিটনেস ও ফর্মের উপর।’
চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর তাসকিন এখনো নিজেকে ঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। তাসকিনকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাকলে দলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না জানিয়ে পাপন বলেন, ‘না, এটা কোনো ইমপ্যাক্ট ফেলবে না। ঐ যে বললাম না, আপনারা বেশি ভাবছেন। আপনারা ১৫ নম্বর খেলোয়াড় নিয়ে বেশি চিন্তা করছেন, আমরা ভাবছি ১১ নম্বর খেলোয়াড় নিয়ে যে মাঠে খেলবে। ওটা (কথিত ‘১৫ নম্বর খেলোয়াড়’ বা পরিবর্তনের জায়গা) নিয়ে আমরা অতো চিন্তিত না, টিম ম্যানেজমেন্টও চিন্তিত না।’
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন রাহী, আছেন ত্রিদেশীয় সিরিজের দলেও। তবে এখনো কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি তার, প্রস্তুতি ম্যাচ ও উইন্ডিজের বিপক্ষে মূল ম্যাচ- দুই ম্যাচেই ছিলেন ব্রাত্য। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি তো ভেসে গেছে বৃষ্টিতেই। ফাইনাল নিশ্চিতের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোতে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। কেননা উইনিং কম্বিনেশন এখনই ভাঙতে চাইবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। আগামীকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
তাসকিনের অন্তর্ভুক্তির গুঞ্জন সত্যি হলে রাহীর বাদ পড়া নিয়ে তৈরি হতে পারে সমালোচনার জোয়ার। তবে তাসকিনকে দলে নেওয়া হলেও সেটি যে তার প্রতি দুর্বলতা থেকে নয়, বরং তাসকিনের বিশেষত্ব ‘ভ্যারিয়েশন’ এর কারণে- তা জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘তাসকিন কেন্দ্রিক কোনো আসক্তি (লাইকিং) নেই। আপনারা এটাকে এভাবে মিলিয়ে দিবেন না। তাসকিনের প্রতি কোনো স্পেশাল লাইকিং নেই। ভ্যারিয়েশন বৃদ্ধি পাবে তাসকিন আসলে- এটা মনে করেছে কোচ এবং টিম ম্যানেজমেন্ট।’ রাহীকে দল থেকে ‘এভাবে’ বাদ দেওয়াও উচিত হবে না জানিয়ে ফের বোর্ড সভাপতি জানান, ‘দল থেকে বাদ পড়ার জন্যও মানসিক প্রস্তুতি থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘এটাও আমরা মনে করি, যেহেতু রাহীকে একবার দলে নেওয়া হয়েছে, আমি মনে করি ওকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত।’ ‘বাদ তো পড়তেই পারে। ইনজুরির জন্য বাদ পড়তে পারে, এমনি বাদ পড়তে পারে। প্রথমেই তো আমি বলেছি, এখান থেকে কেউ বাদ পড়তে পারে।’
সব মিলিয়ে তাসকিন ও রাহীর ইস্যুতে টিম ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ড সভাপতির অবস্থান এখনো পরিস্কার নয়। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রাহীকে বাদ দিয়ে তাসকিনকে দলে নেয়ার পরিকল্পনা এঁটেছেন নির্বাচকরা।
বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে তাসকিনকে কিছু শর্তই বেঁধে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘শুধু ফিট থাকলেই চলবে না, যদি ভালো বোলিং করতে পারে তবে...এখনো তেমন কিছু দেখেনি। দুর্দান্ত কিছুই সে করে দেখাইনি। তুলনা করার সুযোগই তো পাইনি। রাহি একটা ম্যাচও খেলেনি। এটা নিয়ে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি। কেউ যদি চোটে পড়ে তবে বিকল্প হিসেবে যেতে পারে। আর যদি নিশ্চিত হতে পারি, ও (তাসকিন) দুর্দান্ত বোলিং করছে, অন্যদের তুলনায় ভালো, তখন হয়তো চিন্তা করতে পারি। এখনো অপেক্ষায় থাকতে হবে। পরের ম্যাচটা যদি আমরা জিতি, শেষ ম্যাচটা হয়তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে।
তবে কে দলে আসবে যাবে এ নিয়ে নিজে কোন হস্তক্ষেপ করেন বলে জানান পাপন, ‘একটা ব্যাপার যেটা আমি আগেও বলেছি, আমি কিন্তু আগে সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতাম। আমি আর কোচ বসে কী হবে না হবে সব জিনিস ঠিক করতাম। কিন্তু গত এশিয়া কাপের পর থেকেই কোন কিছু করছি না। ছেড়ে দিয়েছি মানে এই নয় যে একবারেই সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি। আমি চাচ্ছি যে ওরাও সিদ্ধান্তটা নিক। খুব দরকার ছাড়া আমি হস্তক্ষেপ করবো না।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন