কুমিল্লার সদর দক্ষিণে নিলুফা আক্তার নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক এম এ আউয়াল এ আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আবু তালেব কারাগারে বন্দী রয়েছেন এবং অপর আসামি জোতস্না বেগম পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মাতাইনকোট গ্রামের মকবুল আহমেদের ছেলে আবু তালেব একই গ্রামের সেলিম মিয়ার মেয়ে কিশোরী নিলুফা আক্তারকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। এতে নিলুফা আক্তার বিয়ের জন্য আবু তালেবকে চাপ সৃষ্টি করে। ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিলুফার বাবা সেলিম মিয়া মসজিদে গেলে এ সুযোগে আবু তালেব তাদের বাড়িতে যায় এবং নিলুফাকে ঘর থেকে বাড়ির উঠানে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একই বাড়ির আব্দুর রহমানের স্ত্রী জোতস্না বেগম নিলুফার মুখ চেপে ধরে এবং আবু তালেব মিয়া তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে নিলুফার শরীরের ৮৪ শতাংশ পুড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। ঘটনার ৩ দিন পর ২৬ জানুয়ারি ওই হাসপাতালে নিলুফা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দী দেয় এবং ৩১ জানুয়ারি ভোরে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিলুফার বাবা সেলিম মিয়া বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর দক্ষিণ মডেল থানার তৎকালীন এসআই জাহাঙ্গীর আলম ওই বছরের ১৭ এপ্রিল আদালতে দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ১৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল সোমবার আদালতের বিচারক দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন