শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটা যুক্ত হচ্ছে মহাসড়কে

প্রথম আরসিসি শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়ক

মো. জাকির হোসেন, পটুয়াখালী থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চলতি বছরেই মহাসড়কে সংযুক্তির মাধ্যমে পায়রা বন্দর থেকে সড়ক পথে মালামাল পরিবহনের দ্বার উন্মোচিত করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ আরসিসি শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়ক। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পিছিয়ে থাকা সম্ভাবনাময় দক্ষিণাঞ্চলকে ঘিরে দেশের আগামী দিনের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যমান দুটি বন্দরের পাশাপশি ২০১৩ সালে আরেকটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ হাতে নেন। এরই অংশ হিসেবে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার রাবনাবাদ চ্যানেলে শুরু হয় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা নির্মাণ কাজ।
শুরুর তিন বছরের মধ্যেই পায়রাবন্দর সংলগ্ন নৌ চ্যানেলের নাব্য সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট নৌপথে বন্দরের মালামাল খালাসের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়। বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস করে নৌ-পথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মালামাল চলে যাচ্ছে পায়রা বন্দর থেকে।
ইতোমধ্যে ২৬টি বিদেশী জাহাজ পায়রা বন্দরে তাদের মালামাল খালাস করেছে। দেশের অন্য দুটি বন্দর থেকে রাজধানীর সড়ক পথে দূরত্বসহ যানজটের কারণে পায়রাবন্দর থেকে সড়ক পথে মালামাল পরিবহন সহজতর ও যানজটমুক্ত থাকায় অতি দ্রুত সড়ক পথে মালামাল পরিবহনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সামনে চলে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় সড়কপথে মালামাল পরিবহন ব্যবস্থার জন্য সড়ক নির্মাণ কাজের।
প্রথমে ফোর লেন বিটুমিন সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিটুমিনের পরিবর্তে দেশের প্রথম আরসিসি ফোর লেন সড়ক নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারী শেখ হাসিনা ফের লেন সড়ক নির্মাণ কাজের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ৩০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার ফোর লেন সড়ক নির্মাণ কাজ করছে নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন। ২২ দশমিক ২ মিটার চওড়া ১২০০ এমএম পুরু এ রাস্তার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
বর্তমানে কাজের ৭৮ দশমিক ৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পায়রা বন্দরের সহকারী সচিব সমন্বয় মো. সজিদুল ইসলাম সবুজ। আধুনিক এ ফোর লেন সড়কটি নির্মাণ করতে ৫৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চলছে দ্রুত গতিতে সড়কের উভয় পাশে বৃক্ষ রোপণ, একাধিক সেতু, রাস্তা নির্মাণ ও বিদ্যুতায়নের কাজ। চলতি বছরেই শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এর মাধ্যমে পায়রা বন্দর সংযুক্ত হবে নৌপথের পাশাপাশি সড়ক পথে পণ্য পরিবহনের যুগে। উন্মোচিত হবে পায়রা বন্দরের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার।
এদিকে পায়রা বন্দরের প্রস্তাবিত ফাস্ট টার্মিনাল রাবনাবাদের সাথে যোগাযোগের জন্য শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়কের তৃতীয় কিলোমিটার থেকে ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার সিক্স লেন সড়ক নির্মাণ কাজের অন্য একটি প্রস্তাব ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। প্রকল্পের কাজের মধ্যে একই সড়কের অন্ধারমানিক নদীর ওপর ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হবে। পায়রা বন্দরের কাজে গতিশীলতা আনয়নের জন্য অীত দ্রæত এ কাজটি শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও পায়রা বন্দরকে ঘিরে নির্মীতব্য পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে তৈরি করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে পৃথক ফোর লেন সড়ক। শেখ হাসিনা ফোর লেন সড়কের দেড় কিলোমিটার পূর্বে রজপাড়া থেকে টিয়াখালী ব্রীজ হয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ২৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ৯৮ ফিট চওড়া উভয় পার্শ্বে সার্ভিস লেনসহ ৫০ একর জমির ওপর ১৯০ কোটি টাকার পূর্ত কাজের দরপত্র মূল্যায়ন কার্যক্রম চলছে বলে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়াও মাওয়ায় নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে পায়রা বন্দরের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোর লেন প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
পটুয়াকালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ শামস মোকাদ্দেস জানান, পটুয়াখালী অংশের ৬০৮ কোটি টাকার জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সড়ক পথে পটুয়াখালীর প্রবেশমুখ লেবুখালী থেকে ৮৩ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা পর্যন্ত সার্ভিস লেনসহ ৪ লেন সড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ পরিকল্পনায় রয়েছে।
জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য গত ১০ মার্চ মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ শুরু করা যাবে বলে তিনি জানান। যত দ্রæত এ অনুমোদন পাওয়া যাবে ততই এগিয়ে যাবে নির্মাণাধীন পায়রা বন্দরের সাথে সারা দেশের সরাসরি ফোর লেন সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এভাবেই পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরকে ঘিরে এক সময়ের অবহেলিত সম্ভাবনাময় জেলা পটুয়াখালী এগিয়ে যাচ্ছে আগামী দিনে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Naz Kabir ১৪ মে, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 1
Ashay ashay din je gelo asha puron holo na...
Total Reply(0)
Real Raihan ১৪ মে, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 1
In saa Allah. Thanks Minister
Total Reply(0)
Simon Chowdhury ১৪ মে, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ। সরকারকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
TI Sohel ১৪ মে, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 1
বিভিন্ন জায়গায় এখনি দেবে গেছে কয়েক কি:মি: করে, যা মটর বাইক চালকদের জন্য মরণ ফাঁদ।
Total Reply(0)
Ismail Hossain ১৪ মে, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 1
আমাদের অনেক সুবিদা হয়েছে কোন সরকার এত উন্নয়ন আমাদের বরিশালে আগে কখনো করে নায় 100% সত্যে
Total Reply(0)
Akhter Hossain Raju ১৪ মে, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
অনেক পরে হলেও এই বন্দরের মাধ্যমে "In Shaa Allah" অবহেলিত দক্ষিন অঞ্চলের বৈপলবিক পরিবর্তক আসবে।
Total Reply(0)
ash ১৪ মে, ২০১৯, ৭:২৮ এএম says : 0
ATOBORO PROJECTE KI OI AK JON E KAJ KORTESE?? AK SHATHE ONEK LABOUR LAGIE AK AK TA PROJECTKE SHESH KORA HOY NA KENO?? BANGLADESHER POROTITA KAJE E DILAMI
Total Reply(0)
ash ১৪ মে, ২০১৯, ৭:৩১ এএম says : 0
BANGLADESHER ROAD, BRIDGE,NODI KHONON, NODIR TIR BADHA, SHORKARI SHOB MIL KARKHANA INCLUDE RAIL WAY KARKHANA BANGLADESH ARMY KE DIE PORICHALONA KORA WCHITH !!!
Total Reply(0)
Najir ahammed ১৪ মে, ২০১৯, ৯:৪৪ এএম says : 1
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন যথাযথভাবে কাজ শেষ করা হয়
Total Reply(0)
আবদুল কাদের ১৪ মে, ২০১৯, ৯:৪৬ এএম says : 1
ফোর লেন সড়ক না করে একবারেই এইট লেন সড়ক করলেই তো ভালো হতো।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন