শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে ফেইসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়

শাহেদ নুর | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৯, ৩:৪১ পিএম

গত বছরের ১১ ও ১২ মে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিজেরা কমিটি করতে ব্যর্থ হলে ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাংগঠনিক অর্পিত ক্ষমতাবলে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। দীর্ঘ এক বছর পর গতকাল ১৩ মে সোমবার ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। বিবাহিত, মাদকাসক্ত, চাকরিজীবী, বিএনপি পরিবারের সন্তানদের কমিটিতে পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শোভনের বিরুদ্ধে ছোট ভাই ছোটনকে পদে রাখায় উঠেছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এছাড়াও ঢাবির ভিসির ছেলেসহ অরাজনৈতিক অনেককে কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে দাবি করছে অনেকে। প্রত্যেকে বিভিন্ন ছবি ও তথ্যাদি দিয়ে তাদের দারি স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছে।

কমিটি ঘোষণার পর নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান লিখেন, ‘অভিনন্দন! বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নবগঠিত পূর্নাঙ্গ কমিটির সকল দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের।’

ফারুক আহমেদ নামে একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘শুনেছি অবিবাহিত ও রানিং ছাত্রদের নিয়েই ছাত্রলীগের কমিটি হয়! কিন্তু নতুন কমিটিতো বিবাহিত ছেলে-মেয়ে, আব্ব-আম্মা আর পেশাজীবীতে ভরপুর!’

‘সারাদেশে আপনার সংগঠনের সাবেক ত্যাগী নেতা কর্মীরা সবাই অবহেলিত!’ - আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন স্টাট্যাস দেন হিরন চৌধুরী।

কমিটি ঘোষণার পর বিকেলে পদ বঞ্চিত নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করতে আসলে সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রনি লিখেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ, শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ কোন দিনই ছাত্রী বা সংগঠনের বোনকে নিপীড়ন করতে পারে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এরা আপার ছাত্রলীগ না।’

‘সংগঠন এবং নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য হচ্ছে কোনো সংগঠনের মৌলিক শক্তি। আনুগত্যহীন সংগঠন ও নেতৃত্ব হচ্ছে প্রাণহীন অসার দেহের মতো।’- লিখেছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ানের সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম।

সোমবার দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিতদের ওপর হামলার ঘটনায় সিনিয়র সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ। তদন্ত কমিটি নিয়ে ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক বিএম লিপি আক্তার তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘নাটক বাদ দিন, আপনাদের নাটক কেউ দেখতে চায় না। মারল কারা আর তদন্ত করবে কারা? মারার নির্দেশ দিছে কারা, তদন্তের নির্দেশ দিছে কারা? ভণ্ডামি বাদ দিয়ে, যারা বিগত ৮/৯ মাস আপনাদের চামচামি করছে, যাদের কেউ চিনে না, জীবনের প্রথম পোস্ট তাও আবার Join secretary, Vice, OS এবং সম্পাদক দিছেন এই কমিটি ভেঙে যোগ্য, সাংগঠনিক দক্ষ লোক যারা বিগত দিনে রাজপথে ছিল, তাদের দিয়ে কমিটি করুন।’

শুধু লিপি আক্তারই নয়, কমিটি ঘোষণা ও পদ বঞ্চিতদের সংবাদ সম্মেলনে হামলার পর অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে ফেইসবুকে স্টাট্যাস দেন। গত কমিটির নেত্রী জারিন দিয়া লিখেন, ‘রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী ভাই আপনাদের .... মেয়ে লাগে। বড় বড় প্রোগ্রামে মেয়েদের মুখ না দেখলে তো আপনাদের মন ভরত না। শোভন ভাই আপনি একদিন আমাকে সবার সামনে বলছিলেন কী রে চেহারা সুন্দর আছে; তো সেজেগুজে আসতে পারো না! আমি সেজেগুজে আসতে পারি নাই দেখে আমাকে কমিটিতে রাখলেন না? ...........’

ছাত্রলীগ নেত্রী জারিন দিয়ার স্টাট্যাস শেয়ার করে ইমরান খান চঞ্চল লিখেন, ‘জারিন দিয়ার স্ট্যাটাসটা পড়ে মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগ এখন নির্বাসনে। গৌরবময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মিদের যে চারিত্রিক অধঃপতন ঘটেছে তাতে করে ছাত্রলীগের ইতিহাস আজ কলঙ্কিত। আজ বিবাহিত, ছাত্রদল, শিবির, ভিসির ছেলেরা পদ পায় আর বঞ্চিত হয় খাঁটি আওয়ামী পরিবারের সন্তানেরা।’

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই না পাওয়া পদবঞ্চিত নেতারা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের ঢাবি শামসুন্নাহার হলের সভাপতি নিপু ইসলাম তন্বী বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে 'বিতর্কিত' ওই কমিটি ভেঙে না দিলে বিক্ষোভ, অনশনসহ আমরা গণপদত্যাগ করবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন