শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শরিয়তপুরে ভাঙন প্রতিরোধে সিসি ব্লক ফেলার কাজ উদ্বোধন করলেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী

সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন প্রতিরোধ ও ইলিশ গবেষনা জাহাজ তৈরী করছে খুলনা শিপইয়ার্ড

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৯, ৬:০০ পিএম

শরিয়তপুরে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন কবলিত নড়িয়া ও জাজিরা এলাকায় ২১লাখ জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পন্ন করার মধ্যেই মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সিসি ব্লক ফেলার কাজ উদ্বোধন করলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনমুল হক শামিম। এ উপলক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ছাড়াও খুলনা শিপইয়ার্ডের জিএম-ডিএন্ডপি ক্যাপ্টেন শহিদুল্লাহ আল ফরুক-বিএন সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন প্রকৌশলীগন উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ১হাজার ৭৭ কোটি টাকা ব্যায়ে শরিয়তপুরে ভাঙন প্রতিরোধে নৌ বাহিনীর পক্ষে কাজ করছে খুলনা শিপইয়ার্ড। এদিকে ফিস রিসার্স ইনস্টিটিউট-বিএফআরআই‘এর জন্য একটি ইলিশ গবেষনা জাহাজ তৈরীর লক্ষে খুলনা শিপইয়র্ড-এর সাথে প্রায় সাড়ে ৭কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সোমবার।
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে সরকারী ক্রয় নীতিমালার আলোকে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর অধিভ’ক্ত প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড শরিয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ভাঙন প্রতিরোধ কাজ অতি দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১হাজার ৭৭কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে গত অক্টোবরে খুলণা শিপইয়ার্ডের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০-এর ৩০ জুনের মধ্যে শরিয়তপুরের ভাঙন কবলিত এলাকায় ৪০লাখ জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ৩০জুনের মধ্যে ২লাখ জিওব্যাগ ফেলার কথা পদ্মার ঐ ভাঙন কবলিত এলাকায়। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত ২১ লাখ ব্যাগ ফেলার কাজ শেষ করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
এছাড়া ভাঙন কবলিত জাজিরা ও নড়িয়ায় এপ্রিল ২০২১-এর মধ্যে ৩২ লাখ ৪৭ হাজার বিভিন্ন সাইজের সিসি ব্লক ফেলার কথা রয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ব্লক তৈরীর কাজ শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্লক তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিতে না পাড়ায় এ কাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তা সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে খুলনা শিপইয়ার্ডের দায়িত্বশীল মহল।
সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ তৈরীর পাশাপাশি ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে গতি প্রবাহ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পদ্মার প্রায় পৌনে ১০ কিলোমিটার এলাকায় ২শ মিটার প্রস্থ করে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ঘনমিটার পলি অপসারন করা হচ্ছে। এলক্ষে ইতোমধ্যে ৪টি ড্রেজার নিয়োগ করার পরে সোমবার দেশের সর্ববৃত ৩৪ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের একটি ড্রেজার মোতায়েন করা হয়েছে নড়িয়ায়। আগামী দুদিনের মধ্যে বড় মাপের ঐ ড্রেজারটি পদ্মার চড়া কাটা শুরু করবে বলে আশা করছে কতৃপক্ষ। আগামী ৩০জুনের মধ্যে ৬০লাখ ঘনমিটার এবং আগামী অর্থ বছরে ২ কোটি ৬০লাখ ঘনমিটার সহ ২০২১-এ এপ্রিলের মধ্যে ৩ কোটি ৩৩লাখ ঘনমিটার পলি অপসারনের লক্ষে ড্রেজিং করছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
এদিকে ফিসারিজ রিসার্চ ইনন্টিটিউট-এফআরআই সরকারী অর্থায়নে একটি ইলিশ গবেষনা জাহাজ নির্মানের লক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ১শ ফুট দৈর্ঘ ও ২০ফটু প্রস্থ এ গবেষনা জাহাজটি দেশের অভ্যন্তরে ও উপক’লীয় এলাকায় ইলিশের অবস্থান সহ জীববৈচিত্র নিয়ে গবেষনা করবে। আগামী ২৪মাসের মধ্যে অত্যাধুনিক গবেষনা সরঞ্জাম সমৃদ্ধ এ নৌযনটি এফআরআই‘র কাছে হস্তান্তর করবে শিপইয়ার্ড।
ইলেক্ট্রÑহাইড্রো পদ্ধতির স্টিয়ারিং সমৃদ্ধ এ গবেষনা জাহাজটিতে ইলেক্ট্রনিক এ্যাংকরিং সুবিধা থাকছে। সার্বক্ষনিক ইন্টারনেট সুবিধা সম্বলিত এ নৌযানে জিপিএস-রাডার, ফিস ফাইন্ডার, ইকোসাউন্ডার ছাড়াও ভিএইচএফ যোগাযোগ সুবিধা এবং সোলার সিস্টেমও সংযোজন করা হবে। ৩৫০অশ^ শক্তির দুটি মূল ইঞ্জিন সমৃদ্ধ এ গবেষনা জহাজটি ৫০টন পানি অপসারন করে ঘন্টায় ১০ নটিক্যাল মাইল বা ৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলতে সক্ষম। নৌযানটিতে ৩০ কেভিএ দুটি জেনারেটর ছাড়াও ১টি হারবার জেনারেটর সংযোজন করা হবে। প্রয়োজনীয় পানি ও জ¦ালানী নিয়ে গবেষনা জাহাজটি একটানা ২০দিন পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীন ও উপক’লীয় নদ-নদীতে গবেষনা চালাতে সক্ষম হবে বলে জানা গেছে।
খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোপূর্বেও বিএফআরআই‘র জন্য ছোটমাপের একটি গবেষনা জাহাজ তৈরী করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন