বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল কোরআনে মুহাম্মদ সা.

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জাতি বা সত্তাবাচক নাম দু’টি। একটি নাম ‘আহমাদ’ এবং একটি নাম ‘মুহাম্মদ’। নূরনবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সা. মা আমেনার কোলে আগমনের পর ‘মুহাম্মদ’ নামে বিভ‚ষিত হন। তৎপূর্বে ঊর্ধ্বজগতে তিনি ‘আহমাদ’ নামে সুপরিচিত ছিলেন। মহান রাব্বুল আলামী ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনে চারটি সূরায় চারবার উল্লেখ করেছেন। নিম্নে আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাদের সামনে তার সম্যকচিত্র তুলে ধরতে প্রয়াস পাব। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ।
১। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনের ৩নং সূরা আল ইমরানের ১৪৪ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, মুহাম্মদ একজন রাসূল মাত্র। তার পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছে। সুতরাং যদি যে মারা যায় অথবা সে নিহত হয় তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? এবং কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহর ক্ষতি করতে পারবে না, বরং আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদের পুরস্কৃত করবেন। এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ১১৫ এবং পুরো সূরাটির আয়াত সংখ্যা ২০০ এবং পুরো সূরাটির অক্ষর সংখ্যা ১৫৭২৭।
এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৩+১৪৪+১১৫+২০০+১৫৭২৭) = ১৬১৮৯। এখন একক সংখ্যাটির একক (১+৬+১+৮+৯) = ২৫। আর ২৫ সংখ্যাটির একক (২+৫) = ৭। এই ৭ সংখ্যাটি উম্মুল কোরআন সূরা ফাতিহা’র মর্মের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। কেননা উম্মুল কোরআনের আয়াত সংখ্যা ৭; অক্ষর সংখ্যা ১৩৩ অর্থাৎ (১+৩+৩) = ৭; এবং শব্দ সংখ্যা ২৫ (২+৫) = ৭। প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা. ৭ সংখ্যার এই বিশেষ নেয়ামতটির অধিকারী ছিলেন, যা অন্যান্য নবী রাসূলগণের মাঝে ছিল না।
২। ‘মুহাম্মদ নাম মোবারক আল কোরআনের ৩৩ নং সূরা আহযাবের ৪০ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘মুহাম্মদ’ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নন, বরং সে আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৭২, এবং পুরো সূরাটির অক্ষর সংখ্যা ৬০৫০। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৩৩+৪০+৭২+৭৩+৬০৫০) = ৬২৬৮। এখন এই সংখ্যাটির একক (৬+২+৬+৮) = ২২। এই ২২ এর একক ৪। এই ৪ সংখ্যাটি উল্লিখিত মুহাম্মদ নাম মোবারকের দিকেই ইঙ্গিত প্রদান করে। যা আল কোরআনে আল্লাহপাক ৪ বার উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ।
৩। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনে ৪৭ নং সূরা মুহাম্মাদের ২ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘যারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়ে তাতে বিশ্বাস করে এবং তা-ই তাদের প্রতিপালক হতে প্রেরিত সত্য; তিনি তাদের মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা ভালো করবেন।’ এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৮৮। পূর্ণ সূরাটির আয়াত সংখ্যা ৩৮ এবং পূর্ণ আয়াতসমূহের অক্ষর সংখ্যা ২৫৭১। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৪৭+২+৮৮+৩৮+২৫৭১) = ২৭৪৬। এখন এই সংখ্যাটির একক (২+৭+৪+৬) = ১৯। এই ১৯ সংখ্যাটি ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এর প্রতীক। যার দ্বারা কোরআন শুরু হয়েছে। সুবহানাল্লাহ। কোরআন ও মুহাম্মদ নাম মোবারকের মধ্যে মহব্বতের তা এক অনন্য নজীর।
৪। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনের ৪৮ নং সূরা ফাতহ-এর ২৯ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভ‚তিশীল, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে, তাদের মুখমন্ডলে সিজদার চিহ্ন থাকবে....। এই আয়াতটির অক্ষর সংখ্যা ২৬৪। এই সূরায় সর্বমোট ২৯টি আয়াত আছে। এগুলোর মোট অক্ষর সংখ্যা ২৬৩৬। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৮৪+২৯+২৬৪+২৯+২৬৩৬) = ৩০০৯। এই সংখ্যাটির একক (৩+০+০+৯) = ১২। এই ১২ সংখ্যাটি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর প্রতীক। যার ধ্বনি মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সা. এর জবান মুবারক হতে উচ্চারিত হয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
MD. Ashrafuzzaman ১৬ মে, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
মহান আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে মানবজাতির হেদায়েতের জন্য অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের প্রত্যেকের কাছে আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে নাজিল করেছেন পবিত্র কোরআনুল কারিম। যা সর্বশেষ আসমানি কিতাব হিসেবে পরিচিত।
Total Reply(0)
Md Jalal Uddin ১৬ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
পবিত্র কোরআনে সর্বশ্রেষ্ঠ নবীসহ মোট ২৫ নবী-রাসূলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ কর্তৃক নাজিলকৃত ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কোরআনে হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে যদিও তার নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র চারবার। কিন্তু অন্যভাবে অসংখ্য আয়াতের মাধ্যমে রাসূল (সা.)-এর সিরাত-সুরত, আচার-আচরণ, বিশ্বাস তাকে আনুগত্যের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করা হয়েছে।
Total Reply(0)
Nazim Kanon ১৬ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
মহান আল্লাহতায়ালার প্রেরিত হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিশ্বাসের ব্যাপারে কেউ যেন প্রশ্ন করতে না পারে, সে জন্য মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, 'আর তিনি রাসূল (সা.) প্রবৃত্তির তাড়নায় কোনো কথা বলেন না; বরং ওহির কথা বলেন যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।' (সূরা নাজম : ৩-৪)
Total Reply(0)
Kaium Prodhan ১৬ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন একাধিক আয়াতে- 'হে রাসূল (সা.) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর। যাতে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন।
Total Reply(0)
Kamrul Hasan ১৬ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সামগ্রিক জীবনে তার আদর্শ অনুযায়ী চলার তৌফিক দান করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
Total Reply(0)
Mahamud Hasan Masud ১৬ মে, ২০১৯, ১০:৫৫ এএম says : 0
মহত্তম আদর্শের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নবী করিম (সা.) ব্যক্তিগত চরিত্রে ছিলেন সব নবী ও সংস্কারকের চেয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং তার সব চিন্তা ও কর্মে মহৎ মানুষের রূপ বিদ্যমান। তিনি নিজে যা কিছু নৈতিক শিক্ষা দিতেন, নিজেই তার বাস্তব নমুনা ছিলেন।
Total Reply(0)
Golam Rabbani ১৬ মে, ২০১৯, ১০:৫৯ এএম says : 0
তথ্যবহুল এই সুন্দর লেখাটির জন্য এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী হুজুরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
শফিউর রহমান ১৬ মে, ২০১৯, ২:৫০ পিএম says : 0
মোহান আল্লাহ সমস্ত মুসলমানদেরকে প্রিয় নবীর খাছ উম্মতরুপে তৈরি হতে সহায্য করুন । আল্লহর আদেশ বাস্তবায়নে আমাদেরকে দৈর্য শক্তি দান করুন ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন