মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আসছে ভারতীয় পণ্য

সোনাই নদী ও ইছামতি নদী পথে এসব পণ্য বাংলাদেশে আনার জন্য বেশ কিছু নৌকা নিয়োজিত

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) থেকে আব্দুল হামিদ | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৯, ১২:১১ এএম

ঈদের বাজার দখলে কলারোয়া সীমান্ত পথে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পন্য পাচার হয়ে আসছে। ফলে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ঈদের বাজার ভারতীয় পন্যে ছেয়ে গেছে। সীমান্ত সুত্রে জানা গেছে, ঈদ আসন্ন হলে সীমান্তে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ হয় বলে এবার রোজা শুরু হওয়ার আগে থেকে ভারতীয় পন্যের আগমণ শুরু হয়েছে। রাতে রাস্তাঘাট ফাঁকা হলে ভারতীয় পন্যের বহর সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশের ঢল নামছে। রাতে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভারতের তারকাটার বেড়ার গেট খুলে এসব পন্য বাংলাদেশে পাচার করে আনা হচ্ছে। আর সোনাই নদী ও ইছামতি নদী সীমান্তে এসব পন্য বাংলাদেশে আনার জন্য বেশ কিছু নৌকা নিয়োজিত রয়েছে। স্থান বিশেষে শুকিয়ে যাওয়া সোনাই নদীর তলদেশ দিয়ে পায়ে হেটে ভারতীয় পন্য আনা হচ্ছে।
এজন্য সীমান্তের কেড়াগাছি চারাবাড়ি ঘাট, কেড়াগাছি কুটিবাড়ি ঘাট, কেড়াগাছি রথখোলা ঘাট, কেড়াগাছি গাড়াখালী ঘাট, দক্ষিণ ভাদিয়ালী ঘাট, ভাদিয়ালী তেতুলতলা ঘাট, উত্তর ভাদিয়ালী কামারবাড়ি ঘাট, রাজপুর খা-বাগানের ঘাট, চান্দা সুইচ গেট ঘাট, বড়ালী সুইচ গেট ঘাট, উত্তর বড়ালী ঘাট, হিজলদী ভদ্রশাল ঘাট, হিজলদী শিশুতলা ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, সুলতানপুর তালসারি ঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, চান্দুড়িয়া গাড়ালবাড়ি ঘাট, কাদপুর ঘাট খোলা রাখা হয়েছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এসব ঘাট দিয়ে রোজা এবং আসন্ন ঈদের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী আসছে। এর মধ্যে পিয়াজ, ছোলা, বুট, ব্যাসন, আদা, সুজি, জিরা, মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচী, আঙ্গুর, আপেল, মালটা, ন্যাশপতি, বেদানা, কিসমিস, শার্টপিস, প্যাণ্টপিস, রকমারী পাজ্ঞাবী, থ্রিপিস, টুপিস, জর্জেট শাড়ি, ওড়না, গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া, ব্রেশিয়ার, শিশু পোশাক, বালিশের কভার, বেডশিট, তোয়ালে, সিটকাপড়, উন্নতমানের বোম্বে প্রিণ্ট শাড়ি, সাউথ ইণ্ডিয়ান সিল্ক, কাতান, বেনারসী, স্পজ্ঞ স্যান্ডেল, ফাইবার স্যাণ্ডেল, চামড়ার স্যাণ্ডেল, চামড়ার জুতা, আতর, সেণ্ট, বডি লোশন, রকমারী ক্রিম, সেভিং লোশন, সেভিং ক্রীম, হাড়ি, কড়াই, স্টিলের প্লেট, গ্লাস, বাটি, গামলা, বালতি, কড়ির কাপ, পিরিচ, প্লেট, গামলা, ডিনার সেট, শিশু খেলনা, ইমিটেশন অলংকার, সেনেটারী ব্যাসিন, পাইপ, প্যান, বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেণ্ট, এলইডি বাল্ব, ফ্যান, ঘর ওয়ারিং সামগ্রী সুইচ, সিলিং রোজ, সকেট, বাই সাইকেল, সাইকেল মটর সাইকেল থ্রি-হইলার বাস ট্রাকের টায়ার, টিউব, চ্যাসিস, খুচরা যন্ত্রাংশ, টিভি কার্ড সহ যন্ত্রাংশ, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ, সপিং ব্যাগ, অন্যতম। এছাড়া কলারোয়া সীমান্ত খোলা থাকার সুযোগে বিভিন্ন প্রকারের ওষুধ, ফেনসিডিল, মদ, গাজা, আফিম, ভাং, সিদ্ধি, প্যাথেড্রিন, এনাগ্রা, ভায়াগ্রা সহ নানা প্রকার যৌন উত্তেজক সামগ্রী পাচার হয়ে আসছে। সুত্র মতে, রাতে বালিয়াডাঙ্গা বাজারে, মুক্তিবাড়ি, বোয়ালিয়া, পাচপোতা, সোনাবাড়িয়া মঠ, কোমরপুর কুঠির পুল, সিঙ্গার রাস্তা, কোটার মোড়, ন’কাটি বিলে রাস্তা, ব্রজবাকসা, বুঝতলা, রামভদ্রপুর, বয়ারডাঙ্গা, গদখালী রাস্তায় ট্রাক বা পিকআপ বা মাইক্রো ভরে এসব পন্য দেশের অভ্যান্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সীমান্তের হাট বাজারে বিভিন্ন পন্য সরবরাহের নামে আগত বিভিন্ন কোম্পানীর ডেলিভারী ভ্যানে এসব ভারতীয় পন্য বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার পন্যের কিছু অংশ সাইকেল, মটর সাইকেল, ইজ্ঞিন ভ্যান, নসিমন বা আলমসাধু ভরে বাগআচড়া বাজার, বাকড়া বাজার, কলারোয়া বাজার, কেশবপুর বাজার, রাজগজ্ঞ বাজার, মনিরামপুর বাজার, নওয়াপাড়া বাজার, পাটকেলঘাট ও চুকনগর বাজারে নেওয়া হচ্ছে। এরপর এসব পন্য তালা, পাইকগাছা, বৈটিয়াঘাটা, দাকোপ, ফুলতলা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, সহ খুলনা বিভাগীয় সদর ও রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চোরাই পথে আগত ভারতীয় পন্য আমদানী পন্যের আড়ালে বাজারে বেচাকেনা চলছে। বর্তমানে চোরাই পথে আগত ঈদের জন্য শিশু পোশাক, প্যাণ্ট পিস, শার্ট পিস, ফাইবার স্যাণ্ডেল, চপ্পল, চামড়ার স্যাণ্ডেল একচেটিয়া বাজার দখল করেছে। এছাড়া ভারতীয় বাইসাইকেল দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের ৯০ ভাগ বাজার দখল করেছে। এভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের ঈদের বাজার এখন সস্তা দামের চাকচিক্যময় ভারতীয় পন্যে সয়লব হয়ে গেছে। এতে দেশীয় পন্য অবিক্রিত হয়ে পড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন