রেলওয়ে ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামীকাল ২২ মে থেকে ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট দেওয়ার কথা। তবে একদিন আগে থেকেই রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে ভিড় জমিয়েছেন যাত্রীরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিয়মিত ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও বেশিরভাগই দাঁড়িয়েছেন অগ্রিম টিকিট যদি পেয়ে যান সেই আশায়। শুধু কমলাপুর নয়, বিমানবন্দর, তেজগাঁও, বনানী রেল স্টেশন এবং ফুলবাড়ীয়া পুরাতন রেল ভবনেও একই রকম ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। টিকিট প্রত্যাশিদের অভিযোগ, রেলের ‘রেলসেবা’ অ্যাপটি কয়েকদিন ধরেই ঠিকমতো কাজ করছে না। এ কারণে অ্যাপের উপর ভরসা করতে পারছেন না তারা।
গতকাল মঙ্গলবার কমলাপুর রেলস্টেশনে কথা হয় অগ্রিম টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন যাত্রী জানান, গতবছর ঈদের টিকিটের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু টিকিট বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়েছিল যে টিকিট শেষ। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবার একদিন আগে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তারা। যেন কোনোভাবেই কাউন্টার পর্যন্ত যাওয়ার আগেই টিকিট শেষ না হয়ে যায় সেই আশায়।
তবে যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড় করলেও লাভ হচ্ছে না। কারণ নির্ধারিত সময়ের আগে কোনোভাবেই অগ্রিম টিকিট দেয়া হবে না। সেক্ষেত্রে লাইনে দাঁড়ানো টিকিট প্রত্যাশিদের আগামীকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে, আলাপকালে বেশ কয়েকজন টিকিট প্রত্যাশী জানান, রেলের অ্যাপ ‘রেলসেবা’ কাজ করছে না। দুদির ধরেই কোনোভাবেই রেলের অ্যাপে রেজিস্ট্রশন করা যাচ্ছে না। সে কারণে বাধ্য হয়ে তারা টিকিটের আশায় একদিন আগেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
ভুক্তভোগিদের অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও রেলের অ্যাপস ‘ রেলসেবা’ তে প্রবেশ করা যায়নি। একবার প্রবেশ করা গেলেও ভেতরে টিকিট কেনার অপশনে যাওয়া যায় নি। ভেতরে ইন্টারফেস কাজ করছেন না এমনটা দেখা গেছে। এই ঘটনায় অভিযোগ তোলার পাশাপাশি ভুক্তভোগী অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন। রেলের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড বাংলাদেশ (সিএনএসবিডি) জানায়, গত সোমবার অ্যাপের মাধ্যমে ২ হাজারের বেশি টিকিট কাটা হয়েছে। অ্যাপে এক সঙ্গে টিকিট কাটতে পারেন মাত্র ৫০০ জন। এর বেশি সক্ষমতা নেই এই অ্যাপের। সিএনএসবিডির দাবি, ঘন্টায় ১৫ হাজার টিকিটের সার্ভিস দিতে পারে রেলসেবা অ্যাপ।
সিএনএসবিডির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম বলেন, ২০ মে মেনটেন্যান্সের কাজ হয়েছে। এদিন, ২ হাজারের বেশি টিকিট কাটতে পেরেছেন মানুষ। রেলওয়ে তাদেরকে যে ধরণের সক্ষমতার মধ্যে সেবা দিতে বলে তারা সে ধরণের সুবিধা অ্যাপে দিয়ে রেখেছেন বলে জানান কামরুল।
সিএনএসবিডি জানায়, এবার ৫০ ভাগ টিকিট অনলাইনে তিন পদ্ধতিতে দেওয়া হচ্ছে। প্রথমত মোবাইল এসএমএসে, দ্বিতীয়ত ওয়েবসাইট থেকে এবং তৃতীয়ত রেলের টিকিট কাটার সবশেষ ফিচার অ্যাপস-এর মাধ্যমে। সবমিলিয়ে মোট টিকিটের ৫০ ভাগ এই তিন পদ্ধতিতে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা থেকে সবগুলো আন্ত:নগর ট্রেন মিলিয়ে দিনে প্রায় ৩০ হাজার টিকিট রয়েছে। এর মধ্যে ৫ ভাগ রেলওয়ে কমকর্তা কর্মচারী ও ৫ ভাগ ভিআইপি ছাড়া বাকি সব টিকিটের ৫০ শতাংশ অনলাইন ও এসএমএস ও অ্যাপে পাওয়ার কথা। অথচ ঈদের টিকিট বিক্রির শুরুর সময় অ্যাপে নানা সমস্যার মুখে পড়ছেন যাত্রীরা। একই সঙ্গে রেলের ই সেবাতেও টিকিট কাটা যাচ্ছে না বলে অনেকেরই অভিযোগ। #
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন