মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উন্নয়ন বরাদ্দে রেকর্ড

দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়াল এডিপি : নতুন এডিপিতে মোট প্রকল্প ১৫৬৪ : সর্বোচ্চ বরাদ্দ পরিবহনে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৯, ১২:৩১ এএম

প্রথমবারের মতো দুই লাখ কোটি টাকার ঘর ছাড়ালো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। আসছে অর্থবছরে দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকার মূল এডিপি অনুমোদন পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শেরে নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপি অনুমোদিত হয়। পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, এবার প্রথমবারের মতো আমরা দুই লাখ কোটি টাকার এডিপির ‘ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম’ করলাম। আসছে অর্থবছরের দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার যোগান ধরা হয়েছে।
মূল এডিপির বাইরে স্বায়ত্তশাসিত বা করপোরেশেনের থেকে ১২ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকার যোগান রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৮২ কোটি টাকা নিজস্ব উৎস ও ৫ হাজার ৩১০ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে আসবে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের অনুমোদিত এডিপি গত অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ ও সংশোধিত এডিপির ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য অনুমোদিত বরাদ্দ থেকে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ২৬ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে। শিক্ষা ও ধর্ম খাতের জন্য প্রায় ২১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৫৫ ভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। পঞ্চম সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে প্রায় ১৭ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের আট দশমিক ৬৫ শতাংশ জন্য।
পরপর গ্রামীণ অর্থনীতি তথা পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৫ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের সাত দশমিক ৪৮ শতাংশ, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে প্রায় ১৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা বা ছয় দশমিক ৪৪ শতাংশ, কৃষি খাতে প্রায় সাত হাজার ৬১৬ কোটি টাকা বা তিন দশমিক ৭৬ শতাংশ, পানি সম্পদ খাতে প্রায় পাঁচ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা বা দুই দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং জনপ্রশাসন খাতে পাঁচ হাজার ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক বরাদ্দে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগকে। বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১২ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জন্য নয় হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নয় হাজার ২৭০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য আট হাজার ৯২৭ কোটি টাকা, সেতু বিভাগের জন্য আট হাজার ৫৬১ কোটি টাকা এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য ছয় হাজার ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, গেল এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির সংশোধিত বরাদ্দের ৯৭ হাজার ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে, যা সংশোধিত এডিপির ৫৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসের এ ব্যয় গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৪ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে বাস্তবায়িত হয়েছিল ৮২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা বা ৫২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরের জন্য এডিপির যে বরাদ্দ গতকাল অনুমোদন দেওয়া হলো তা দিয়ে মোট এক হাজার ৪৭৫টি প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশনের যে নিজস্ব অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে ৮৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সব মিলে নতুন অর্থবছরে সর্বমোট এক হাজার ৫৬৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এম এ মান্নান জানান, বৈঠকে আগামী অর্থবছরের এডিপির জন্য বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত মোট এক হাজার ৪৬টি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক উৎস হতে অর্থ প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন ২৪২টি অননুমোদিত প্রকল্প, সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য ৬২টি প্রকল্প, ২০১৯ সালের জুনে ২৭২টি প্রকল্পের মেয়াদোত্তীর্ণ, চলতি অর্থবছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্ত শেষ না হওয়ায় ৫৮টি প্রকল্প পুনঃঅন্তর্ভুক্তি এবং ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ৩৫৫টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
MD Masud Howlader ২২ মে, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
উন্নয়ন এর নামে হরিলুট এর রমরমা চলছে বালিশ কিনতে হাজার কুটি টাকার লুটপাট আর কতো খেল দেখাবা দেশটা তো পনগু করে দিলো
Total Reply(0)
সালাহ উদ্দিন সবুজ ২২ মে, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
তাই তো জীবিকার তাগিদে মানুষ সমুদ্রে গিয়ে মরে
Total Reply(0)
Md Sanowar Hossen ২২ মে, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
উন্নয়নের রুল মডেল হলো বালিশ
Total Reply(0)
মনিরুল ইসলাম ২২ মে, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
শুনে খুব ভালো লাগলো
Total Reply(0)
আকাশ ২২ মে, ২০১৯, ২:১৬ এএম says : 0
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ২২ মে, ২০১৯, ২:১৯ এএম says : 0
শুধু বরাদ্দ দিলে হবে না সেই টাকাগুলো সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে কিনা সেটাও দেখতে হবে।
Total Reply(0)
Max Rony ২২ মে, ২০১৯, ২:২০ এএম says : 0
সব থেকে বেশি বরাদ্দ বালিশে রাখা জোর দাবি জানাচ্ছি
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন