শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন জিএম সিরাজ

বগুড়া উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রশ্ন

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:০৯ এএম, ২৩ মে, ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান, সংসদে না যাওয়ার ঘোষণা, পুনরায় সংসদে যাওয়াসহ নানা বিষয়েই নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে গেছে বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচিত এমপি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ গ্রহণ না করা এবং উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত। তিনি শপথ গ্রহণ না করায় জাতীয় সংসদের স্পিকার সেই আসনটি শূণ্য ঘোষণা করলে নির্বাচন কমিশন উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। বিএনপি মহাসচিব বিজয়ী হওয়ার পরও শপথ গ্রহণ না করলেও উপ-নির্বাচনে যাওয়া এবং
প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের এমন সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। যদি দল উপ-নির্বাচনে অংশ নিবেই কিংবা দলীয় সিদ্ধান্তে এমপিরা সংসদে গেলো তাহলে বিএনপি মহাসচিব কেন গেলেন না?
বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুসারে আগামী ২৪ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ মে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। প্রত্যাহার করা যাবে ৪ জুন পর্যন্ত। এই আসনটিতে এবার ইভিএমে ভোট গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলটির পক্ষ থেকে ৫জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চান বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়াসহ আমরা পাঁচ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে তিনি আগ্রহী সকলেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন। দলীয় নির্দেশনায় বলা হয়েছে এই ৫ জন দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন দাখিল করবেন পরে এদের মধ্যে ১ জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী রেখে বাকি ৪ জনের মনোয়ন প্রত্যাহার করা হবে।
বিএনপি চেয়ারপাসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্য়বাক জি এম সিরাজ, পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।
তবে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা সরকার কোনভাবেই বৈধ ঘোষণা করবে না। বাকী চারজনের মধ্য থেকেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তিনি দলের হাই কমান্ডের বরাত দিয়ে জানান, এখন পর্যন্ত দল জিএম সিরাজের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে। কোন সমস্যা না হলে বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন জিএম সিরাজই।
জানতে চাইলে জিএম সিরাজ বলেন, আমি নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি। হাইকমান্ড যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করব।
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তে দলে নানা রকম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। দলের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। যে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়, সেই নির্বাচন নিয়ে এত আগ্রহ কেন বিএনপির-এমন প্রশ্ন এখন বিএনপি নেতাদের মুখে মুখে ঘুরে ফিরছে। তবে এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলে দেখা দিয়েছে একটু ভিন্নভাবে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না- কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্ত কেনো উল্টে যাচ্ছে? ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে এখন উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার মানে কী দাঁড়ায়?
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিষ্কৃত নেতা মৌলভীবাজার জেলা যুবদল সহ-সভাপতি লিটন আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বারবার কেন্দ্রকে বলেছিলাম- তৃণমূলের রাজনীতি ধরে রাখতে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হোক। তা না দিয়ে আমাদের বলা হলো- সংসদ নির্বাচনে সরকারের প্রতি অনাস্থা দেখাতে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের নির্বাচন বয়কট করবে বিএনপি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জনগণের চাপকে প্রাধান্য দিতে আমরা উপজেলা নির্বাচন করলাম বলে আমাদের বহিষ্কার করা হলো। এখন বর্তমান সরকারের অধীনে উপ-নির্বাচনে গেলে সেটি দলীয় শৃঙ্খলা বহির্ভূত দাঁড়াবে না?
একই রকম ক্ষোভ প্রকাশ করে বহিষ্কৃত নেতা কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, কী করবে তার ঠিক পাচ্ছে না বিএনপি। একবার নিজেরাই বলছে- নির্বাচন হারাম, আবার নিজেরাই বলছে- নির্বাচন জায়েজ। দলে সাংগঠনিক কোনো সমন্বয় নেই। কে, কখন, কী, কেন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা বোঝা মুশকিল। উপ-নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা তা নিয়ে তো আমরা যারা বহিষ্কৃত তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু যা হচ্ছে তা নিয়ে দলের কর্মীদের ভেতরে যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে তা মোটেই বিএনপির জন্য ভালো হবে না। এটা ভেবে দেখা দরকার।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Mohin Uddin ২৩ মে, ২০১৯, ২:১৩ এএম says : 0
সরকার খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে দিবে না
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৩ মে, ২০১৯, ২:১৪ এএম says : 0
বিএনপি জাতীয় পার্টির মতোই এখন মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়েছে।
Total Reply(0)
জিন্নাতারা ২৩ মে, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
বিএনপি এখন দেখি নাটকবাজ দলে পরিণ ত হয়েছে।
Total Reply(0)
মিরাজ আলী ২৩ মে, ২০১৯, ২:১৬ এএম says : 0
পানি খাবি তো জল ঘোলা করে খাওয়ার কি দরকার ছিল। ফখরুল শপথ নেওয়ায় ভালো ছিল
Total Reply(0)
মামুন ২৩ মে, ২০১৯, ২:১৬ এএম says : 0
প্রার্থী হিসেবে জিএম সিরাজ ভালো হবে। তার যথেষ্ট জনসমর্থন রয়েছে।
Total Reply(0)
Abdul Mukit ২৩ মে, ২০১৯, ১০:৪২ এএম says : 0
রাজনীতিতে আসলে শেষ বলে কিছু নেই
Total Reply(0)
পাবেল ২৩ মে, ২০১৯, ১০:৪৩ এএম says : 0
এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে আদৌ কোন লাভ আছে কি ?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন