বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

জমে উঠছে কেনাকাটা ভিড় বাড়ছে শপিং মলগুলোতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঈদের আনন্দের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে কেনাকাটা। সেই ঈদের আর বেশি বাকি নেই। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে কেনাকাটা করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে বেড়িয়েছেন রাজধানীবাসী। যেখানে নারী-পুরুষ সবাই সমান তালে ছুটছেন ঈদের কেনাকাটায়। তাদের পদরাচনায় গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে জমজমাট হয়ে উঠে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল। এতোদিন অনেক ক্রেতারা বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে গিয়ে ঈদ কালেকশন দেখেছেন। তবে গতকাল থেকে সে চিত্র পাল্টে গেছে। জমজমাট মানুষের পদচারণায় খুশি বিক্রেতারাও। তারা বলছেন এইদিনগুলোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করেন সব ব্যবসায়ী। এখন থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত প্রতিদিনই ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকবে মানুষ।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই পাইকারি বাজারের কেনাকাটা শেষ। পাইকারি বাজারের পর এখন ধাক্কা লেগেছে খুচরা পর্যায়ে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। ঈদ বাজারের খোঁজ খবর নিতে কাউকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শপিংমলে প্রবেশ করতে পেরেছে। খুচরা বিক্রেতারাও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বাহারি ও নান্দনিক ডিজাইনের রুচিশীল পোশাক সাজিয়েছেন দোকানে। গতকাল ছুটির দিন সত্তে¡ও যানজট ভোগান্তি দিয়েছে। তাই যানজট পাড়ি দিয়ে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের মুখে ছিল বিরক্তি ছাপও। সামনে ছুটির দিনগুলোতে শপিংমল মার্কেট কেন্দ্রিক যানজট আরও বাড়বে সে আশঙ্কা করে এখনই পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর অন্যতম শপিংমল বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা যায়, নতুনভাবে সেজেছে বসুন্ধরা সিটি। কেউ আসছে আবার কেউ বের হচ্ছে। দুপুরের পর থেকে শপিংমলের বাহিরে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। যা প্রবেশ করতে কখনও দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। শপিংমলের ভেতরে বিক্রেতাদের দেখা গেছে ক্রেতাদের পণ্য বিষয়ে ধারনা দিতে। বসুন্ধরা শপিংমলে পোশাক বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, পুরোদমে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। এখন শুধু ক্রেতাদের সঙ্গে কথা হবে। মানে পোশাক বিক্রির পালা। এখন অন্যদের সঙ্গে বেশি কথা বলার সময় নেই।
একই দৃশ্য দেখা যায়, রাজধানীর চন্দ্রিমা, নিউমার্কেট, গাউছিয়া এলাকায়ও। চাঁদনিচক, গাউছিয়া মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে মানুষ আর মানুষ। মার্কেটের ভেতরে পা ফেলার জায়গা নাই। একই সঙ্গে ধুমছে কেনাকাটা। পোশাকের দোকানগুলোতে বাহারি সাজে থরে থরে সাজানো ঈদের পোশাক দেখতে-কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। শুধু মার্কেটে নয়, মার্কেটসহ আশপাশের ফুটপাতেও বেশ মানুষের পদচারণা দেখা যায়।
নিউমার্কেটের বিক্রেতা আফিল উদ্দিন জানান, সারা বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি বেচা-কেনা হয় রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে। কোরবানির ঈদের তেমন একটা কেনাকাটা হয় না। তাই রোজার সময় দম ফেলার সময় পাননা কোনো বিক্রেতারা। ইতোমধ্যেই রমজানের তিনটি শুক্রবার শেষ হয়ে গেছে। প্রথম শুক্রবার রোজা শুরু হওয়ার কোন ভিড় ছিল না তবে দ্বিতীয় শুক্রবার সেটি কেটে গেছে। আর তৃতীয় শুক্রবারে (গতকাল) পুরোপুরি জমে উঠেছে বাজার। সামনের বাকি ছুটির দিনগুলোতে তুলনামূলক ভিড় আরও অনেক বাড়বে সে আশা করেছেন তিনিসহ সব ব্যবসায়ীরা।
গাউছিয়া মার্কেটে শপিং করতে আসা নাফিসা হাসান বলেন, মানুষের ভিড়ের মধ্যে শুধু আড়াই ঘণ্টা যাবত হেটেছি। কিছুই কেনা হয়নি। আফসানা নামের ক্রেতা বলেন, চাঁদনিচক মার্কেটে দেশীয় পোশাকের আধিক্য থাকলেও ঈদের সময় ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে বিদেশী পোশাকও থাকে। এখানের মার্কেটগুলোতে নানা আঙ্গিকের পোশাক-আশাক, বিদেশী কাপড়, রেডিমেড অলঙ্কার, থান কাপড়, বিভিন্ন রকমের বুটিকস বা হাতে কাজ করা কাপড়, চামড়ার ব্যাগ, লেইস ফিতা থেকে শুরু করে গহনা এমনকি মেয়েদের সবকিছুই পাওয়া যায়। ছেলেদেরও পণ্য পাওয়া যায় এখানে।
এদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার পোশাকে দাম অনেক বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। তারপরেও ঈদ বলে কথা। পছন্দের পন্য কিনতেই হবে দাম যাই হোক না কেনো। ইতোমধ্যেই যারা ভীড় পছন্দ করেন না, তারা ইতোমধ্যে ঈদের কেনাকাটা সেরেফেলেন।
নিউমার্কেটে কথা হয় আসাদুল্লাহিল গালিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিজের জন্য পাঞ্জাবি ও পরিবারের জন্য কেনাকাটা করেছেন। তিনি সবাই ঈদের মুখে কেনা কাটা করে থাকেন। তবে তখন অনেক ভিড় হয়, মানুষের ভিড়ে দেখে শুনে কেনাও যায় না। তাই আগেভাগেই কেনাকাটা সেরেছি বলে জানান তিনি।
ছুটির দিন হওয়াতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে আসে কেউ কেউ। পোশাকের পাশাপাশি নারীরা বিভিন্ন জুয়েলারি, জুতা নেড়ে চেড়ে দেখেন। মাহমুদা জামান বলেন, ছুটির দিন সবার সঙ্গে মার্কেটে এসেছেন তিনি। কিছু কসমেটিক ও ঈদের জন্য একটি ড্রেস নিয়েছি। সব জিনিসের প্রচুর দাম। তাই বেশি কিছু কেনা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
এদিকে, মৌচাক, পলওয়েল, ধানমন্ডি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ কেনাকাটা কেন্দ্র করে এসব এলকায় বিকেলের দিকে প্রচুর যানজট তৈরি হয়। অতিরিক্ত মানুষ আর গাড়ির চাপে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খায় ট্রাফিক বিভাগ। এর সঙ্গে বিকাল থেকে শুরু হয় থেমে থেমে বৃস্টি। যা চলে রাত অবধি। বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও ভীড় ও যানজট বাড়িয়ে তোলে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন