বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ আবিষ্কার করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক নোভার্টিস। ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনেস্ট্রেশন (এফডিএ) স¤প্রতি ওষুধটির অনুমোদন দিয়েছে। মানুষের চলৎক্ষমতা নষ্ট করে দেয়ার মতো বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফির (এসএমএ) চিকিৎসায় ওষুধটি ব্যবহৃত হবে। এসএমএতে আক্রান্ত ব্যক্তির জিন থেরাপি হিসেবে কাজ করবে জোলজেন্সমা নামের এ ওষুধটি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতি ডোজ জোলজেন্সমার দাম পড়বে ২১ লাখ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্যান্য দেশে তা কিছুটা কমে ১৫ লাখ ডলারে বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসএমএ মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির মেরুণ্ডের মোটর নিউরন নামের নার্ভ সেলের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। রোগটি মোটর নিউরন ডিজিজ নামেও পরিচিত। এতে আক্রান্ত ব্যাক্তির মাংসপেশী ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে, ফলে তিনি স্বাভাবিক চলৎক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এসএমএতে আক্রান্ত বেশিরভাগ শিশু বড় হওয়া উপভোগ করার সুযোগ পায় না, শৈশবে থাকা অবস্থাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এতোদিন এসএমএ চিকিৎসা হিসেবে বায়োজেনের তৈরি স্পাইনরাজা নামের ওষুধটি ব্যবহৃত হতো। ওষুধটি বাজারে আসার প্রথম বছরে সাড়ে সাত লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে। এসএমএ চিকিৎসায় এবার স্পাইনরাজাকে টেক্কা দিবে নোভার্টিসের জোলজেন্সমা। এটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ। এর আগে স্পার্ক থেরাপিউটিকসের তৈরি অন্ধত্বের চিকিৎসায় ব্যবহৃত লাক্সটেরনা ছিলো সবচেয়ে দামি ওষুধ, যার প্রতি ডোজের দাম পড়ে সাড়ে ৮ লাখ ডলার। জোলজেন্সমার আবিষ্কারকে রীতিমতো বৈপ্লবিক উদ্ভাবন হিসেবে অখ্যায়িত করা হচ্ছে। এটি শরীরের নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া জিনগুলোকে সারিয়ে তুলতে কাজ করবে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে আবার হারিয়ে যাওয়া প্রোটিন উৎপাদিত হবে। নোভার্টিসের প্রধান নির্বাহী ভাস নারাসিমহান জোলজেন্সমাকে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি চিকিৎসায় বর্তনামে যে পরিমান খরচ হচ্ছে সে তুলনায় আমাদের ওষুধের দাম অর্ধেক। এসএমএতে আক্রান্ত শিশুকে প্রথম ১০ বছর ধারাবাহিক থেরাপি দিতে ৪০ লাখ ডলারের বেশি খরচ হয়। বিশ্লেষকদের প্রাক্কলন অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে নোভার্টিসের এ ওষুধটি বছরে ২৬০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি হবে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন