পারাপারে সময় কম লাগায় প্রতিবারের ন্যায় এবার ঈদেও শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুট হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ পড়বে। তবে ভরা বর্ষা মৌসুম আসন্ন হওয়ায় এ রুটে ঝড়ো আবহাওয়া ও স্রোতের গতিবেগ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। ফলে নাব্য সঙ্কটও দেখা দিতে পারে।
চলমান লঞ্চ ও স্পিডবোটগুলো জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যবহারে আগের মতোই উদাসীন থাকায় ঝুঁকি বেড়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কা আরো বেড়েছে। বিকল্প চ্যানেল তৈরিতে কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়া হচ্ছে।
সরেজমিন বিআইডব্লিউটিসি,বিআইডব্লিউটিএসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে আগের যেকোন ঈদের চেয়েও ভিড় আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নৌ রুটটিতে ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও প্রায় ২ শতাধিক স্পিডবোট চলায় ও উভয় পাড় থেকে সড়ক পথে অসংখ্য যানবাহন থাকায় রুটটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
ইতিমধ্যেই লৌহজং টার্নিং এলাকায় বিকল্প চ্যানেল খননে কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। বিআইডব্লিউটিসি ইতিমধ্যেই নদীতে ড্রেজার বসিয়ে একটি বিকল্প চ্যানেল তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে মাঝ পদ্মায় উদ্ধারকারী জাহাজ রাখা ও ঘাটে পর্যাপ্ত সচল ফেরি রাখার দাবি যাত্রী সাধারণের।
লঞ্চ যাত্রী হাসান মিয়া বলেন, আমরা চাই ঈদের সময় যেন লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করা হয়। বরিশালের যাত্রী সবুজ বেপারী বলেন, এ রুটের স্পিডবোটগুলোতে লাইফ জ্যাকেট থাকলেও তা মানসম্মত নয়। এ লাইফ জ্যাকেট দিয়ে জীবন বাঁচানো সম্ভব নয়। ঈদের সময় অন্তত প্রশাসনের এই বিষয়টি দেখা উচিত। কেটাইপ ফেরি ক্যামেলিয়ার মাস্টার শাহাবুদ্দিন বলেন, স্রোতের সাথে যদি পলি এসে চ্যানেলের মুখ বন্ধ না হয় তাহলে আসন্ন ঈদে ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে কোন সমস্যা হবে না। নৌযান আইন অনুযায়ী একজন যাত্রীর জন্য ১০ স্কয়ার ফিট জায়গা বরাদ্দ থাকলেও লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের গাদাগাদি করে বোঝাই করে পারাপার করা হয়। লঞ্চগুলোতে পর্যাপ্ত জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জামও দেখা যায় না।
কাঁঠালবাড়ি ঘাট টার্মিনাল ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, আসন্ন ঈদে যাত্রী পারাপারে আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের প্রতিটি লঞ্চে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই কোন লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেয়া হবে না। ঘাটে দায়িত্বরত আনসারের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সাত দিনের স্থলে যদি দশ দিন করা হয় তাহলে ভালো হবে।
বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের উপপরিচালক আসগর আলী বলেন, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ চ্যানেল এখন পর্যন্ত ভাল আছে। বর্ষার যে সময় নদীতে স্রোত ও ঢেউ বেশি থাকে, পলি বেশি পরিমাণে ভেসে আসে সেই সময়টাতে যাতে কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমাদের ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও ঘাটে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। আমরা লঞ্চ, ফেরি ও স্পিডবোট ঘাট আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ যে কোন উপায়ে যাত্রী হয়রানি করা হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন