বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঢাকার সবকিছুতে ঘাটতি

কতটা বাসযোগ্য ঢাকা মহানগরী শীর্ষক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম

যেসব মানদন্ডের ওপর নির্ভর করে একটি শহরকে বাসযোগ্য হিসেবে ধরা যায়, ঢাকা শহরে তার সবকিছুরই ঘাটতি রয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনরা। তারা মনে করেন, যানজট, পানিবদ্ধতা, ঝুঁকিপূর্ণ বাসস্থান, অপ্রতুল নাগরিক সেবা, বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট, বায়ু দূষণ, গণপরিবহনের অভাবসহ রাজধানীতে নানা সঙ্কট বিদ্যমান। কাজেই ঢাকা শহরকে কোনো হিসেবেই সম্পূর্ণ বাসযোগ্য শহর হিসেবে ধরা যায় না।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘কতটা বাসযোগ্য ঢাকা মহানগরী’ শীর্ষক নগর সংলাপে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের চতুর্থ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানাসের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন নগর পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সালেহ উদ্দিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ হেলালী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, সাংবাদিক তৌফিক আলী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মশার গান এবং যানজট আমার খুবই অপচ্ছেন্দের। এ কারণেই হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমাকে মেয়র করেছেন। রাজধানীর বিদ্যমান এসব সমস্যার সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি শহরের পানিবদ্ধতা নিরসন, ফুটপাত ও খাল দখলমুক্ত করা, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোসহ বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে নগরবাসী এর সুফল পাবে। মেয়র আতিকুল ইসলাম নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠার দিন মে মাসের ২৪ তারিখকে ‘নিরাপদ নগর দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক ঢাকাবাসী সারা বছরই নিরাপদ নগর নির্মাণের জন্য যার যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন। আর ২৪ মে দিনটি বিশেষভাবে নিরাপদ নগর দিবসের জন্য কাজ করবেন। সম্প্রসারিত ঢাকার সকল সড়ককে সেন্ট্রাল ডাকটাইল সিস্টেমের আওতায় আনা হবে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, নগরবাসী নিরাপদ নগর, নিরাপদ সড়ক ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে। এটা সময়ের দাবি, এটা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। আর এ কাজ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা দরকার।
মূল প্রবন্ধে ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, একটি শহরের বাসযোগ্যতার মানদন্ড যদি ১০০ পয়েন্ট হয়, তাহলে ঢাকা শহরে আছে ৩৮। এই সমস্যা থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পিত নগর বিনির্মাণের ভিশনের অভাব, নগর পরিকল্পনার অনুপস্থিতি, ঢাকাকে ঘিরে কেন্দ্রীভূত উন্নয়ন প্রবণতা, আন্তঃকর্তৃপক্ষ দায়িত্বের দ্বৈততা, দুর্বল উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিকল্পনাবিদদের সুযোগের অভাব, সমন্বয়হীনতাসহ প্রভৃতি সমস্যা রয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ঢাকা শহরে যেভাবে যানজট সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে, সেখানেও ত্রুটি রয়েছে। এভাবে যানজট সমস্যার সমাধান হবে না। এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় যখন ৪০ হাজার মানুষ বসবাস করে, তখন সেখানে পরিকল্পিত রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যায় না। এ জন্যই বিশ্বের অনেক দেশের রাজধানী স্থানান্তর হয়েছে। বাংলাদেশে সেটা না করে সব কিছু ঢাকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এভাবে বাসযোগ্য নগরী উপহার দেয়া যায় না।
এর আগে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে সচিবালয়ের সামনে প্রদক্ষিণ করে আবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শেষ হয়। শোভাযাত্রাটি উদ্বোধন করেন ড. আদিল মুহাম্মদ খান। শোভাযাত্রার স্লোগান ছিল ‘বাসযোগ্য নগর চাই, নিরাপদে বাঁচতে চাই’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন