প্রাকৃতিক উপায়ে কুচিয়ার বংশ বিস্তারের সুযোগ এবং পরিবার ভিত্তিক কুচিয়া খামার স্থাপনের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ বাস্তাবায়নের জন্য ‘লিফট কুচিয়া প্রকল্প’র আওতায় বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় চালু করা হয়েছে কুচিয়া প্রকল্প।
এক সময়ে নদ-নদী, খাল-বিলের ঐতিহ্য কুচিয়ামাছ যা ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও কিছু হিন্দু সম্প্রদায় দলবলে বের হয়ে এসব খাল-বিলে লোহার শিক তৈরি করে শিকার করত কুচিয়া মাছ। সারাদিন পরিশ্রম করে কারো কারো ভাগ্যে ১/২ টি কুচিয়া মাছ জুটলেও কারো ভাগ্যে তা জুটত না। সারা দিন হাড়ভাংগা পরিশ্রম করে খালি হাতে অনেককে বাড়িতে ফিরতে হতো। বর্তমানে গ্রাম-গঞ্জের পাশ দিয়ে বয়ে য়াওয়া খাল-বিল ভরাট এবং নদ-নদী শুকিয়ে যাবার ফলে হাট-বাজারে এখন আর বড় বড় কুচিয়া মাছ চোখে পড়ে না।
উপজাতি ও কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ প্রকল্পের সহায়তায় বর্তমানে হারিয়ে যাওয়া কুচিয়া মাছ বাড়িতে অল্প জায়গায় গর্তে করে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ করছেন। গর্তের চার পাশে মনোরাম সবজি ক্ষেত লাগিয়ে নিজের পরিবারে খাদ্যের চাহিদা পূরন করছেন।
জানা যায়, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ধানজুড়ি, কালী শহর, দুর্গাপুর, করমতলী, কেটরা, নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর, গোলাপগঞ্জ, বিনোদনগর ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রাদায় ও কিছু হিন্দু সম্প্রাদয়ের দেড় শতাধিক পরিবার তাদের নিজ নিজ বাড়ির উঠানে, সামান্য জায়গায় ডিচ করে উন্নত প্রযুক্তিতে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ করে কুচিয়া মাছের চাষাবাদ করছেন।
এ ব্যাপারে ধানজুড়ি গ্রামের সনতি মুরমু, শ্যামলী হাসদা, প্রমিলা মুরমু, জাসিন্তা হেমরম, খৃস্টিনা হাসদা, জুসপিনা হেমরম জানান, নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় সামান্য জায়গায় গর্ত করে কুচিয়া চাষ করে নিজেদের খাবারসহ বাজারে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। একটা কুচিয়া বছরে ২৫০টি পোনা দেয়, ৬ মাসে ওজন হয় ৭৫০ গ্রাম। তারা আরো জানান, কুচিয়া ডিচ এ পাশাপাশি মাছেরও চাষ করা হচ্ছে। কুচিয়ার খাবার হচ্ছে কেঁচো, পোনা মাছ ও মাছের ডিম। এদিকে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর এককালীন আর্থিক সহায়তায় গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র-সংস্থা’র বাস্তবায়নে এ প্রজেক্টেও কার্যক্রম চলছে বলে বিরামপুর গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের এরিয়া ম্যানেজার দৌলতুল ইসলাম জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন