শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মির্জাপুরে সরকারি চাল সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে চাতাল কলের মালিকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও সংশ্লিষ্টরা উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাল সংগ্রহ করছেন। এজন্য গুদামের কর্মকর্তাদের কেজি প্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা হারে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাতাল কল মালিকেরা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র মতে, এ বছর মির্জাপুর উপজেলায় সরকারিভাবে ১ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার কথা। এসব চাল দিতে গত ৬ মে উপজেলার সাতজন চাতালকল মালিক জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তিমতে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৬৩১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের কথা। এজন্য মির্জাপুর থেকে কেজি প্রতি ৩৬ টাকা করে চালের দাম বেঁধে দেয়া হয়।
সূত্রটি আরও জানায়, গত ১৩ মে থেকে মির্জাপুরে চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। নিয়মানুযায়ী স্থানীয়ভাবে নতুন চাল সংগ্রহ করে তা সরকারকে দেয়ার কথা চাতালকল মালিকদের। কিন্তু খাদ্য গুদামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা তাদের পছন্দের ব্যবসায়ীদের দিয়ে জামালপুর, শেরপুর ও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল থেকে ট্রাকযোগে রাতের আঁধারে চাল এনে গুদামে ঢোকাচ্ছেন। আর কাগজে কলমে চুক্তিবদ্ধ মিলারদের নামে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুদামে তড়িঘড়ি চাল ঢুকানোর কাজে কর্মরত শ্রমিকদের দায়িত্বে থাকা হারুণ অর রশিদ যুক্ত বলে জানা গেছে।
খাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, মিলারদের সঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চুক্তি হয়েছে। চাল কোন জায়গায় থেকে আসে তার তদারকি করেন সাব ইন্সপেক্টর কায়েস। তিনি মিলে গিয়ে চাল দেখে রিপোর্ট দিলে গুদামে চাল নেয়া হয়। চাল গুদামে মজুত করার কাজ হারুণ অর রশিদ নামে একজন লেবার হ্যান্ডেলিং করেন।
তিনি আরও বলেন, ২৩ মের মধ্যে ৬৩১ টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এজন্য চাতাল মালিকরা আগের ধান থাকলেও সেই ধান চাতালে শুকিয়ে চাল দিচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত ৫৭৭.২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে খাদ্য পরিদর্শক জানান।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো কথা নেই। আপনি মিলারদের সঙ্গে কথা বলেন।
মুঠোফোনে কাজী রাইচ মিলের মালিক কাজী ওবাইদুর রহমান বলেন, আমাকে প্রথমে ৯০ টন টার্গেট দেয়া হয়েছিল। আমার চাল দেয়া হইছে। আমার মিলে থিক্যা দিলে সময় কোলাবো না। চাল ভাঙা বেরোবে। এজন্য আমি জামালপুর থেকে চাল আনছি। আর যে যেনে থিক্যা পারছে আনছে। কেউ কালীহাতি, কেউ বগুড়া। আর গুদামে চাল ডুকাতে দুই তিন টাকা কইর্যা দিওন লাগছে।
চাতালকল মালিকদের দেয়া তথ্য মতে, গতকাল পর্যন্ত গুদামে সংগৃহীত ৫৭৭.২ মেট্রিক টন চাল কেজি প্রতি ৩ টাকা হারে বাবদ ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৬০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। তবে অন্য একটি সূত্র মতে কেজি প্রতি ৫ টাকা হারে ২৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে সহকারী খাদ্য পরিদর্শক কায়েসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন বলেন, সম্পূর্ণ চাল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করতে হবে। চাল না পেলে আবেদন দিলে কেনার সময় বাড়ানো হবে। চাল সংগ্রহে কোনো অনিয়ম হলে তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন