মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আসল লড়াইয়ের জন্য তোলা থাক তামিম

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৯, ১২:১২ এএম

বিশ্বকাপের আগে শেষ মহড়া। প্রতিপক্ষ ভারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটি ভেসে যাওয়ায় এই ম্যাচেই সুযোগ ছিল কম্বিনেশনের শেষ অবস্থাটা পরখ করার। টসে জিতে ফিল্ডিং নেয় বাংলাদেশ। তবে দলের সঙ্গে নামেননি তামিম ইকবাল।

প্রস্তুতি ম্যাচে এমনিতেই ১৫ জনকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো যায়। তবে আজ বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলই খেলছে ১৪ জনকে নিয়ে। তামিম যেমন বাংলাদেশের পক্ষে মাঠে নেই, ভারতের পক্ষে খেলছেন না কেদার যাদবও। তামিমের না খেলার কারণ হালকা চোট। আগের দিন অনুশীলনের সময় কোমরের নিচে হালকা ব্যথা পেয়েছিলেন। চাইলে খেলতে পারতেন। কিন্তু বাড়তি সতর্কতার কারণে তিনি খেলেননি তিনি। দু’দিন পরই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ। আগামী ২ জুন ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ।

প্রস্তুতি ম্যাচে বাড়তি ঝুঁকি নেওয়ার কোনো মানেই হয় না। ব্যথাও নাকি খুব বেশি নয়। স্ক্যান-ট্যান করার দরকারই পড়েনি। তামিম ইচ্ছা করলে ব্যাটিংয়েও নামতে পারেন বলে জানিয়েছেন দলের সঙ্গে এই মুহূর্তে কার্ডিফে থাকা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পর্যবেক্ষক ও অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন, ‘স্ক্যান করার মতো কিছু হয়নি। গ্লুটসে হালকা ব্যথা আছে। কিন্তু ওরকম না যে স্ক্যানই করাতে হবে। প্রিকশন হিসেবে খেলানো হয়নি। যেহেতু তামিম টানা খেলার মধ্যে, রানের মধ্যে আছে সেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট চাপাচাপি করেনি।’

বাংলাদেশের ব্যাটিং রেকর্ডের সবকটিতেই জড়িয়ে তামিমের নাম। তবে বিশ্বকাপ এলেই কেমন যেন জড়োসড়ো হয়ে ওঠে ড্যাশিং এই ওপেনারের ব্যাট। তবে শুরুটা কিন্তু মন্দ ছিলনা

বিশ্বকাপ আর তামিম দুটো একসঙ্গে বললে কোন স্মৃতিটা মনে পড়ে আগে? নিশ্চয় ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেই ফিফটি? সেবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন তখনকার ১৭ বছর বয়সি তামিম। শুরুটা ছিল আলো ঝলমলে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৫১ রানের দারুণ ইনিংস। ডাউন দ্য উইকেটে এসে জহির খানকে লং অন দিয়ে মারা তার ছক্কা তো ট্রেডমার্ক হয়ে আছে সেই ম্যাচে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের।

এরপর তামিম বিশ্বকাপ খেলেছেন আরো দুটি। এবার খেলবেন নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপ। কিন্তু বিশ্বকাপে তামিমের শুরুটা আলোয় রাঙানো ছিল যতটা, এরপর সেটা ততটাই যেন বিবর্ণ। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরে তামিম শুরুটা করেছিলেন ফিফটি দিয়ে, যেটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারেরই প্রথম ফিফটি। এরপর বিশ্বকাপে আরো ২০ ম্যাচ খেলে তামিম পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন আর মাত্র দু’বার!

২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ৯ ইনিংসে ১৭২ রান, ২০১১ সালে ঘরের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপে ৬ ইনিংসে ১৫৭ রান, ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ৬ ইনিংসে ১৫৪ রান- এই হলো তামিমের খেলা তিন বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান।

তিন আসরে ২১ ইনিংসে ২৩.০০ গড়ে করেছেন ৪৮৩ রান। প্রতি আসরে করেছেন একটি করে ফিফটি, নেই কোনো সেঞ্চুরি; সর্বোচ্চ ইনিংস ৯৫। তার পুরো ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে যা বেশ বেমানান। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের প্রায় সব রেকর্ডই তার। কিন্তু বিশ্বকাপে তামিম ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি কখনোই।

নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপে নিশ্চয় অতীত পরিসংখ্যান বদলাতে চাইবেন তামিম। বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত করতে খেলেননি এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। সে সময়টায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন নিবিড়ভাবে। শরীরের ওজন কমিয়েছেন, ফিটনেসে উন্নতি করেছেন। যদিও বিশ্বকাপে তার ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নেই, ‘এই বিশ্বকাপে যদি আমি এটাই লক্ষ্য করে যাই যে একটা সেঞ্চুরি করতে হবে বা খুব রান করতে হবে, তাহলে আমি আসলে অপ্রয়োজনীয় চাপ নিব আমার ওপরে। আমি এটা চাই না। আমার বরং ভাবনা অন্য জায়গায়। সেটা হচ্ছে, দল আমাকে যে ভূমিকা দিবে, সেই ভূমিকাটা যদি আমি ভালোভাবে পালন করি, তাহলেই সুযোগ আসবে বড় ইনিংস খেলার। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, দলকে একটা ভালো শুরু এনে দেওয়া।’

বিশ্বকাপে তামিমের চাওয়া দলের দেওয়া ভূমিকাটা ঠিকঠাক পালন করা। আর সেটা করতে পারলে তার পরিসংখ্যানও রঙিন হবে নিশ্চিতভাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন