শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৯, ৩:২৪ পিএম

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ মোট ১২৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর মালিবাগে প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহা. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে ২০১৭ সালে দেশব্যাপী আলোচিত হয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা। ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে অভিযান চালায় সিআইডি। এ সময় গ্রেফতার হয় মামুন ও রানা নামে দুই শিক্ষার্থীকে। তাদের দেয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেফতার হয় ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী রাফি। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানায় মামলা হয়।

তদন্তে উঠে আসে, চক্রটি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রিন্টিং প্রেস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করতো।

সিআইডি প্রধান বলেন, দেড় বছরের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত প্রশ্নফাঁস মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ মোট ১২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরও অনেক তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। নাম-ঠিকানা সঠিক পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে।

তিনি জানান, ২০১৫ ও ১৬ সালে পর পর দুই বছরে ফাঁসকৃত প্রশ্ন নিয়ে সাভারের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার একটি বাসায় ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছিল তারা। চক্রের মাস্টারমাইন্ড নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তার আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ও মারুফসহ মোট ২৮ আসামিকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রটির মূলোৎপাটন করে সিআইডি।

প্রশ্নের জালিয়াতির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশ্ন মূলত দুইভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। অন্যটি পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে দ্রুত তা সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীকে সরবরাহ করে। প্রেস থেকে প্রশ্নফাঁসকারী পুরো চক্র চিহ্নিত হলেও ডিজিটাল ডিভাইস চক্রটিকে চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ডিজিটাল জালিয়াত চক্রটিকেও চিহ্নিত করা গেছে। ধরা পড়েছে চক্রের মাস্টারমাইন্ড বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস, মূলহোতা ইব্রাহীম, মোস্তফা কামাল, হাফিজুর রহমান হাফিজ এবং তাজুল ইসলাম।

সিআইডি প্রধান আরও বলেন, আসামি ১২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট করা হলেও আরও ৫৫ জন আছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। গত দেড় বছরে সিআইডির টানা অভিযান এবং একের পর এক আসামিকে গ্রেফতারের ফলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এসএসসি-এইচএসসিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রের মূলহোতাদের অঢেল অবৈধ অর্থ-সম্পদের খবর পেয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাৎক্ষণিক তদন্তে প্রায় ২০ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে ইতোমধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মানিলন্ডারিং মামলাও করেছে সিআইডি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন