জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ৫৭ দেশের সমন্বয়ে গঠিত সংস্থাটির এক বিবৃতির সূত্রে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ যে দেশগুলো জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের মে মাসে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়া ও গুয়েতমালার পক্ষ থেকেও জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করা হয়। শনিবার ওআইসির বিবৃতিতে ‘জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্র ও গুয়াতেমালার দূতাবাস স্থানান্তরের’ নিন্দা জানানো হয় এবং এই নগরীতে দূতাবাস স্থাপনকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ওআইসি’র সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানানো হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ আখ্যা দিয়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের সংকট নিরসনে একটি প্রস্তাব হাজির করার তোরজোর চলছে। তবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরাইলে রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন রেখেছে। আগামী ২৫ ও ২৬ জুন বাহরাইনের রাজধানী মানামায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি সম্মেলনে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত সেই চুক্তির প্রথম অংশ প্রকাশের কথা রয়েছে। এই চুক্তি মানতে ফিলিস্তিনিদের বাধ্য করার প্রচেষ্টার অভিযোগও এসেছে সংবাদমাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় মানামা সম্মেলনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। অপর এক খবরে বলা হয়, ইরানসহ বিশ্বের বহু দেশে লাখো-কোটি মানুষের অংশগ্রহণে পালন করা হয়েছে এবারের বিশ্ব-আল-কুদস দিবস। এ দিবসের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে নিন্দা জানানো হয়েছে মার্কিন সরকারের প্রস্তাবিত ইসরাইলি কর্তৃত্ব জোরদারের এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারগুলো অস্বীকারের কথিত শতাব্দির চুক্তি বা ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি। ইরানের রাজধানী তেহরানসহ দেশটির ৯৫০টির বেশি শহরে জুমার নামাজের আগে সর্বস্তরের লাখ লাখ জনতার অংশগ্রহণে একযোগে কুদস দিবসের শোভাযাত্রা বের হয়। ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এবং ইসরাইলি ও মার্কিন নীতির নিন্দা জানিয়ে কুদস দিবস পালন করেছেন। ইরাকের কয়েকটি শহরে হাজার হাজার জনতা ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শতাব্দির চুক্তি বা ডিল অব দ্য সেঞ্চুরির নিন্দা জানিয়ে ও মজলুম ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিছিল করেছেন। ফিলিস্তিনের হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ারও কথিত শতাব্দির চুক্তি আবারও নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প মুসলমানদের প্রথম কিবলা আলকুদসকে ইহুদিবাদীদের কাছে বিক্রি করে দিতে চায় কোনো মূল্য না দিয়েই! তিনি ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল আবারও গাজায় হামলা চালানোর স্পর্ধা দেখালে তেলআবিবসহ দখলদার ইহুদিবাদীদের অন্য শহরগুলোতে দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে হামলা চালানো হবে। আলকুদস শিগগিরই মুক্ত হবে বলে সিনাওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মার্কিন সরকার কথিত শতাব্দির চুক্তির পক্ষে আরব সরকারগুলোর সমর্থন কুড়ানোর আশায় বাহরাইনে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এএফপি, পার্সটুডে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন