বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সঙ্কট বিএনপির নয় বরং পুরো দেশের অস্তিত্ব আজ সংঙ্কটে পতিত। এ সঙ্কট উত্তোরণে যে কোন মূল্যে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে গাজীপুর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে টঙ্গীর আহসান উল্লাহ সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সারাটি জীবন সংগ্রাম করেছেন তাকে আজ একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় অন্ধকার কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। খুনের আসামিরাও জামিন পেয়ে যাচ্ছে অথচ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও সাবেক তিন বারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চরম অসুস্থ্য হয়ে পড়ার পরেও জামিন দেয়া হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, অন্যের সমালোচনা আর বিরোধ করে লক্ষ অর্জন করা সম্ভব নয়। দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করতে হলে, দেশকে জালিম সরকারের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্য। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে কোন ভুল করেনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে সরকার রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছে। এ নির্বাচন আমরা মেনে নেইনি। এতে প্রমাণিত হয়ে গেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। তিনি অনতিবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিএনপিতে কোন বিরোধ নেই। যারা সংসদে গিয়েছে তারা বিএনপির সিদ্ধান্তেই গিয়েছে। আমি যাইনি তাও বিএনপির সিদ্ধান্তেই। কারণ গণতন্ত্র ও দেশ রক্ষার এ লড়াই আজ কোন সহজ লড়াই নয়। পৃথিবীর পরিবর্তন হয়েছে, রাজনীতির ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। তার জন্য অনেক সময় কৌশল পরিবর্তন করতে হয়। সংসদে যারা গিয়েছে তারা সংখ্যায় কম হলেও বেগম জিয়ার মুক্তির পক্ষে, অবৈধ সরকারের ভোট ডাকাতি ও লুটতরাজের বিরুদ্ধে সোচ্ছার থাকলে দেশবাসী তা জানবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্পগুলোর একটাই উদ্দেশ্য তা হলো মেগা লুটপাট। ব্যাংক লুটেপুটে খেয়ে ফেলা হচ্ছে। শেয়ার বাজার ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের আইন-আদালত, সংবাদপত্র ও সামাজিক ন্যায়নীতিবোধ সবকিছু আজ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সংবাদ পত্রের শিরোনামে দেখা যায় খুন, গুম ও ধর্ষণের সংবাদ। তিনি এই অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করতে গাজীপুবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার আহ্বান জানান।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. সোহরাব উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ.কে. এম ফজলুল হক মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বাস্থ্য বিষয় সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মো. মজিবুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর বিএনপি নেতা ডা. মাজহারুল আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আহম্মেদ আলী রুশদী, কাজী মাহবুবল উল হক গোলাপ, বিএনপি টঙ্গী পশ্চিম থানা আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম শুক্কুর, পূর্ব থানা আহ্বায়ক আলহাজ রাশেদুল ইসলাম কিরণ, বাসন থানার আহ্বায়ক বসির আহম্মেদ বাচ্চু, কাশিমপুর থানা আহ্বায়ক শওকত হোসেন সরকার, প্রভাষক মো. বসির উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আব্দুর রহিম খান কালা, জিয়াউল হাসান স্বপন, সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন, আলহাজ মো. মোখলেছুর রহমান, মো. শফিউদ্দিন শফি, মো. নাসির উদ্দিন নাসু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন