শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রমজানের শেষ দশকের যেকোনো রাত শবে কদর

মাওলানা আবিদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

(১) আমি এ (কোরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। (২) তুমি কি জানো, কদরের রাত কী? (৩) কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও বেশি ভালো। (৪) ফেরেশতারা ও রূহ এই রাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রতিটি হুকুম নিয়ে নাজিল হয়। (৫) এ রাতটি পুরোপুরি শান্তিময় ফজরের উদয় পর্যন্ত।
শুধু একটি রাতকে কেন্দ্র করে নাজিল হওয়া একটা সম্পূর্ণ সূরা, সূরা কদরই বলে দেয় শবে কদরের গুরুত্ব কতখানি। আলহামদুলিল্লাহ, বলতে গেলে আমরা কেউই শবে কদরের মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে কম ওয়াকিবহাল নই। অতএব, এ রাতের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া হবে নিতান্তই এক দুর্ভাগ্য।
প্রশ্ন হচ্ছে, শবে কদর আসলে কবে? বুখারি ও মুসলিমের হাদিস থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, আমাকে শবে কদর দেখানো হয়েছিল; কিন্তু পরে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব, তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে তা অনুসন্ধান করো। সে হিসাবে, আমরা বেশির ভাগই ধরে নিই যে, ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে শবে কদর।
তবে আমরা যদি সালাফদের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব যে, অনেকেই ব্যাখ্যা করেছেন শুধু বিজোড় রাত নয়, যেকোনো জোড় রাতেও শবে কদর হয়ে যেতে পারে! শবে কদরের হাদিসগুলো নিয়ে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রা.) এর ব্যাখ্যাটি সত্যিই আকর্ষণীয়।
আলহামদুলিল্লাহ, নিশ্চয়ই রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাত হচ্ছে শবে কদর। আর এ রাতটি হচ্ছে কোনো এক বিজোড় রাত, যেভাবে হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আর সাধারণত এই বিজোড় রাতটি ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের যেকোনো এক রাতে ধরে নেয়া হয়।
কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, ‘রমজানের (শেষ দশকের) অবশিষ্ট নবম রাতে, অবশিষ্ট সপ্তম রাতে, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতে এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)।
এ হাদিস থেকে আমরা দেখতে পারি যে, যদি কোনো রমজান মাস ৩০ দিনের হয়, তাহলে অবশিষ্ট নবম রাতটি হবে ২২ রমজানের রাত, অবশিষ্ট সপ্তম রাতটি হবে ২৪ রমজানের রাত, অবশিষ্ট পঞ্চম রাতটি হবে ২৬ রমজানের রাত এবং অবশিষ্ট তৃতীয় রাতটি হবে ২৮ রমজানের রাত! আর এভাবেই আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা.) শবে কদরের রাত সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন।
অন্য দিকে, যদি কোনো রমজান মাস ২৯ দিনের হয়, তাহলে উক্ত হাদিস অনুযায়ী শবে কদরের রাত পড়বে শেষ দশকের বিজোড় তারিখের রাতগুলোর যেকোনো এক রাতে। অতএব, মুমিনের উচিত, রমজানের শেষ দশ রাতের প্রতিটি রাতেই শবে কদর অনুসন্ধান করা।’
যে জন্য শেষ দশ দিন ইতিকাফ সুন্নত করা হয়েছে। নবী করিম (সা.) জীবনভর রমজানে ইতিকাফ করেছেন। যেন জোড়-বিজোড় প্রতিটি রাতেই মানুষ শবে কদর তালাশ করার সুযোগ পায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Shamsul Alam ২ জুন, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
পবিত্র মাহে রমজানের শেষ দশকের কোনো বিজোড় রাতে রয়েছে লাইলাতুল কদর। যেটি হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ। হাদিসে এসেছে, এ রাতে ঈমান ও সওয়াব লাভের আশায় যে ইবাদত-বন্দেগি করবে, তার অতীতের সবগুলো পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে।
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ২ জুন, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
লায়লাতুল কদর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ আল্লাহর কাছে ছাওয়াব প্রাপ্তির আশায় কদরের রাতে ইবাদত করল, তার অতীত জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৪)
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ২ জুন, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
অধিক নির্ভরযোগ্য মতানুসারে লায়লাতুল কদর মাহে রমজানের শেষ দশকের একটি রাত। আল্লাহ তাআলা এ রাতের ইলম বান্দাদের থেকে গোপন করে রেখেছেন তাদের প্রতি রহমতস্বরূপ। যাতে তারা মাহে রমজানের শেষ দশ রজনীতে লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করতে গিয়ে অধিক ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল হয়। নামাজ, দু‘আ ও যিকরের মাধ্যমে রাত্রিযাপন করে।
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ২ জুন, ২০১৯, ২:১২ এএম says : 0
কোরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাত ‘লাইলাতুল কদর’ বা ‘শবে কদর’ রজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। কোরআনের সঙ্গে যাঁর যতটুকু সম্পর্ক ও সংস্পর্শ থাকবে, তিনি ততটুকু সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। প্রিয় হাবিব (সা.) বলেন, ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং তাঁর প্রিয় ব্যক্তি’ (বুখারি)। ‘যার অন্তরে কোরআনের সামান্যতম অংশও নেই, সে যেন এক বিরান বাড়ি’ (বুখারি ও মুসলিম)।
Total Reply(0)
মিরাজ আলী ২ জুন, ২০১৯, ২:১২ এএম says : 0
অতঃপর এ দশ রাতের মেহমনতে আল্লাহর অধিক নৈকট্য অর্জনের সুযোগ পায়। তিনি লায়লাতুল কদরকে বান্দাদের পরীক্ষার উদ্দেশ্যেও গোপন করেছেন যাতে লায়লাতুল কদর অনুসন্ধনে কে অধিক নিবেদিত ও ঐকান্তিক তা পরিস্কার হয়ে যায়।
Total Reply(0)
মোঃ নাজমুল ইসলাম ২ জুন, ২০১৯, ২:১৩ এএম says : 0
একজন মুমিনের কাছে লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তাআলা এ রাতকে সব রাত্রের চেয়ে সর্বাধিক মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি পবিত্র কোরআনে প্রশংসার সঙ্গে এ রাতের কথা উল্লেখ করেছেন।
Total Reply(0)
Tania ২ জুন, ২০১৯, ১১:২১ এএম says : 0
লেখাটির জন্য মাওলানা আবিদুর রহমান সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন