শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

প্রেরণা সেই ব্রিস্টলের অতীত

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা ছিলো স্বপ্নের মতো। নিজেদের প্রথম ম্যচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে একটি বার্তাও দিয়ে রেখেছিলো টাইগাররা। কিন্তু তারপর নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হেরে কিছুটা চাপে মাশরাফির দল। সব চাপ কাটিয়ে উঠে জয়ের ধারায় ফিরে আসতে আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ব্রিস্টলে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায়।

ইংল্যান্ডের ম্যাচের পর অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে দলের সামর্থ্য ও একাদশ নিয়ে। সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন ক্রিকেটাররা। হারটা বড় ব্যবধানে হওয়াতেই হয়তো সমালোচকের সারিটাও দীর্ঘ। তবে একটি বিষয় ভুলে না যাওয়াই ভালো, বিশ্বকাপের আসরের এখনো বাকি ৬টি ম্যাচ। ক্রিকেটাররা নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমান দিতে পারলে এখনও সম্ভব অধরা সেমির স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম করতে প্রথমেই লঙ্কা জয়ের বিকল্প নেই। একটি জয়ই বদলে দিতে পারে পয়েন্ট টেবিলের মারপ্যাচ, সব সমীকরন। এক জয় ও দুই হারে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের অবস্থান আটে। অন্যদিকে বৃষ্টির কল্যাণে পাকিস্তানের সঙ্গে পয়েন্ট বাগিয়ে নেয়া শ্রীলঙ্কার অবস্থান চার!

বাংলাদেশ দলের ওপেনাররা ছন্দে নেই। নিয়মিত উইকেট তুলে নিতে পারছেন না স্ট্রাইক বোলাররা। দু;শ্চিন্তার কারণ এখানেই শেষ নয়। ফিল্ডিংয়েও বেহাল দশা। এসব নিয়ে হয়তো কাজ করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু আশার কথা, ভেঙে না পড়ে প্রথম দিনেই অনুশীলন শুরু করেছেন তামিম ইকবাল। বিশ্বকাপে এখনো নিজেকে মেলে ধরতে না পারা তামিমই শুধু নন, কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দলের বাকি সদস্যরাও। খেলোয়াড়রা আশা দেখছেন বড় কিছু করার।
পনেরো হাজার দর্শক ধারনক্ষতা সম্পন্ন ব্রিস্টলের মাঠ অবশ্য বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে। পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলছে। এই মাঠে খেলা একমাত্র ম্যাচটিতে জয়ের হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ১০ জুলাই ৫ রানের রোমাঞ্চকর জয়টি এসেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই খেলায় ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। সেই স্কোয়াডের পাঁচজন আছেন এবারের বিশ্বকাপে। তাদের জয়ের সাক্ষ্য কি বাকিদের অনুপ্রেরণা জোগাবে না?

শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলতে পারবেন না আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেয়া নুয়ান প্রদীপ। বাংলাদেশের জন্য এই সংবাদ নিশ্চয়ই সুখকর। বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জয় পেয়েছে একটিতে। তাও দুর্বল প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সেখানে দেখা গেছে শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারের অসহায়ত্বের ছাপ। কুশল পেরেরা ছড়া কেউই ভালো করেননি ব্যাট হাতে। বল হাতে যে সাফল্য, তাও আফগানদের অনভিজ্ঞতার ফসল। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ঢ়ের এগিয়ে টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে-বোলিংয়ে-ফিল্ডিংয়ে-আত্মবিশ্বাসে ও সবশেষ পরিসংখ্যানে।

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার এ পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াই হয়েছে ৪৫ বার। যার মধ্যে ৩৬ বারই জেতে শ্রীলঙ্কা। বাকি ৭ বার বাংলাদেশ। পরিত্যক্ত হয়েছে দু’টি ম্যাচ। এই তো গেল, ওয়ানডে ম্যাচের লড়াইয়ের ফল। বিশ্বকাপ আসরেও তিনবারের দেখায় তিনবারই জয়ী শ্রীলঙ্কা। পরিসংখ্যানে ভ্রু কুচকে যাওয়ার আপাতত কারণ নেই। কেননা বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে শ্রীলঙ্কা মানেই দুর্বল প্রতিপক্ষকে খুঁজে পাওয়া। শেষ ৫ ম্যাচেই তার কিঞ্চিৎ প্রমাণ পাওয়া যায়। যেখানে তিনবারের জয়ী বাংলাদেশ, দু’বার শ্রীলঙ্কা। হার দুটো এসেছে ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচে। তখন চাপ সামলাতে পারতো না বাংলাদেশ। এখন শিখে গেছে। বিশ্বকাপের ক’দিন আগেই আয়ারল্যান্ড থেকে অপরাজিত থেকে ত্রিদেশেীয় সিরিজ জিতে আসলো মাশরাফির দল।
তবে টাইগার ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠতে পারেন লাসিথ মালিঙ্গা। অভিজ্ঞ এই বোলার বিশ্বমঞ্চে কি করতে পারেন, তা সবারই জানা। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ বলে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলে তার দিনে যে কোন দলের জন্য আতঙ্ক হয়ে দেখা দিতে পারেন অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরাও।

প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ লড়াই করে হেরেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বাজেভাবে হেরেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। লড়াই করে হারাটা অবশ্যই সম্মানের। কিন্তু ম্যাচে প্রত্যাশাটা থাকে জয়ের। তাই সব ছাপিয়ে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে টাইগারদের কাছে সমর্থকদের একটাই চাওয়া। তা হলো-‘জয়’।

এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের মালিক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিন ম্যাচ খেলে ২৬০ রান করেছেন বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ সেনানী। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে এই তালিকার আটে মুশফিকুর রহিম। তার রান সংখ্যা ১৪১। দলের বাকি খেলোয়াড়রা কি তার মতো জ্বলে উঠতে পারবে? প্রশ্নটা তোলাই থাকলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন