শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঘুষ কান্ডে তোলপাড়

দুদক পরিচালক-পুলিশ কর্মকর্তা মুখোমুখি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এই ঘুষ দেয়ার কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালকের ঘুষ নেয়ার কাহিনী এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। সর্বত্রই পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ দেয়া এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালকের ঘুষ নেয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা বিতর্ক চলছে। গতকাল দুদকের সাময়িক বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির দাবি করেছেন তিনি ঘুষ নেননি; ঘুষ নেয়ার যে অডিও প্রকাশ করা হয়েছে তা বানোয়াট।

অন্যদিকে একই দিন নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ঘুষ দিয়ে আলোচনায় আসা পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান দাবি করেছেন তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘুষ দিয়েছেন। তার কাছে সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে। দুদক চাইলে তিনি তাদের কাছে সবকিছু সরবরাহ করবেন।

অভিযুক্ত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগকে সম্পূর্ণ বানোয়াট দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। গতকাল মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন সাময়িক বরখাস্ত দুদকেই এই কর্মকর্তা। এনামুল বাছির বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি অভিযোগ’। আপনারা সব এক্সপার্ট নিয়ে এটা প্রমাণ করুন।

ডিআইজি মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল বাছির বলেন, ‘সব বানোয়াট। তাকে অভিযোগ প্রমাণ করতে বলেন।’ ঘুষ নেয়ার অভিযোগ যে মিথ্যা, তার কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা জিনিসের প্রমাণ কী?’

দুর্নীতি ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে দুই দফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুদক। একই সাথে তিনি ঘুষের টাকা নিয়েছেন কি না, নিলে সেই টাকা কোথায় আছে, এ বিষয়ে আলাদা তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

জানা গেছে, ডিআইজি মিজানুর রহমান আলোচিত বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা। গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয় পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে। এরপর তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। তবে অভিযোগ ওঠে তদন্ত চলাকালেই প্রাপ্ত তথ্য অভিযুক্তের কাছে চালান করে দিয়ে ‘আপসরফার’ মাধ্যমে দুই দফায় তিনি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। ডিআইজি মিজান নিজেই এমন অভিযোগ করেছেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে।

ডিআইজি মিজানের দুদকের কাছে করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে টাকা নিয়েও শেষ পর্যন্ত তার (অভিযুক্ত ডিআইজি মিজান) বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধ লেনদেনের এই ঘটনা দুদকের কাছে ফাঁস করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দুর্নীতি দমনকারী সংস্থাটি। যদিও দুদক পরিচালক এনামুল বাছির অভিযোগটি অস্বীকার করেন।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ঘুষ নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট দাবি করলেও অভিযোগকারী নারী নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান উল্টো দাবি করেছেন তার কাছে ঘুষ দেয়ার সব রেকর্ড রয়েছে। দুদক থেকে ডাকা হলে তিনি তা উপস্থাপন করবেন। গতকাল মঙ্গলবার বেইলি রোডের বাসায় সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বিতর্কিত ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

অডিও ফাঁসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেকে সেভ করার জন্যই ঘুষি দিয়েছি। আমার কাছে সব রেকর্ড আছে। আমাকে যখন ডাকবে তখন সব দেখাবো।’ কেন তিনি ঘুষ দিয়েছেন এই প্রশ্নের উত্তরে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্নভাবে আমাকে প্রেসার ক্রিয়েট করে। বারবার দেখা করতে চায়। আমি দেখা করলাম। যখন দেখলাম যে এই লোকটা নিজেই দুর্নীতিবাজ, তখন সেটা তো প্রমাণ করতে হবে। আমি এই বিষয়টাই প্রমাণ করেছি। আমি ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়েছি। আমার স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তার সব তথ্য আছে।
দুদকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি কমিশনের কাছে অন্যায় কিছু চাচ্ছি না। আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার চাচ্ছি। আমি আশা করব তদন্ত কর্মকর্তা কোনো রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে নয়, স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের একজন সদস্য হিসেবে আমার ওপর জাস্টিস অ্যাপ্লাই করবেন।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
Md Rezaul ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
ডি আই জি মিজানের কোন দোষ নাই আমি মনে করি উনি জাতির কাছে খুবই সুন্দর একটা মেসেজ দিয়ে দিয়েছে দুদক যে দুর্নীতিবাজ এটা প্রমাণ করে দিয়েছে ডিআইজি মিজান কে ধন্যবাদ,,,
Total Reply(0)
Yousuf Mirja ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
খেলা হবে এবার
Total Reply(0)
Ikbal Sarkar ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
সবাই একই গুরুর শিষ্য।।
Total Reply(0)
Alaudin Alo ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
সষ্যের মধ্যই ভূত ডুকে গেছে তাই সেনা বাহিনীর তত্বধানে অচিরেই দূর্নীতী বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হোক
Total Reply(0)
Kazi Halim ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
Dudok Should Be Stop Now.
Total Reply(0)
Moharam Ali ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
বর্তমানে সব যায়গাই দুর্নীতি দেশ ভরে গেছে জনগণ জিম্মি আছি আমরা
Total Reply(0)
Akm Sirajul Haque ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৩ এএম says : 0
দুদকই তো এখন তদন্তের নামে মানুষকে ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্রের সব সম্পত্তির মালিক হবে। এরা হাজার হাজার মানুষকে সর্বনাশ করে বলেই মাঝে মাঝে দু'একটা প্রকাশ পায়। তাই পুরো কমিশনকে আর দেরী না করে দ্রুত পদত্যাগ করে জাতিকে মুক্তি দেয়া খুবই জরুরী।
Total Reply(0)
Atikur Rahman Noyon ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৩ এএম says : 0
সরিষার মধ্যেই যদি ভূত থাকে তাহলে ভূত তাড়াবেন কি দিয়ে?
Total Reply(0)
Ziaul Hoque ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
সাধারণ জনগনের ধারণা ছিল, দুদক তাদেরকেই শাস্তির আওতায় আনে যারা তাদের চাহিদা চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারেনা। এখন সেটার বাস্তব রুপ প্রকাশিত হল। আরো একটা ধারণা আছে দুদকের একজন কর্মকর্তাই দূর্নীতি সাথে জড়িত নয়, তাদের সংখ্যা একাধিক।
Total Reply(0)
Md Iftekhar Bhuiyan ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
অফুরন্ত চুরির সম্ভাবনাময় খাত সরকারি চাকরি
Total Reply(0)
Ishtiak Ahmed ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
পূর্বেও দুদকের এক পরিচালক দুর্নীতির দায়ে বহিস্কৃত হয়েছে। “ বাঙালি একশো ভাগ সৎ হবে, এমন আশা করা অন্যায়। পঞ্চাশ ভাগ সৎ হ’লেই বাঙালিকে পুরস্কার দেয়া উচিত ” -হুমায়ুন আজাদ
Total Reply(0)
Joynal Chowdury ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
দূদক বর্তমানে দূর্নীতির মহাসড়কে....
Total Reply(0)
Faruque Alamgir ১২ জুন, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
I think Anti corruption commission should be formed with honest & clean image officers of various government departments. Every department of government has few officers who are undoubtedly honest, you can't force them to corrupt. On the otherhand there is no department which is fully consisted with 100% honest officers. As Anti corruption commission should be neutral, just & trustworthy to people so selected honest officers should be deployed here
Total Reply(0)
D . M Kamal Hossain ১২ জুন, ২০১৯, ১২:৫৬ পিএম says : 0
Both of them should get punishment.... because both of them are guilty..
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন