বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মাকে ঝুপড়িতে রেখে তার টাকার দোতলা বাড়িতে ছেলে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৯, ৭:৪১ পিএম

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় সব সম্পত্তির মালিক ছিলেন রশি বেগম। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ৫ বছর আগে সব সম্পত্তি বিক্রি করে সব টাকা একমাত্র ছেলের হাতে তুলে দেন রশি।সেই টাকা দিয়ে ছেলে ইউনুস ফকির দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেন।কিন্তু সেই ভবনে ঠাঁই হয়নি ৮৫ বছর বয়সী মায়ের। বাড়ির পাশে মায়ের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন একটি ঝুপড়ি ঘর। গত ৫ বছরে একবারের জন্যও ছেলে বা তার পরিবারের সদস্যরা রশি বেগমকে একবেলা খেতেও দেয়নি।অসুস্থ হলেও তাকে কেউ দেখতেও আসে না।

স্থানীয় মেম্বার ইউনুস মিয়া, ইউনুসের সন্তানরা তার মতোই হয়েছে। তারাও দাদির কোনও খবর রাখেন না। রশি বেগমের ছাপড়া ঘরের টিনও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দ রশি বেগম ২৫ বছর আগে স্বামী কাসেম ফকিরকে হারান। বয়সের ভারে এখন কথা বলতে পারেন না। কোনও কিছু জিজ্ঞাসা করলে ফ্যাল ফ্যাল চেয়ে থাকনে। আর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। আঁচল দিয়ে অশ্রু মুছে ফেলার পর তার চাউনি বলে দেয়, ছেলের বিরুদ্ধে তার কোনও নালিশ কিংবা অভিযোগ নেই।

রশি বেগমের খালু খলিল মিয়া বলেন, ‘যে সময় রশি ইউনুনের সঙ্গে থাকতো তখনও সে তার দেখভাল সেরকম করতো না। আমার জানা মতে, গত ১০ বছর ধরে মায়ের কোনও খবর রাখেনি ইউনুস। কিন্তু মা তার ছেলের খবর ঠিকই রাখেন। ছেলে ও নাতিরা তার কাছে না যাওয়ায় রশি তার ঘর থেকে সারাক্ষণ ছেলের বাড়ির দিকে থাকিয়ে থাকে। ছেলে ও নাতিদের দেখলে হাসি দেয়। ছেলের বিরুদ্ধে কোনও কথা বললে সে রেগে যায়।’

খলিল মিয়া আরও বলেন, ‘রশিআমার ভায়রার মেয়ে। সে খাবারের অভাবে মরবে বিষয়টি আমি মানতে পারিনি। এ কারণে আমি রশির দেখভাল করি। আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের বলা আছে রশিকে সাহায্য করে। তবে আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি কোনও মায়ের যেন এমন সন্তান না হয়।’

একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, ইউনুসের বিরুদ্ধে জমি দখল, চুরি, জমি রেকর্ড করে দেওয়ার নামে অন্যের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, সাধারণ লোকজনকে হয়রানি করা, প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

আগৈলঝাড়া থানার এসআই নাসির উদ্দিন বলেন, বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে গত ৯ জুন রাতে ইউনুস ফকির মাহাবুবের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালিমা বেগমকে মারধর করেন। ওই ঘটনায় হালিমার ভাই নাসির মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে ইউনুসকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ইউনুস কারাগারে রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
এস আই খান ১৫ জুন, ২০১৯, ৩:২৯ পিএম says : 0
খবরটি পড়ে আমার এতটাই কষ্ট লেগেছে যে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। যে মা দশ মাস গর্ভে ধারন কের কতকষ্ট করে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখান। আরে ভাই বনের পশু সেও নিজের বাচ্চাকে বাচাতে কুমিরের পেটে চলে যায়, এই হল মা। ইউনুস ফকির ভাইকে শুধু একটা কথাই বলব,এখনো সময় আছে আপনার মায়ের কাছে গিয়ে মায়ের পা ধরে মাফ চেয়ে মাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে নিন। তাতে যদি আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দেন। আর তা যদি না করেন তাহলে আপনার ছেলে মেয়েরা একদিন আপনাকেও ঘড় থেকে বের করে দিবেই দিবে। কারণ এটাই সৃষ্টিকর্তা বিধান। মন্তব্য জানতে চাওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন